গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় স্বামী-স্ত্রী খুনের মামলায় একই এলাকার আনোয়ারা বেগম (৪৫) ও তার ছেলে মোস্তফাকে (২৭) মৃ্ত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। একই ঘটনায় মো. রহমত আলী ওরফে রমু (৫০) ও তার মেয়ে রহিমা বেগমকে (২৩) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বুধবার বিকেলে গাজীপুরের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক একেএম এনামুল হক ওই রায় প্রদান করেন। গাজীপুর আদালতের পরিদর্শক মো. রবিউল ইসলাম জানান, ২০১১ সালের ১৩ নভেম্বর দুপুরে কাপাসিয়া থানার সম্মানিয়া নয়াপাড়া এলাকার মো. সুরুজ আলী তার বসত বাড়ির পাশের মেহগনি বাগানে গাছের পরিচর্চা করছিলেন। এসময় জমি সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জেরে পরষ্পর যোগসাজসে ও পূর্ব পরিকল্পিতভাবে দা-শাবলসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দণ্ডিতরা ওই বাগানে প্রবেশ করে। পরে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে রহমত আলী ওরফে রমু, তার ছেলে মোস্তফা দা দিয়ে কুপিয়ে এবং রমুর স্ত্রী আনোয়ারা বেগম শাবল দিয়ে সুরুজ আলীকে গুরুত্বর জখম করে। খবর পেয়ে সুরুজ আলীর স্ত্রী হনুফা স্বামীকে রক্ষার জন্য ঘটনাস্থলে এগিয়ে গেলে দণ্ডিতরা হনুফাকেও দা ও শাবল দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে গুরুত্বর জখম করে। এতে সুরুজ আলী ঘটনাস্থলে এবং তার স্ত্রী হনুফা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একদিন পর মারা যান। এ ঘটনায় নিহত সুরুজ আলীর ভাই মো. শাহজাহান শেখ ওই বছরের ১৪ নভেম্বর কাপাসিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ শুনানির পর বুধবার বিকেলে গাজীপুরের বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এ রায় প্রদান করেন।রায়ে সুরুজ আলীকে খুনের ঘটনায় আনোয়ারা বেগম ও তার ছেলে মো. মোস্তফাকে মৃত্যুদণ্ড এবং প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া আনোয়ারা বেগমের স্বামী রমুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এ মামলায় রমুর মেয়ে রহিমা বেগমকে খালাস প্রদান করা হয়।অপর দিকে সুরুজ আলীর স্ত্রী হনুফা বেগমের খুনের ঘটনায় আনোয়ারা বেগম ও তার ছেলে মোস্তফাকে মৃত্যুদণ্ড এবং প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়। এছাড়া রমু ও তার মেয়ে রহিমা বেগমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরো এক মাসের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে। দণ্ডিতদের মধ্যে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত রহিমা বেগম পলাতক রয়েছেন। বুধবার অপর তিন আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন পিপি মো. হারিছ আহম্মদ। আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভেকেট ওয়াহিদুজ্জামান আকন তমিজ। আমিনুল ইসলাম/এমএএস/এমএস
Advertisement