জাতীয়

দেইখ্যা লন বাইছ্যা লন একশো একশো

এহে জাপানি মাল একশো, থাইল্যান্ডের মাল একশো, কোরিয়ার মাল একশো, দেইখ্যা লন, বাইছ্যা লন, একশো হে একশো। রাজধানীর নিউ মার্কেটের এক নম্বর গেটের বিপরীত দিকের রাস্তায় বুধবার এভাবে কোরাস গানের সুরে ক্রেতার দৃষ্টি আকর্ষণ করছিলেন বিদেশি পুরাতন জ্যাকেট লটমালের বিক্রেতা মো. রুহুল আমিন। রাজধানীসহ সারাদেশে হঠাৎ করে পড়া ঠান্ডা শীতে কপাল খুলেছে তার।গত কিছুদিন যাবত হাতেগোনা ১০-১২টার বেশি জ্যাকেট বিক্রি না হলেও বুধবার রাতের ঘণ্টা দুয়েকে ২০টিরও বেশি জ্যাকেট বিক্রি হওয়ায় সে খুব খুশি। রাস্তায় বিছিয়ে রাখা নানা রংয়ের ও সাইজের জ্যাকেট উচিয়ে ধরে কোরাস গানের সুরে বার বার বাইছ্যা লন, দেইখ্যা লন, একশো, একশো বলে চিৎকার করেই যাচ্ছিলেন তিনি।এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে রুহুল আমিন জানান, সদরঘাট থেকে বেল্ট (বস্তা) হিসেবে এসব পুরাতন বিদেশি জ্যাকেট কিনে আনেন। প্রতি বেল্ট জ্যাকেটর ক্রয়মুল্যে সর্বনিম্ন ছয় হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত। জ্যাকেটের কোয়ালিটির ওপর দাম নির্ভর করে। প্রতি বেলে ১৮০ পিস জ্যাকেট থাকে। তবে বেলে ১৮০ পিস লেখা থাকলেও বিভিন্ন চালানে কখনো ১২০, ১৪০ ও ১৬০ পিস মাল থাকে বলে জানান তিনি।কতদিন যাবত এ ব্যবসা করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে রুহুল আমিন জানান, গত চার সিজন (শীতের সময়) যাবত শীতের কাপড়ের এ ব্যবসা করছেন। দিনের বেলা ফুটপাতে একটি চায়ের দোকান চালান। রাতে নিউ মার্কেট বন্ধ হলে রাস্তাঘাট অনেকটা ফাঁকা থাকায় ওই সময় রাস্তায় জ্যাকেট বিক্রি করেন।রুহুল আমিন জানান, বিদেশে এসব পুরাতন জ্যাকেটের মধ্যে অনেক সময় অনেক ভালোমানের জ্যাকেট পাওয়া যায়। ক্রেতাদের বিশ্বাস অর্জনের জন্য তিনি পাইকারিভাবে এসব মাল বিক্রি করেন না। সব সময় একশো টাকা দরেই বিক্রি করেন।কারণ জানতে চাইলে রুহুল আমিন হেসে বলেন, লোকজন বাইচ্যা একশো টাকা দিয়া ভালো মাল পাইলে সে গিয়া অন্যজনের কাছে এই মাল নিউ মার্কেটের সামনে থাইক্যা কিনছে বইল্যা প্রচার করে। তার কথা শুনে অন্যরাও আইস্যা জ্যাকেট কিইন্যা লইয়া যায়। যতবেশি বেচা ততবেশি লাভ তার।রুহুল আমিন স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে কামরাঙ্গীরচরে থাকেন। দিনের বেলা ফুটপাতে চায়ের দোকান চালান। সারাদিন চায়ের দোকান চালালেও রাতে জ্যাকেট বিক্রি করেন।তিনি জানান, এসব পুরাতন মালামাল চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে সদরঘাটে আসে। সেখান থেকে তার মতো বহু খুচরা ব্যবসায়ী নানান দামে জ্যাকেট ও সুয়েটারসহ বিভিন্ন শীতের কাপড় কিনে এনে বিক্রি করেন।শীত বাড়লে তার বিক্রি বাড়বে এ আশায় এ প্রতিবেদকের চলে আসার সময় রুহুল আমিন জানতে চনি, শীতটা একটু বেশি পড়বো তো স্যার?এমইউ/বিএ

Advertisement