দেশের মেগা প্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু। যেটির বাস্তবায়ন এখন দৃশ্যমান। যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩শ মিটার উজানে নির্মাণ করা হচ্ছে দেশের সর্ববৃহৎ রেলসেতু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু। মোট ৫০টি পিলারের ওপর গড়ে উঠবে ৪.৮ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাকের এই সেতু।
Advertisement
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পদ্মা সেতুর পর দেশের আরেক বৃহৎ প্রকল্প বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু নির্মাণ কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। টুং টাং শব্দে প্রমত্তা যমুনার বুকে স্বপ্নের সেতুর একটির পর একটি পিলারের পাইলিং কাজ এগিয়ে চলছে। ২৯ এপ্রিল সেতুর ৪৮ নম্বর পিলারের ১ম প্রি হেড ঢালাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে নদীর তলদেশ থেকে উপর পর্যন্ত সেতুর একটি পিলারের পূর্ণাঙ্গ কাজ শেষ হয়েছে।
রেল বিভাগের তথ্য মতে, বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩শ মিটার উজানে নির্মাণাধীন এই রেলসেতুর মোট ৫০টি পিলারের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৯টি পিলারের পাইলিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। জাপান এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে রেলসেতু প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে জাইকা। ডুয়েল গেজ ডাবল-ট্র্যাকের এ সেতুটি হবে দেশের সবচেয়ে বড় রেলসেতু। এটি রাজধানীর সঙ্গে দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও সহজ ও উন্নত করবে।
স্থানীয়রা মনে করেন, এ রেলসেতু বাস্তবায়িত হলে আমদানি রপ্তানি খরচ কমে যাওয়াসহ বঙ্গবন্ধু সেতু ও মহাসড়কের ওপর চাপ কমবে। ঝুঁকিও হ্রাস পাবে বঙ্গবন্ধু সেতুর।
Advertisement
বঙ্গবন্ধু সেতু ও রেল সেতুর পশ্চিমেই গড়ে উঠছে সিরাজগঞ্জ ইকোনমিক জোন ও বিসিক শিল্প পার্ক। এখানে কর্মসংস্থান হবে ৭ লাখ মানুষের। এরইমধ্যে এসব অঞ্চলে শিল্প কারখানা স্থাপনে আগ্রহ দেখিয়েছে দেশি বিদেশি শিল্প উদ্যোক্তারা। বঙ্গবন্ধু রেলসেতু নির্মাণ হলে এই শিল্পাঞ্চল থেকে রেলপথ ও সড়ক পথ ব্যবহার করে যেকোনো দেশে পণ্য পরিবহন সহজ হবে। এতে এ জনপদের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের অপার সম্ভাবনা রয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান জানান, বর্তমানে বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে ৩৮টি ট্রেন চলাচল করে। নতুন রেলসেতু নির্মাণ হলে মালবাহীসহ ৬৮টি ট্রেন চলাচল করার পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ট্রেন চলাচলের আন্তঃসংযোগ সৃষ্টি হবে।
তিনি আরও জানান, যে পিলারগুলোর পাইলিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে সেই পিলারগুলোতে কর্মীরা রাত দিন পরিশ্রম করে ঢালাইয়ের জন্য প্রস্তুত করছে। এরইমধ্যে এ রেলসেতুর ৪০ শতাংশ কাজ বাস্তবায়িত হয়েছে।
এদিকে সম্প্রতি সিরাজগঞ্জ-বগুড়া রেললাইন স্থাপনের সম্ভাব্য স্থান পরিদর্শনে এসে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন জানান, প্রকল্পের নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই রেল সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করা হবে। সেই লক্ষ্য নিয়েই সেতুর দুই প্রান্তে দুটি প্যাকেজে কাজ চলছে।
Advertisement
২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে এ সেতুটির নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এফএ/জেআইএম