সিলেটের মৌলভীবাজারে জন্ম এবং বেড়ে ওঠা। ছোট বেলা থেকেই মা যেন তার সার্বক্ষণিক বন্ধু। সেই মা`র কাছ থেকে রান্নার প্রশিক্ষণ। রান্নার প্রতি ভালো লাগা থেকে ভালোবাসা। আর এ ভালোবাসা থেকে নেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে রান্না।পরিচিতি পেয়েছেন ‘কারি কিং’হিসেবে। তাও আবার দেশে নয়, যুক্তরাজ্য প্রবাসি বাঙালি ভোজন রসিকদের কাছে। দেশটির নর্দাম্পটনে রেস্টুরেন্ট ব্যবসা গড়ে তুলেছেন ‘কারি কিং’খ্যাত বাংলাদেশি শেফ টিপু রহমান।বর্তমানে সেখানেই থাকেন তিনি। তবে এখানেই থেমে থাকতে চান না। বাংলাদেশে গড়ে তুলতে চান আন্তর্জাতিক মানের রান্নার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। সম্প্রতি জাগো নিউজের সঙ্গে কথা হয় এ রন্ধন শিল্পীর সঙ্গে।তিনি জানান, মা’র কাছে রান্নার অনুপ্রেরণা পেতাম। তার কাছে শিখতাম রান্না। কলেজে পড়ার সময় ছোট ভাইকে নিয়ে মৌলভীবাজারে থাকার সময় নিজেই রান্না করতাম। সেখান থেকে আরো রান্নার ঝোক বাড়তে থাকে। এক সময় পাড়ি জমাই লন্ডনে। সেখানে একটি রেস্টুরেন্টে কাজ নেন টিপু রহমান। ১৯৯৫ সালে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা দিয়ে কাজ শুরু হলেও দ্রুতই মালিকপক্ষ তাকে রান্নার দায়িত্ব দেন। রান্না করা খাবারের স্বাদ আর মানের কারণে থেমে থাকতে হয়নি তাকে। নিজেও স্বপ্ন দেখেছেন কিছু করার। চাকরি জীবনে নিজের তৈরি করা রেসিপি নিয়ে বিভিন্ন মেলায় অংশ নিয়েছেন। আলাপচারিতায় টিপু রহমান আরো বলেন, ২০০৪ সালে আমি নিজে একটি রেস্টুরেন্ট দেই। এখন নিজের মালিকানায় তিনটি রেস্টুরেন্ট চলছে। প্রায় ২শ’লোকের অ্যাপায়ন ব্যবস্থা রয়েছে রেস্টুরেন্টগুলোতে। নিজেই রান্না করে অতিথিদের অ্যাপায়নের চেষ্টা করেন।রান্না করে জিতে নিয়েছেন আন্তর্জাতিক সম্মানও। জিতেছেন মিল্ডকারি অ্যাওয়ার্ড। ২০০৯ সালে তার পরিচালিত রেস্টুরেন্ট জিতে নেয় বাংলাদেশ ক্যাটারস অ্যাসোসিয়েশন অ্যাওয়ার্ড। একই বছরে পান আন্তর্জাতিক ভারতীয় শেফ অ্যাওয়ার্ড হিসেবে স্বীকৃতি।আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসিতে লাইভ কাভারেজ হয়েছে তাকে নিয়ে। ২০১২ সালে পাপড় দিয়ে বিশাল স্তম্ভ বানিয়ে নাম লিখিয়েছেন গ্রিনিজ বুকেও।কোন ধরনের খাবার রান্না করতে বেশি ভালো লাগে জানতে চাইলে টিপু রহমান বলেন, আমি যেহেতু বাঙালি তাই ফিস কারি করতে আমার বেশি ভালো লাগে। তবে আমি বিশ্বের অনেক দেশের খাবারই তৈরি করতে পারি। আর আম মোরগ আমার পছন্দের রেসিপি।যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও রান্না করে খাইয়েছেন বলে জানান টিপু রহমান।রান্না নিয়ে ভবিষ্যত পরিকল্পনা জানতে চাইলে টিপু রহমান বলেন, আমি বাংলাদেশে একটি রান্নার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র করবো। সেটি হবে আন্তর্জাতিক মানের। আর আমি নিজের একটি ব্র্যান্ড চালু করতে চাই। সেটি নিয়েও অনেক স্বপ্ন দেখি।টিপু রহমানের জন্ম ১৯৭৩ সালে। ৪ ভাই ও ৩ বোনের সংসারে বেড়ে ওঠা। ছোটবেলা থেকেই মায়ের সঙ্গে তার বিশেষ সখ্য। মাকে ঘিরেই তার দিন। এরপর রান্নার নেশা। এভাবেই বাংলাদেশের টিপু রহমান আজ যুক্তরাজ্যে ‘কারি কিং’। এসএ/জেডএইচ/আরএস/এএইচ/আরআইপি
Advertisement