জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন বাবলুকে অব্যাহতি দিয়ে পুনরায় রুহুল আমিন হাওলাদারকে মহাসচিব করা হয়েছে। সেই সঙ্গে মহাসচিব পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে সাবেক মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারকে। মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় পার্টির বনানী অফিসে দলের জরুরি সংবাদ সম্মেলন থেকে এই ঘোষণা দেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেন,‘ আমি হাওলাদারকে সরিয়ে বাবলুকে মহাসচিব করেছিলাম। বাবলু ২ বছরে একদিনও দলের বর্ধিত ও প্রেসিডিয়ামের সভা ডাকতে পারেনি। তিনি হঠাৎ করে পার্টির প্রেসিডিয়াম ও বর্ধিত সভা ডাকতে পারেন না। আমার ঘোষণার পর তিনি পার্টিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছেন। এই অপরাধে তাকে মহাসচিব পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হল।’ এরশাদ বলেন, আমার স্ত্রী রওশন এরশাদের সঙ্গে আমার কোনো বিরোধ নেই। তিনি সংসদ চালাবেন, আমি পার্টি চালাবো। বিকেলে সংসদীয় দলের বৈঠক রয়েছে, সেখানেও আমি থাকবো। আমাদের মধ্যে বিভেদের চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু আমাদের মধ্যে কোন বিরোধ নেই।’তিনি আরো বলেন,‘ আমার স্ত্রী প্রেসিডিয়ামের কোন বৈঠক ডাকেননি। সেখানে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। উনাকে দিয়ে তারা স্টেটমেন্ট দেয়ার চেষ্টা করেছিল। উনি স্টেটম্যান্ট দেন না। এই পার্টিকে কেউ বিভক্ত করতে পারবে না।’এর আগে ছোটভাই জি এম কাদেরকে পার্টির কো- চেয়ারম্যান নিযুক্ত করায় এরশাদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সোমবার রাতে পাল্টা কমিটি করেন জাতীয় পার্টির সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য রওশনপন্থীরা। ভাঙনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এরশাদ বলেন,‘ অসম্ভব জাপা ভাগ হবে না। আমি জাপার চেয়ারম্যান। যারা এর আগে চলে গেছে, তাদের সঙ্গে ৮-১০ জন লোকও যায়নি। যে দুই জন ( ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু) দলে বিভ্রান্তির চেষ্টা করছেন, তাদের সঙ্গেও কেউ নেই। আজকের ঘটনায় জাপায় নবজাগরণ সৃষ্টি হয়েছে।’এর আগে ১৭ জানুয়ারি রংপুরে ছোটভাই জি এম কাদেরকে কো চেয়ারম্যান ঘোষণা করেছিলেন এরশাদ। এর প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এই সিদ্ধান্ত নিলেন এরশাদ। সংবাদ সম্মেলনে এরশাদের বাম পাশে ছিলেন জি এম কাদের। ডান পাশে ছিলেন এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সোমবার রওশন এরশাদের বাসভবনের বৈঠকে উপস্থিত থাকা জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ফয়সল চিশতী, আবুল কাশেমও। আরো উপস্থিত ছিলেন জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূ্ইয়া, নুরুল ইসলাম নুরু প্রমুখ। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেন,‘ জি এম কাদের পার্টির কো চেয়ারম্যান। আমি তাকে যেটুকু দায়িত্ব দেবো তিনি ততোটুকুই পালন করবেন। আর হাওলাদার এর আগেও তিনটি কাউন্সিল সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন। তার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাই তাকে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব নির্বাচিত করা হয়েছে।’এরশাদ আক্ষেপ করে বলেন,‘ সর্বশেষ কাউন্সিলে কাজী জাফরকে চেয়ারম্যান ও হাওলাদারকে সদস্য সচিব করেছিলাম, এর আগে ব্যারিস্টার আনিসকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করেছিলাম, হাওলাদারকে সরিয়ে দিয়েছিলাম, তখন তো গঠনতন্ত্রের কথা বরা হয়নি। এখন কেন বলা হচ্ছে, আমি পার্টির চেয়ারম্যান। আমার ক্ষমতা রয়েছে। আমি ৩৯ ধারা মোতাবেক যেকোন সিদ্ধান্ত নিতে পারি। পরে সেটা প্রেসিডিয়ামে পাস করিয়ে নিবো।’এএম/জেডএইচ/পিআর
Advertisement