দীর্ঘদিন ধরে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল স্টেশনটি অজ্ঞাত কারণে উদ্বোধনের অপেক্ষায় ঝুলে আছে। উদ্বোধন না হওয়ায় স্থানীয়রা এটিকে ধান শুকানোর আঙিনা হিসেবে ব্যবহার করছেন। বর্তমানে ভবনটির দ্বিতীয় তলায় পরিবার পরিজন নিয়ে মো. মাহতাব হোসেন নামের এক ফায়ার ম্যান বসবাস করেন। তবে রাতে অন্ধকারে ফায়ার সার্ভিস চত্বরে গাঁজার আড্ডা ও অসামাজিক কার্যকলাপ চলছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। জানা গেছে, আক্কেলপুর উপজেলার আয়তন ১৩ হাজার ৯৪৭ বর্গ কি.মি.। প্রতিবছর অগ্নিকাণ্ডে এ উপজেলায় ব্যাপক ক্ষতি-সাধিত হয়। এ ক্ষতির হাত থেকে এলাকাবাসীকে রক্ষা করতে সরকার ২০১০ সালে উপজেলা সদরের পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির সাব-স্টেশন সংলগ্ন স্থানে ফায়ার স্টেশন স্থাপনের জন্য গণপূর্ত বিভাগ প্রায় ১ কোটি টাকা মূল্যের টেন্ডার আহ্বান করেন।জয়পুরহাট সদরের মেসার্স সউদ কন্সট্রাকশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান টেন্ডারের মাধ্যমে কাজটি পান। কাজটি যথা সময়ে শুরু ও শেষ করতে নানাভাবে গড়িমসি করেন ওই প্রতিষ্ঠানটি। নির্মাণ কালীন এ ফায়ার স্টেশনটির নির্মাণ কাজের মান নিয়েও স্থানীয়রা উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ উত্থাপিত করেও কোনো ফল পাননি।ফলে ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দীর্ঘ দিন ধরে নির্মাণ সংলগ্ন স্থানে খোলা আকাশের নিচে জমা করে রাখে রড। ফলে রোদ-বৃষ্টিতে মরিচা ধরে ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়ে। একই সঙ্গে চারদিকে খোলা একটি ছাউনির নিচে রাখা সিমেন্টে দলা ও দানা যায়। গত ৫ বছর ধরে ওই সমস্ত নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ভবনটির নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করলেও রিজার্ভ ট্যাঙ্কির ঢাকনা স্থাপন না করায় তা শিশুদের জন্য হয়ে পড়েছে মারাত্মক হুমকি। ২০১৫ সালের মধ্যভাগে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হওয়ার পরও সেখানে আজ পর্যন্ত অগ্নিনির্বাপণ কোনো যানবাহন, পাম্প ও লোকবল সরবরাহ করা হয়নি। ফলে উপজেলার কোথাও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে জয়পুরহাট সদর থেকে আক্কেলপুর তারপর ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে সর্বস্ব পুড়ে ভস্মীভূত হয় ভুক্তভোগীদের। এ ব্যাপারে জেলা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল স্টেশনের দায়িত্বরত ইন্সপেক্টর জাহানুর ইসলাম জানান, গত বছরের জুন মাসের দিকে আক্কেলপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের ভবনটি ঠিকাদারের কাছ থেকে বুঝে নেয়া হয়েছে। সেখানকার জন্য গাড়ি, পাম্প ও লোকবলসহ সকল প্রক্রিয়া সমাপ্ত হলেও দীর্ঘদিন থেকে উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। চলতি মাসের যে কোনো সময় আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হতে পারে। ফায়ার স্টেশনের আঙিনায় ধান শুকানোর ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেখানে কোনো কাজকর্ম চালু না থাকায় স্থানীয়রা ধান শুকান। ভবনটি উদ্বোধন করা হলে ধান শুকানো এমনিতে বন্ধ হয়ে যাবে।আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম মো. শাহনেওয়াজ জাগো নিউজকে বলেন, চলতি মাসেই ফায়ার সর্ভিস ও সিভিল সার্ভিস স্টেশনটি চালু করা যায় সে ব্যাপারে ফায়ার সার্ভিসের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জরুরি আলাপ করা হবে। রাশেদুজ্জামান/এসএস/এমএস
Advertisement