মোহাম্মদ আশরাফুলকে বিশ্বাসঘাতক এবং সাবেক কোচ জেমি সিডন্সকে মিথ্যাবাদী বললেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। ক্রীড়া সাংবাদিক দেবব্রত মুখোপাধ্যয় রচিত মাশরাফি বিন মর্তুজাকে নিয়ে লেখা ‘মাশরাফি’ নামক বইয়ে আশরাফুল এবং সিডন্স সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে এমন কথা বলেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের রঙিন জার্সির অধিনায়ক।মূলতঃ বিপিএলের দ্বিতীয় আসরে ফিক্সিংয়ের সঙ্গে জড়িয়ে নিষিদ্ধ হওয়ার কারণে আশরাফুলকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ হিসেবে চিহ্নিত করলেন মাশরাফি। দীর্ঘ সময়ের সতীর্থকে নিয়ে মাশরাফির এমন মন্তব্যে অবশ্য বিতর্কের ঝড় উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা। বিশেষ করে, মাশরাফি এমন এক ব্যক্তিত্ব, যিনি তার পুরো ক্যারিয়ারে ‘বিতর্ক’ শব্দটাকেই সুকৌশলে এড়িয়ে গেছেন। কিন্তু এ সময়ে এসে নিজের নামে বইটিতে দীর্ঘদিনের সতীর্থকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলে মন্তব্য করে বেশ বিতর্কেরই সৃষ্টি করলেন মাশরাফি। বিপিএল ফিক্সিংয়ের সঙ্গে আশরাফুলের জড়িত হওয়ার বিষয়টি কোনভাবেই মেনে নিতে পারেননি নড়াইল এক্সপ্রেস। সতীর্থের এমন কাণ্ডে তিনি খুবই হতাশ। দেবব্রত মুখোপাধ্যয় মাশরাফির সাক্ষাৎকার নিতে গিয়ে এক জায়গায় জিজ্ঞাসা করেছেন, ফিক্সিংয়ের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে আপনি কি আশরাফুলকে বিশ্বাসঘাতক হিসেবে চিহ্নিত করবেন? মাশরাফি জবাবে বলেছিলেন, ‘অবশ্যই। তিনি তো তাই। তিনি হয়তো সরাসরি দেশের ক্ষতি হয়- এমন কোন কাজ করেননি; কিন্তু তিনি তো লক্ষ লক্ষ সমর্থকের বিশ্বাস ভঙ করেছেন! এই দৃষ্টিকোন থেকে তো, অবশ্যই আপনি তাকে বিশ্বাসঘাতক বলতে পারেন।’বিপিএলের দ্বিতীয় আসরে স্পট ফিক্সিংয়ের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন মোহাম্মদ আশরাফুল। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) কর্তৃক গঠিত ট্রাইব্যুনাল ফিক্সিংয়ের সঙ্গে জড়িত থাকার অপরাধে তাকে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে প্রথমে আট বছরের জন্য, পরে সেটা কমিয়ে ৫ বছরের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এরপর আরও দুই বছর কমানো হয় তার শাস্তির মেয়াদ। যে কারণে, চলতি বছরই আগস্টে আবারও আশরাফুল ক্রিকেটে ফিরতে পারবেন। জেমি সিডন্সকে সরাসরি মিথ্যাবাদী বললেন মাশরাফি। ঘরের মাঠে ২০১১ বিশ্বকাপের আগে কোচ সিডন্স মাশরাফিকে কথা দিয়েছিলেন প্রাথমিক স্কোয়াডে নিয়ে ফিটনেস পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে দেখবেন; কিন্তু সিডন্স তাকে প্রথমে আশ্বাস দিলেও, পরে তা বেমালুম অস্বীকার করেন। যে কারণে সিডন্সকে মিথ্যাবাদী আখ্যা দিলেন ম্যাশ।‘মাশরাফি’ বইতেই উল্লেখ আছে বিষয়টা। মাশরাফি বিন মর্তুজা বলেন, ‘নতুন করে বিতর্ক টেনে আনার কোন মানে হয় না। আমি শুধু তার মিথ্যা কথা বলা দেখে খুব অবাক হয়েছিলাম। তিনি আমাকে বলেছিলেন, তোমাকে নিশ্চয় প্রাথমিক স্কোয়াডে রাখা হবে। সেখানেই তোমার ফিটনেস দেখা হবে এবং এরপরই সিদ্ধান্ত নেবো তোমাকে রাখা হবে কি হবে না। আমি চিন্তা করলাম, এটা অনেক বড় সুযোগ এবং মোহামেডানের হয়ে একটি ম্যাচও খেলে ফেললাম। অথচ, তিনি (সিডন্স) পুরোপুরি তা অস্বীকার করে গেলেন। আপনাদের অনেকেই হয়তো দেখেছিলেন, একদিন ইনডোরে আমি তাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তখন তাকে বলেছিলাম যে, যে কোন জায়গায় মিথ্যা বলতে পারাটা তোমার স্বভাব, তা আমি জানতাম না। এবার সেটাই জানলাম আমি।’ আইএইচএস/আরআইপি
Advertisement