আগাম আলু উৎপাদনের সূতিকাগার ঠাকুরগাঁও জেলায় নতুন আলু বাজারজাতকরণের ধুম পড়েছে গত কয়েকদিন থেকেই। সর্বপ্রথম এ জেলার কৃষকদের কাছ থেকেই আলু কিনে ব্যবসায়ীরা দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যেতে শুরু করেছেন।আলু রোপনের ৫৫ দিনের মাথায় নতুন আলু বাজারে উঠল। জমি থেকেই ব্যবসায়ীরা পাইকারী ৫০ টাকা কেজি দরে আলু কিনছেন।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সদর উপজেলার চিলারং, শিবগঞ্জ, মোহাম্মদপুর ও নারগুন এলাকায় শতশত নারী-পুরুষ-শিশু নির্বিশেষে জমি থেকে নতুন আলু তোলার আনন্দে বিভোর।কৃষকরা জানান, আগাম আলু উৎপাদনে তাদের কোনো কিছুরই সংকট মোকাবেলা করতে হয়নি। হাত বাড়ালেই সব মিলেছে। প্রতি বছর সদর উপজেলায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে আগাম আলু চাষ হয়ে থাকে। আর এখানকার আগাম আলু সর্বপ্রথম দেশের মানুষের মুখে ওঠে।সাড়ে ৭ হাজার টাকা খরচ করে ১২ শতক জমিতে আগাম আলু চাষ করেছেন সদর উপজেলার উত্তর ঠাকুরগাঁও গ্রামের ক্ষুদ্র কৃষক সামশুল হক। তিনি এই জমির আলু বিক্রি করে পেয়েছেন সাড়ে ১৭ হাজার টাকা। ৫৫ দিনের ব্যবধানে তার আলু চাষে লাভ হলো সাড়ে ১০ হাজার টাকা। বেজায় খুশি তিনি।সদর উপজেলার চিলারং গ্রামের আলু চাষি সাদেক আলী জানান, এবার আবহাওয়া অনুকূল, বীজের দাম কম ও প্রয়োজনীয় সারের সরবরাহও ছিল স্বাভাবিক। তিনি সাড়ে ৮ বিঘা জমির আলু বিক্রি করেছেন প্রায় ২ লাখ টাকায়। আর এ আলু উৎপাদনে তার খরচ হয়েছিল প্রায় ১ লাখ টাকা। দ্বিগুণ লাভ হলো এবার। গতবার আলু উৎপাদনে তার লোকসান গুনতে হয়েছিল অবরোধ আর লাগাতার হরতালের কারণে।নারগুন গ্রামের মিরাজুল ইসলাম জানান, তিনি সাড়ে ১০ হাজার টাকা খরচ করে ১৭ শতক জমির আলু বিক্রি করে পেয়েছেন ২২ হাজার টাকা। তিনিও বেশ খুশি।যারা জমি থেকেই নতুন আলু কিনছেন তাদের মধ্যে ঢাকার কারওয়ান বাজার থেকে আসা আলু ব্যবসায়ী হায়দার আলী জানান, প্রতি বছরের মতো এবারো তিনি আগাম আলুর বাজার ধরতে ঠাকুরগাঁওয়ে এসেছেন। ৪৫-৫০ টাকা কেজি দরে ২০ বিঘা জমির আলু কিনেছেন তিনি।চট্টগ্রাম লালখান বাজারের আলুর আড়ৎদার সরিফুল আলম জানান, তার টার্গেট ১০০ বিঘা জমির আলু কেনা। ইতিমধ্যে ৪৬ টাকা কেজি দরে ৫০ বিঘা জমির আলু কিনেছেন তিনি।ঠাকুরগাঁওয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ভূপেশ কুমার মন্ডল বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি আগাম জাতের আলু চাষ হচ্ছে ঠাকুরগাঁওয়ে। যা এবারো আলু বুননের ৫৫ দিনের মাথায় বাজারে উঠে এলো।’
Advertisement