ফুটফুটে এক মেয়ে। প্রথম দেখায় আপনার মনে হতে পারে তার বয়স কতই বা হবে, পাঁচ কিংবা ছয়। ওই বয়সী শিশুদের মতোই হাসছে, কথা বলছে সে। তবে তার আসল বয়স ১৯ বছর। প্রথমে এ কথা কেউই বিশ্বাস করতে চান না। তবে আবলি জারিত নামের এই তরুণীর জন্ম ২০০৩ সালে।
Advertisement
ভারতের নাজাপুরের বাসিন্দা আবলি জারিত। তার উচ্চতা মাত্র ৩ ফুট ৪ ইঞ্চি। ছোটবেলায় আবলির রেনাল রিকেট রোগ ধরা পড়ে। এছাড়াও আবলি মূত্রাশয় ছাড়াই জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এজন্য তাকে সব সময় ডায়াপার পরিয়ে রাখা হতো। ধীরে ধীরে তার শরীরের হাড়ও দুর্বল হতে থাকে।
ফলে তার হাড়ের বৃদ্ধি থেমে যায়। এজন্য আবলি কখনো হাঁটতেও পারেনি। একবার হাঁটার চেষ্টা করেছিলেন। তবে পড়ে গিয়ে আরও আহত হয়েছিলেন। এরপর আর কখনো হাঁটার সাহস করেননি। ১৯ বছর ধরে আবলি যেমন সংগ্রাম করে যাচ্ছেন জীবন নিয়ে। তেমনি তার পরিবারের বাকিরাও আবলিকে সুস্থ রাখতে সংগ্রাম করে যাচ্ছেন।
আবলি গান গাইতে ভালোবাসেন। এমনকি ভালো গানও করেন তিনি। ভারতের সবচেয়ে বড় গানের রিয়েলিটি শো ইন্ডিয়ান আইডলেও অংশগ্রহণ করেছিলেন তিনি। এছাড়াও আবলি অভিনয় করতে ভালোবাসেন। তিনি গায়িকার সঙ্গে নায়িকাও হতে চান। তার ইচ্ছা হলিউড ও বলিউডে কাজ করার।
Advertisement
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আবলি জারিত খুবই জনপ্রিয়। তার ইনস্টাগ্রামে ফলোয়ারের সংখ্যা ৬ হাজার। সবাই তার শিশুসুলভ চেহারা পছন্দ করেন। তার গানও পছন্দ করেন অনুসারীরা।
আবলির মতে, এই রোগে খুব কম মানুষই বাঁচতে পারেন। তার মধ্যে যে তিনি আছেন এজন্য নিজেকে ভাগ্যবতী মনে করেন। এর কোনো সঠিক চিকিৎসা না থাকায় তার কখনো সুস্থ হওয়ারও সম্ভাবনা নেই। তবে তিনি এই জীবন উপভোগ করেন। ঘর থেকে বাইরে যাওয়ার সময়ই তার শুধু খারাপ লাগে। কারণ তিনি একা যেহেতু চলাফেরা করতে পারেন না। তাই অন্যের সাহায্য নিতে হয়।
আবলির মা বনিতা, বাবা বিজয় সব সময় তার দেখাশোনা করেন। আবলি বিরল রোগ নিয়ে জন্ম নিলেও তার অন্য ভাইবোনেরা পুরোপুরি সুস্থ। আবলির অন্যান্য আত্মীয় স্বজন সবাই তার যত্ন নেন এবং ভালোবাসেন।
তবে শুধু আবলিই নন, এমন আরও অনেক মানুষ আছেন পৃথিবীতে। ডেনিস ভাশুরিন নামের ৩৪ বছর বয়সী এক ব্যক্তি বিরল রোগে আক্রান্ত হন। ১৪ বছর বয়সের পর তার শারীরিক বিকাশ থেমে যায়। ঝুং শেনকাই নামের এক চীনা ব্যক্তি মাথা গুরুতর আঘাত পাওয়ার পর তার বৃদ্ধি থেমে গিয়েছিল। ২৫ বছর বয়সের পর আর তার শারীরিক এবং মানসিক বিকাশ হয়নি।
Advertisement
সূত্র: মিরর, অডিটি সেন্ট্রাল
কেএসকে/এমএস