ঈদগাহে প্রবেশের আগেই মুসল্লিদের চারবার পুলিশি তল্লাশির মুখে পড়তে হবে। মেটাল ডিটেক্টরে দেহ তল্লাশির পর চূড়ান্তভাবে আর্চওয়ে দিয়ে প্রবেশ করতে হবে মাঠে। সঙ্গে নেয়া যাবে না মোবাইল ফোন, ছাতা। শুধুমাত্র জায়নামাজ আর টুপি নিয়ে ঈদগাহ ময়দানে যেতে পারবেন মুসল্লিরা। কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় এবারের ঈদুল ফিতরের নামাজকে ঘিরে এমনি নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
Advertisement
প্রতিবছরের মতো এবারও দেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে। করোনার কারণে গত দুই বছর শোলাকিয়ায় ঈদের জামাত বন্ধ ছিল। তাই এবার শোলাকিয়ায় মুসল্লি সমাগত বেশি হবে বলে ধারণা প্রশাসনের। সে দিকটি মাথায় রেখে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন। এরই মধ্যে শেষ হয়েছে সব প্রস্তুতি।
জামাত শুরু হবে সকাল সাড়ে ১০টায়। জামাতে ইমামতি করবেন বাংলাদেশ ইসলাহুল মুসলেমিন পরিষদের চেয়রম্যান মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ।
কিশোরগঞ্জ শহরের পূর্ব প্রান্তে শোলাকিয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীর ঘেষে শোলাকিয়া ঈদগা। প্রায় সাড়ে ছয় একর আয়তনের ঈদগাহ ময়দানের ভেতরে স্বাভাবিক অবস্থায় এক লাখ ৬৫ হাজার মুসল্লির নামাজ আদায় করতে পারে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে এখানে প্রতি বছর ঈদের নামাজে অংশ নেয় কয়েক লাখ মুসল্লি। মাঠের ভেতরেই দুই লাখের বেশি মুসল্লি নামাজ পড়েন। আর মাঠের বাইরে রাস্তা-ঘাট ও পেছনে অংশ নেন আরও দেড় লাখের মতো মানুষ। দেশ-বিদেশের লাখো মুসল্লির সমাগমে মুখরিত হয়ে উঠে শোলাকিয়া ও এর আশপাশ।
Advertisement
এবার শোলাকিয়া ১৯৫তম বড় জামাত অনুষ্ঠিত হবে। জেলা প্রশাসন ও ঈদগাহ কমিটির উদ্যোগে গত এক মাস ধরে চলছে প্রস্তুতি। মাঠের দাগ টানা, চুনকাম, ওজুখানা মেরামতসহ সব কাজ শেষ হয়েছে। মুসল্লিদের ওজুর জন্য সামনের পুকুরের ঘাট নতুন করে তৈরি করা হয়েছে।
তবে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে নিরাপত্তাকে। ২০১৬ সালে জঙ্গি হামলার বিষয়টি মাথায় রেখে এবারও চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ শামীম আলম ও পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ এরই মধ্যে শোলাকিয়া মাঠ পরিদর্শন করেছেন। নিরাপত্তার খুঁটিনাটি বিষয়গুলো ঢেলে সাজানো হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক জানান, নিরাপত্তার স্বার্থে মুসল্লিদের একটু কষ্ট সহ্য করতে হবে। নামাজ শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে সবাইকে মাঠে প্রবেশ করতে হবে। ছাতা ও জায়নামাজ ছাড়া অন্য কিছুই সঙ্গে আনা যাবে না। তিনি আরও জানান, র্যাব-পুলিশের পাশাপাশি মোতায়েন থাকবে পাঁচ প্লাটুন বিজিবি।
Advertisement
পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ বিপিএম জানান, মাঠে প্রবেশের আগে সবাইকে পুলিশের চারটি নিরাপত্তা চৌকি পার হতে হবে। সিসি ক্যামেরায় মনিটর করা হবে মাঠের ভেতর ও চারপাশ। মাঠের চারপাশে থাকবে ছয়টি ওয়াচ টাওয়ার। চারটি শক্তিশালি ড্রোন ক্যামেরা মিনটর করবে চারপাশ।
নূর মোহাম্মদ/এএইচ/এমএস