বাংলাদেশের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে জিআই সনদ পেয়েছে বাগদা চিংড়ি। সম্প্রতি পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর এ স্বীকৃতি প্রদান করে।
Advertisement
অধিদপ্তরের রেজিস্ট্রার জনেন্দ্র নাথ সরকার জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, দশম পণ্য হিসেবে ভৌগোলিক নির্দেশক সনদ পেয়েছে বাগদা চিংড়ি। গত ২৪ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে নিবন্ধন সনদ দেওয়া হয়। এর সঙ্গে ফজলি আমও সনদ পাওয়ার কথা ছিল, সেটি এখনও শুনানি পর্যায়ে রয়েছে।
মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক জাগো নিউজকে বলেন, বাংলাদেশের বাগদা চিংড়ি জিআই সনদ পেয়েছে। তবে অন্যান্যবার আমরা যেভাবে আনুষ্ঠানিকভাবে সনদটি রিসিভ করি এবার কিন্তু তারা ডাকযোগে আমাদের সনদটি পাঠিয়েছে। এর ফলে ভালো ব্র্যান্ডিং হয়। জিআই সনদ পাওয়ার ফলে এটি আমাদের হয়ে থাকলো। এটা আর কেউ ক্লেম করতে পারবে না। বাগদা চিংড়ির মান কিন্তু বিশ্বের মধ্যে অন্যতম একটি কোয়ালিটি। এর কালার, ফ্লেভার খুবই ভালো। এমনিতেও এই চিংড়ির দাম অন্যান্য চিংড়ির তুলনায় বেশি, তবে সামনে সেটি আরও বাড়বে। গলদা চিংড়ি নিয়েও আমরা এখন কাজ করবো।
বাংলাদেশের সুন্দরবন এলাকায় কালো ডোরাকাটা বাগদা চিংড়ির চাষ শুরু হয় প্রায় ১০০ বছর আগে। গত শতকের সত্তরের দশকের পর বিশ্ববাজারে চাহিদা বাড়তে শুরু করলে বাংলাদেশেও বাগদা চাষের সম্প্রসারণ ঘটে। আশির দশকে বাংলাদেশের রপ্তানিপণ্যের তালিকায় যুক্ত হয় এ চিংড়ি।
Advertisement
বিশ্ববাজারে বাগদা চিংড়িকে বাংলাদেশের বিশেষায়িত পণ্য হিসেবে তুলে ধরতে ২০১৯ সালের মে মাসে মৎস্য অধিদপ্তর জিআই স্বীকৃতির জন্য আবেদন করে। চলতি বছরের ৬ অক্টোবর সরকারের পেটেন্ট ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর গেজেট জারি করে এবং দুটি আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশ করে।
নিয়ম অনুযায়ী জার্নালে প্রকাশের দুই মাসের মধ্যে কেউ আপত্তি না করলে সেই পণ্যের জিআই সনদ পেতে আর কোনো বাধা থাকে না। বাগদার ক্ষেত্রে সেই সময় গত ৬ ডিসেম্বর শেষ হয়। এর মধ্যে কেউ আপত্তি তোলেনি জানিয়ে পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর।
ভৌগোলিক নির্দেশক (জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন- জিআই) হচ্ছে একটি প্রতীক বা চিহ্ন, যা পণ্য ও সেবার উৎস, গুণাগুণ ও সুনাম ধারণ ও প্রচার করে। কোনো দেশের আবহাওয়া ও পরিবেশ যদি কোনো পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো গুরুত্ব রাখে, সেই দেশের সংস্কৃতির সঙ্গে যদি বিষয়টি সম্পর্কিত হয়, তাহলে সেটাকে সে দেশের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
ইন্টারন্যাশনাল প্রোপার্টি রাইটস অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউআইপিও) নিয়ম মেনে বাংলাদেশের পেটেন্টস, ডিজাইন অ্যান্ড ট্রেডমার্ক বিভাগ (ডিপিডিটি) জিআই সনদ দেয়। দেশের প্রথম ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে নিবন্ধন পায় জামদানি।
Advertisement
এনএইচ/আইএইচআর/বিএ/জিকেএস