ধানসহ যেকোনো ফসলের বেশি ফলন পেতে হলে ভালো বীজের প্রয়োজন। এজন্য যে জমির ধান ভালোভাবে পেকেছে, রোগ বালাই পোকা-মাকড়ে আক্রমণ করেনি এবং আগাছামুক্ত জমির ধান বীজ হিসেবে সংরক্ষণ করতে হবে। ভালো ফসল পেতে হলে নিরাপদ বীজ ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য বীজ নিরাপদ রাখতে নিম-নিশিন্দা পাতা দিয়ে বীজ ধান সংরক্ষণ করা যায়। এতে সুরা, কাটারিসহ বিভিন্ন পোকা বীজে আক্রমণ করবে না।
Advertisement
ভালো বীজ পেতে হলে ধান মাড়াই করার সময় চাটাই, চট বা পলিথিন বিছিয়ে দিতে হবে। এভাবে ধান মাড়াই করলে ধানের রং উজ্জ্বল ও পরিষ্কার থাকে। মাড়াই করা ধান অন্তত ৪ থেকে ৫ দিন রোদে ভালোভাবে শুকানোর পর ঝেড়ে গোলাজাত করতে হবে।
এবার ধান কাটার আগেই বিজাতীয় গাছ সরিয়ে ফেলতে হবে। যেসব গাছের আকার-আকৃতি, শীষের ধরন, ধানের আকার-আকৃতি, রং এবং ধান পাকার সময় জমির অধিকাংশ গাছ থেকে একটু আলাদা সেগুলোই বিজাতীয় গাছ। পাশাপাশি সব রোগাক্রান্ত গাছও অপসারণ করতে হবে।
এরপর ফসল কেটে এবং আলাদা মাড়াই, ঝাড়াই করে ভালোভাবে রোদে শুকিয়ে মজুদ করতে হবে। বীজ ধান মজুদের সময় যেসব পদক্ষেপ নেওয়া উচিত তা জেনে নেওয়া যাক। রোদে ৫ থেকে ৬ দিন ভালোভাবে শুকিয়ে নিতে হবে যেন বীজের আর্দ্রতা শতকরা ১২ ভাগের নিচে থাকে। দাঁত দিয়ে বীজ কাটলে যদি কটকট শব্দ হয় তাহলে বুঝতে হবে বীজ ঠিকমতো শুকিয়েছে।
Advertisement
পরিপুষ্ঠ ধান বাছাই করতে কুলা দিয়ে কমপক্ষে দুবার ঝেড়ে নেওয়া যেতে পারে। বায়ুরোধী পাত্রে বীজ রাখা উচিত। বীজ রাখার জন্য ড্রাম ও বিস্কুট বা কোরোসিন টিন ব্যবহার করা ভালো। মাটির মটকা বা কলসে বীজ রাখলে গায়ে দুবার আলকাতরার প্রলেপ দিয়ে শুকিয়ে নিতে হবে।
আর্দ্রতা রোধক মোটা পলিথিনেও বীজ মজুদ করা যেতে পারে। রোদে শুকানো বীজ ঠান্ডা করে পাত্রে ভরতে হবে। পুরো পাত্রটি বীজ দিয়ে ভরে রাখতে হবে। যদি বীজে পাত্র না ভরে তাহলে বীজের উপর কাগজ বিছিয়ে তার উপর শুকনো বালি দিয়ে পাত্র পরিপূর্ণ করতে হবে।
পাত্রের মুখ ভালোভাবে বন্ধ করতে হবে যেন বাতাস ঢুকতে না পারে। এবার এমন জায়গায় রাখতে হবে যেন পাত্রের তলা মাটির সংস্পর্শে না আসে। প্রতি টন ধানে ৩.২৫ কেজি নিম, নিশিন্দা বা বিষ কাটালি পাতার গুঁড়া মিশিয়ে গোলাজাত করলে পোকার আক্রমণ হয় না। পাতা ভালোভাবে রোদে শুকিয়ে গুঁড়া করে ধানের সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হবে।
তথ্য সূত্র: কৃষি তথ্য সার্ভিস
Advertisement
এমএমএফ/জিকেএস