রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে বিপুল পরিমাণ অবৈধ জ্যামার, রিপিটার ও নেটওয়ার্ক বুস্টারসহ গ্রেফতার দুজন অপরাধ সংঘটনে এসব বিক্রি করতেন বলে জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
Advertisement
রোববার (১৫ মে) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ এ তথ্য জানিয়েছেন।
এর আগে, গোয়েন্দা সংবাদের ভিত্তিতে মোহাম্মদপুর থেকে মো. আবু নোমান ও সোহেল রানা নামের দুজনকে গ্রেফতার করে র্যাব।
এ বিষয়ে লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, রোববার দিনগত রাত ১২টা ৪৫ মিনিটে র্যাব-৩ এর একটি দল ও বিটিআরসির প্রতিনিধি মিলে মোহাম্মদপুরে অভিযান চালিয়ে অবৈধ জ্যামার ও নেটওয়ার্ক বুস্টার বিক্রয়কারী চক্রের দুজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। তারা দীর্ঘদিন ধরে মোহাম্মদপুর এলাকায় বিনা অনুমতিতে এগুলো বিক্রয় করে আসছিল।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, এ সময় তাদের কাছ থেকে চারটি মোবাইল নেটওয়ার্ক জ্যামার, ২৪টি জ্যামার অ্যান্টেনা, চারটি এসি অ্যাডাপ্টার, তিনটি পাওয়ার ক্যাবল, তিনটি মোবাইল নেটওয়ার্ক বুস্টার, নয়টি বুস্টারের আউটডোর অ্যান্টেনা, ২৬টি বুস্টারের ইনডোর অ্যান্টেনা, ৩৭টি বুস্টার ক্যাবল ও একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়।
‘গ্রেফতার নোমানের আইটি স্টল.কম.বিডি নামে ই-কমার্স ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেইজ রয়েছে। এছাড়া নোমানের সহযোগী সোহেল রানার সোআইএম বিডি নামে ই-কমার্স ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেইজ রয়েছে।’
‘এসব ই-কমার্স ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে তারা আইপি ক্যামেরা, ডিজিটাল ক্যামেরা ও ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশের পাশাপাশি উচ্চমূল্যে বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট জ্যামার ও নেটওয়ার্ক বুস্টারসহ এর যন্ত্রাংশ লাইসেন্স ব্যতীত অবৈধভাবে বিক্রি করতো।’
এসব যন্ত্রাংশের কার্যকারিতা নিয়ে কর্নেল আরিফ বলেন, জ্যামার ও নেটওয়ার্ক বুস্টার টুজি, থ্রিজি ও ফোরজি মোবাইল নেটওয়ার্কের কার্যক্ষমতাকে প্রভাবিত করতে সক্ষম। এগুলোর ক্রেতা ছিল বিভিন্ন বহুতল ভবনের বাসিন্দা ও মসজিদ কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও বিভিন্ন অপরাধীরা অপরাধ করার উদ্দেশ্যে উচ্চমূল্যে এসব অবৈধ ডিভাইস ক্রয় করে থাকে।
Advertisement
অধিক মুনাফা লাভের আশায় অপরাধীরা এগুলো কেনা-বেচা করে জানিয়ে তিনি বলেন, বৈধ আমদানিকারকের মাধ্যমে অধিক পরিবহন মূল্য পরিশোধ করে বৈধ মালামালের আড়ালে তারা এসব যন্ত্র নিয়ে আসে।
‘জিজ্ঞাসাবাদে আমরা তাদের উদ্দেশ্য জানতে চেয়েছিলাম। তবে এখনো আমরা সব প্রশ্নের সদুত্তর পাইনি। আমরা ধারণা করছি, আমাদের দেশের স্থিতিশীল পরিবেশ নষ্ট করার জন্য এসবের ব্যবহার হতে পারে।’
যারা ডিভাইস গুলো কিনেছে তাদের বিষয়ে জানতে পেরেছেন কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, যারা ২০০টি ডিভাইস কিনেছে তাদের সম্পূর্ণ লিস্ট না পেলেও আমরা অনেকের নাম পেয়েছি। অনেক দোকান ও গুরুত্বপূর্ণ মানুষের তালিকা পেয়েছি। এ নিয়ে আমাদের আরও সাড়াশি অভিযান চলবে।
তিনি জানান, ফ্রিকুয়েন্সি জ্যামারগুলো তারা ২০ হাজার টাকায় কিনে ২৮ থেকে ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করতো। এছাড়াও ৯ হাজার টাকা দামের ডিভাইসও তাদের কাছে পাওয়া গেছে।
গ্রেফতার সোহেল রানার বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম ও খুলনা জেলায় দুটি চেক জালিয়াতির মামলা রয়েছে বলেও জানালেন র্যাবের এই কর্মকর্তা।
এএএম/এমপি/জেআইএম