ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার পদ্মা নদীর গোপালপুর-মৈনট ঘাট দিয়ে শেষ মুহূর্তে বাড়ি ফিরছে মানুষ। তীব্র দাবদাহ, চরাঞ্চলের উত্তপ্ত বালুপথ মাড়িয়ে নাড়ীর টানে বাড়ি ফিরছে অসংখ্য মানুষ।
Advertisement
তবে স্পিডবোটে নিরাপত্তাহীনভাবে ঝুঁকি মাথায় নিয়েই ফিরছে এসব মানুষ। যাত্রীদের শরীরে কোনো লাইফ জ্যাকেট ছাড়াই স্পেডবোটে পদ্মা পার হতে দেখা যায়। যা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ বলে অভিযোগ যাত্রীদের।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, প্রতিকূল আবহাওয়া ও পদ্মার উত্তাল ঢেউ ডিঙিয়ে, ঝুঁকি নিয়ে স্পিডবোট ও ট্রলারযোগে গোপালপুর-মৈনট ঘাট দিয়ে গত কয়েকদিনে ফিরেছে অগণিত মানুষ। গড়ে প্রতিদিন প্রায় ৮ থেকে ১০ হাজার যাত্রী এ ঘাট দিয়ে পারাপার হন। তবে রোববার (০১ মে) শেষ মুহূর্তে ঘরমুখো মানুষের চাপ কিছুটা কমলেও আবহাওয়া ও নিরাপত্তার দিক দিয়ে বেশ ঝুঁকি নিয়ে ফিরেছে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা প্রান্তে গোপালপুর ঘাট। অন্য প্রান্ত ঢাকার দোহার উপজেলায় মৈনট ঘাট। ফরিদপুরের চরভদ্রাসনসহ আশপাশের কয়েকটি উপজেলার যাত্রীদের ঢাকা থেকে যাতায়াতের সবচেয়ে সহজ পথ হচ্ছে গোপালপুর-মৈনট ঘাট দিয়ে পদ্মা নদী পারাপার। ঢাকার গুলিস্থান থেকে বাসযোগে মাত্র দেড় ঘণ্টার ব্যবধানে উপজেলা পদ্মা নদীর অপর পারে চর মৈনট ঘাটে নেমে ট্রলার ও স্পিডবোটে যাত্রীরা খুব সহজে বাড়ি ফিরতে পারেন। তাই এ ঘাট দিয়ে গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ঈদ যাত্রীদের প্রচণ্ড ভিড় ছিলো লক্ষ্যণীয়।
Advertisement
ঈদকে সামনে রেখে এ ঘাট দিয়ে যাত্রী পারাপারের জন্য ৩২টি স্পিডবোট ও অর্ধশত ট্রলার নিয়োজিত রয়েছে। উপজেলার গোপালপুর ঘাটে ১৫টি স্পিডবোট, ২৫টি ট্রলার এবং মৈনট ঘাটে ১৮টি স্পিডবোট ও ২৫টি ট্রলার যাত্রী পারাপারে অংশ নেয়। প্রতিটি স্পিডবোটে ১০ থেকে ১২ জন, বড় বোটে ১৫ থেকে ২০ জন করে এবং প্রতিটি ট্রলারে শতাধিক যাত্রী পারাপার করা হয় বলে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়। জনপ্রতি ট্রলারে ১শ টাকা ও স্পিডবোটে ২শ টাকার বেশি ভাড়া নেওয়া হয়।
এ ব্যপারে গোপালপুর ঘাট ইজারাদার মো. শাহজাহান শিকদার জাগো নিউজকে বলেন, ঈদ উপলক্ষে যাত্রী প্রতি মাত্র ২৫ থেকে ৩০ টাকা বাড়তি ভাড়া আদায় করা হয়। যা অনুমোদন নিয়েই করা হয়েছে। স্পিডবোটে ঈদ উপলক্ষে যাত্রী প্রতি ২শ টাকা করে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে, যা অন্য সময়ের তুলনায় ৩০ টাকা বেশি।
এ ঘাট দিয়ে বাড়িফেরা চাকরিজীবী রিয়াজ খান, ইমরান হোসেন, রাকিবুল হাসান, রুমানা ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরতে কষ্ট হয়েছে। স্পিডবোটে নিরাপত্তা জ্যাকেটও ছিল না। তারপরও ভয় আর কষ্টের মধ্যে এক ধরনের আনন্দ ছিলো।
চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানজিলা কবির ত্রপা জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের নিয়মিত নজরদারি রয়েছে। ঈদ উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের বাড়ি ফিরতে যেন কোনো বিঘ্ন না ঘটে সেটি দিয়ে আমরা সচেতন রয়েছি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে গোপালপুর ঘাটে সব সময় নজর রাখা হয়েছে।
Advertisement
এন কে বি নয়ন/এফএ/জেআইএম