দেশজুড়ে

সংশোধন করতেই ৩০ হাজার টাকা চাইলেন তিনি

গোপালগঞ্জে নির্বাচন অফিসারের বিরুদ্ধে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দাবির অভিযোগ করা হয়েছে। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ডুমদিয়া গ্রামের মো. ইসমাইল গাজীর ছেলে অবসরপ্রাপ্ত বিজিবির হাবিলদার গাজী ওয়াহিদুজ্জামান প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে এ ব্যাপারে গত ১৭ জানুয়ারি লিখিত অভিযোগ করেছেন।এছাড়া জাতীয় পরিচয়পত্রের ভুল সংশোধন, এলাকা পরিবর্তন ও অন্যান্য কাজে ভোটারদের হয়রানি করা হচ্ছে বলেও ভোটাররা ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।অভিযোগে বলা হয়েছে, মৌলভীবাজার জেলা শ্রীমঙ্গল উপজেলার বিজিবির কালীঘাট ফাঁড়িতে কর্মরত অবস্থায় ওয়াহিদ্জ্জুামান জাতীয় পরিচয়পত্র ( নং ৫৮১৮৩৩৮২১৭০৫৬) গ্রহণ করেন। তখন ভুলবসত জাতীয় পরিচয়পত্রে তার জম্ম তারিখ ০১.০১.১৯৬৮ লেখা হয়। বিজিবির সার্ভিস বুকে ও জম্ম নিবন্ধনে ওয়াহিদুজ্জুামানের জম্ম তারিখ ০১.০১.১৯৬৬ উল্লেখ করা আছে। গত ১৩ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশনের নির্দিষ্ট আবেদন ফরম পূরণ ও সোনালী ব্যাংকে চালান জমা দিয়ে ওয়াহিদুজ্জামান গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসে যান। সেখানে আবেদন ফর্ম জমা দিতে গেলে সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার রফিকুল ইসলাম তার কাছে ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। তিনি একটু কম নিতে অনুরোধ করায় পরে ২০ হাজার টাকায় কাজটি করে দিতে রাজি হন। ওই অফিসার টাকা ছাড়া আবেদনপত্র গ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে ওয়াহেদুজ্জামান আবেদনপত্র জমা দিতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসেন।নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র নিতে আসা গোপালগঞ্জ শহরের ব্যাংকপাড়ার বাসিন্দা তছলিম আহম্মেদ অভিযোগ করেন, আমি দীর্ঘদিন বিদেশে ছিলাম। এ কারণে সময়মতো জাতীয় পরিচয়পত্র নিতে পরিনি। দেশে ফিরে জাতীয় পরিচয়পত্র নিতে আবেদন করি। গত বছরের ২২ অক্টোবর জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে আমার ছবি তোলা হয়। এ ছবি ঢাকা পাঠাতে উপজেলা নির্বাচন অফিসার রফিকুল ইসলাম পরোক্ষভাবে তার অধীনস্থ কর্মচারীদের টাকা দিতে বলেন। আমি টাকা দিতে রাজি হই। পরে আমার পরিচয় তিনি জানতে পেরে টাকা চাওয়া বন্ধ করেন। নির্বাচন অফিসে ৩ মাস ঘুরে আমি ওই ছবি ঢাকা পাঠিয়েছি। এখানো জাতীয় পরিচয়পত্র হাতে পাইনি। এভাবে ওই অফিস থেকে পদে পদে হয়রানি করা হচ্ছে।গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাচন অফিসে এলাকা পরিবর্তনের কাজে আসা শেফালী বেগম, হামিদুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, এখানে আবেদনপত্র জমা দিতে আসলে হয়রানির শেষ নেই। নির্বাচন কমিশন থেকে দেয়া নির্দেশনার বাইরেও কাগজপত্র দিতে হচ্ছে। তারপরও আবেদন গ্রহণ করা হয়না। এখানে নানা অজুহাতে হয়রানি করা হচ্ছে। আমরা এক কাজের জন্য অফিসে ৮/১০ বার এসেছি। যারা টাকা দেয় তাদের কাজ দ্রুত হয়ে যায় বলে শুনেছি।জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন কাজে আসা শেখ আমির হোসেন বলেন, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসের মতো হয়রানি আর কোথাও হয় না। ইন্টারনেট কানেকশন নেই। এ অজুহাতে আইডি কার্ড সংশোধনের কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে বলে অফিস থেকে জানানো হয়েছে।গোপালগঞ্জে মাজহারুল ইসলাম বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র সার্ভার থেকে যাচাই করে সত্যায়িত করার কাজে আসলে ইন্টারনেট কানেকশন নেই অজুহাতে উপজেলা নির্বাচন অফিসার ফিরিয়ে দেন। অনেক সময় অফিসে এসে তাকে পাওয়া যায়না। এ সামান্য কাজ করতে তার কাছে বারবার ধরনা দিতে হয়। সব অভিযোগ অস্বীকার করে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার রফিকুল ইসলাম মঙ্গলবার দুপুরে বলেন, আমার এলাকার ভোটাররাই আমার আমার কাছে এসে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের আবেদন করতে পারবেন। অভিযোগকারী আমার এলাকার ভোটার নয়। তিনি আমার অফিসে আসেন নি। তার কাছে আমি কোন টাকা দাবি করিনি। অভিযোগকারী আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছেন। এস এম হুমায়ূন কবীর/এমএএস/আরআইপি

Advertisement