দেশজুড়ে

সুতার দাম বেড়েছে পাউন্ডে ১০ টাকা, বিপাকে সিরাজগঞ্জের তাঁতিরা

সিরাজগঞ্জের তাঁতে উৎপাদিত শাড়ি, লুঙ্গি, থ্রি-পিস, গামছাসহ নানা পণ্য দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। কিন্তু এই শিল্পের অন্যতম কাঁচামাল সুতার দাম বৃদ্ধির কারণে লোকসানে পড়েছেন ওই অঞ্চলের তাঁতিরা।

Advertisement

সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার সুতার দোকানগুলো সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, মতিন, নাহিদ, শুভ রাজ, মানিকা, মাস্তানিসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সুতার দাম প্রতি পাউন্ডে বেড়েছে ১০ টাকা।

জেলার বেলকুচি উপজেলার তামাই এলাকার তাঁত কারখানা মালিক হামিদ খাঁন বলেন, বাইরের শ্রমিকেরা পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়ি গিয়েছেন। বর্তমানে আমার কারখানার বেশির ভাগই তাঁত বন্ধ রয়েছে। কিন্তু সুতার মার্কেটে তো আগুন ধরে গেছে। তাঁত বন্ধ থাকলেও সুতার দাম বেড়েছে পাউন্ডে ১০ টাকা। কারখানা চালু হওয়ার আগেই যদি সুতার দাম বাড়ে তাহলে আমরা কীভাবে তাঁত চালু রাখবো এটাই এখন চিন্তার বিষয়।

শাহজাদপুর উপজেলার খুকনী গ্রামের হাজী ফিরোজ বলেন, ঈদের পরে এখনো তাঁত কারখানাগুলো ঠিকমতো চালু হয়নি তবুও সুতার বাজার বাড়তি। এভাবে অব্যাহতভাবে দাম বাড়লে তাঁত ব্যবসা বন্ধ রাখতে হবে।

Advertisement

উল্লাপাড়া উপজেলার বালশা বাড়ি গ্রামের তাঁত ব্যবসায়ী সবুজ বলেন, আমি তাঁতের লুঙ্গি-গামছা উৎপাদন করি। কিন্তু সুতার দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় আমার যে উৎপাদন খরচ হয় সে তুলনায় বাজারে কাপড়ের দাম হয় না। দিনদিন ব্যবসায় লোকসান হচ্ছে। তার মধ্যে এ সপ্তাহে সুতার দাম পাউন্ডে আরও ১০ টাকা বেড়ে গেছে। এভাবে বাড়তে থাকলে এ এলাকা থেকে তাঁতশিল্প হারিয়ে যাবে। সরকার যদি সুতার দামের দিকে নজর না দেয় তাহলে আমাদের মতো তাঁতিদের লোকসান দিয়ে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না।

এদিকে, বাংলাদেশ হ্যান্ডলুম অ্যান্ড পাওয়ারলুম অ্যাসোসিয়েশনের জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক বদিউজ্জামান বদি বলেন, সুতার দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় অন্যতম কারণ হলো মিল থেকে সুতা তাঁতি পর্যন্ত তিনটা হাত বদল হয়ে আসে। তাই মিলে সুতার যে রেট থাকে তা থেকে তাঁতিদের অনেক বেশি দিয়ে কিনতে হয়। সরকার যদি মিল কর্তৃপক্ষকে সুতার বস্তার সঙ্গে মূল্য লিখে দেওয়ার নির্দেশনা দেয় তাহলে আর তাঁতিদের বেশি দামে সুতা কিনতে হবে না। তারা সরাসরি মিলরেটে সুতা কিনে ব্যবসা করতে পারবে।

আর সিরাজগঞ্জের অন্যতম সুতা পাইকারি বিক্রেতা হাসেম আলী বললেন, সুতার দাম বাড়ানোর পেছনে আমাদের কোনো হাত নেই। মিল আমাদের যে দাম নির্ধারণ করে দেয় আমরা ওই দামে তাঁতিদের কাছে সুতা বিক্রি করি। তাছাড়া সুতা উৎপাদনের জন্য যে তুলা আমদানি করা হয় তার দাম অনেক বেশি তাই এখন সুতার দাম বাড়তি। আমরা সুতা এখন বেশি দামে কিনি বলেই বেশি দামে বিক্রি করছি।

এমআরআর/এমএস

Advertisement