কৃষি ও প্রকৃতি

টবে পেয়ারা চাষের সহজ পদ্ধতি

এখন বাসার ছাদে অনেকেই পেয়ারা গাছ লাগানোর জন্য বেশ আগ্রহী। টবে পেয়ারা চাষ পদ্ধতি স্বাভাবিকভাবেই জমিতে চাষ পদ্ধতির চেয়ে আলাদা। এ পদ্ধতিতে পেয়ারা চাষ করতে হলে বেশ কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে।

Advertisement

সাধারণত শহর অঞ্চলে বাড়ির ছাদে টবে অনেকেই পেয়ারা চাষ করেন। টবে পেয়ারা চাষ পদ্ধতি জনপ্রিয় হওয়ার কারণ হলো সহজে পরিচর্যা করা যায় এবং এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সহজে সরানো যায়।

টবে পেয়ারা চাষ করতে হলে সর্বপ্রথম যে বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে তা হলো সর্বনিম্ন টবের আকার ১৮ থেকে ২০ ইঞ্চি হতে হবে। এছাড়া ড্রাম বা টবের আকার যত বড় হবে ততই ভালো।

পেয়ারা গাছের জন্য টবের মাটি তৈরি করতে হলে খেয়াল রাখতে হবে এর প্রয়োজন মতো সবগুলো পুষ্টি উপাদান যেন মাটির মধ্যে থাকে। এখানে ১৮ ইঞ্চির একটি টবের জন্য সারের মাত্রা উল্লেখ করা হলো।

Advertisement

মাটি তৈরি করার জন্য প্রথমে দুই ভাগ মাটি ও এক ভাগ গোবর সঠিকভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর এই মিশ্রণের সঙ্গে ১৩০ গ্রাম টিএসপি ও ৭০ গ্ৰাম এমপি সার মিশিয়ে নিতে হবে। এছাড়া টবের গোড়ায় ফুটো থাকা আবশ্যক।

পেয়ারা গাছ রোপণ করলে সঠিকভাবে এর সেচের ব্যবস্থা করতে হবে। অতিরিক্ত পানি পেয়ারা গাছের জন্য ক্ষতিকর। এজন্য পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া পরিচর্চার অন্যান্য কাজের মধ্যে অপ্রয়োজনীয় ডালপালা ছাঁটাই করা একটি প্রধান কাজ। সাধারণত পেয়ারা গাছের পুরোনো ডালে কোনো ফল আসে না। অপেক্ষাকৃত নতুন ডালে ভালো ফল হয়।

পেয়ারা গাছে সাধারণত বছরে তিনবার ফুল আসতে দেখা যায়। এ কারণে ফাল্গুন-আষাঢ় ও কার্তিক মাসে কাছে আলাদা কিছু সার প্রয়োগ করতে হয় । ১ গোবর ৫ কেজি, ২ ইউরিয়া ৮০ গ্ৰাম, ৩ ফসফরাস ১৫০ গ্ৰাম এবং ৪ পটাশ ১০০ গ্ৰাম পেয়ারা গাছের গোড়া থেকে যথেষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে মাটিতে মিশিয়ে দিতে হবে।

পেয়ারা গাছের রোগবালাই দমন পদ্ধতি অন্যান্য গাছের থেকে একটু ভিন্ন। পেয়ারা গাছের পাতা নতুন হলে অনেক সময় দেখা যায় পোকা এগুলোকে ফুটো করে ফেলে। যার ফলে ফলন ব্যাঘাত ঘটে এই সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য প্রতি ১০ লিটার পানিতে ১০ গ্রাম পরিমাণ ডেরিস বা ২০ গ্ৰাম ডারবাসন ব্যবহার করতে হবে।

Advertisement

এই সমস্যা সাধারণত ছত্রাকের কারণে হয়। প্রতিকার হিসেবে ব্যভিসটিন ঔষধ এক লিটার পানিতে এক গ্ৰাম পরিমাণে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। পেয়ারা গাছে ফুল আসার আগে রিপকরড অথবা ভেজিম্যাক্স সঠিক মাত্রায় ব্যবহার করতে হবে।

এছাড়া গাছকে সব সময় সুস্থ-সবল ও সবুজ রাখতে সবুজ সার ব্যবহার করতে হবে। এই সার বিভিন্ন সবজির পচা অংশ, গোবর অথবা সরিষার খৈল পানিতে ভিজিয়ে নিজেই তৈরি করা যায়।

এমএমএফ/জিকেএস