ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের কর্মবিরতি আজ মঙ্গলবার অষ্টম দিনে গড়ালো। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বিভাগের ক্লাস-পরীক্ষা অনুষ্ঠিত না হলেও ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ অনার্স প্রথম বর্ষের ভর্তি কার্যক্রম চলছে। এই আট দিনে ৩২টি পূর্ব নির্ধারিত চুড়ান্ত পরীক্ষা স্থগিত করেছেন বলে জানিয়েছেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোহাম্মাদ আলী। শিক্ষকদের টানা কর্মবিরতিতে বেকায়দায় পড়েছেন ক্যাম্পাসের ভ্রাম্যমাণ দোকানিরা। তাদের দিন যেন চলছেই না। অনেকে আবার ব্যবসা গুটিয়ে দিন মজুরের কাজ করে সংসারের ভার বহন করছেন বলে জানা গেছে।ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন কর্তৃক ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ মঙ্গলবার অষ্টম দিনের মতো ইবি শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে শিক্ষকরা কর্মবিরতি পালন করছেন। ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, ক্লাস-রুমের পাশাপাশি অধিকাংশ শিক্ষকের কক্ষও তালাবদ্ধ আছে। সেই সঙ্গে কর্মকর্তাদের উপস্থিতি ছিল খুবই কম। তারাও শিক্ষকদের কর্মবিরতিতে অফিস ফাঁকি দিয়ে অঘোষিত কর্মবিরতি পালন করছেন। কর্মবিরতির দিনগুলোতে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি খুবই কম। সকাল হলেই সকল শিক্ষার্থীদের আগেই হাজির হন ঝাল-মুড়ি, আমড়া, কামরাঙা, বাদামসহ বিভিন্ন মুখরোচক খাবারের এবং বিভিন্ন রকমের কাপড়ের ভ্রাম্যমাণ দোকান। এখন ক্যাম্পাসে আর তাদের দেখা মিলছে না। শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতিতে বেকায়দায় পড়েছেন এইসব ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোর মালিকরা। সামান্য পুঁজি নিয়ে যারা ক্যাম্পাস এলাকায় সারাদিন বিভিন্ন পসরা সাজিয়ে সন্ধ্যায় পরিবারের মুখে দু`মুঠো অন্ন তুলে দেন তাদের সংসারে নেমে এসেছে কালো অমানিশা। তারা এখন কেউ কেউ অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন। আবার কেউ পেটের দায়ে দিন মজুরি করে সংসার চালাচ্ছেন। ক্যাম্পাস স্বাভাবিক না থকায় আবাসিক হলেও শিক্ষার্থীদের সংখ্যা অনেক কম। ফলে চা এবং বিকেলের মুখরোচক সিঙ্গারা, ছোলা-মুড়ি, বেগুনি, চপের দোকানিরাও বেকায়দায় রয়েছেন। তাদের বেচা-বিক্রিও কমেছে অনেক। এসব দোকান মালিকদের প্রত্যাশা খুব দ্রুত এই অচলাবস্থার একটি সমাধান যেন হয়। ভ্রাম্যমাণ দোকানি মজিদ জাগো নিউজকে জানান, বিশ্ববিদ্যালয় খোলা থাকা অবস্থায় পাপড় বিক্রি করে আমার সংসার চলতো। বর্তমানে ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ থকায় ছাত্র-ছাত্রীরা ক্যাম্পাসে আসেন না। এতে আমার বিক্রিও অনেক কমে গেছে। বন্ধের মাঝে দুই দিন বিক্রি করতে এসেও তেমন বিক্রি হয়নি। পরিবারের ছেলে মেয়েদের মুখে মুই বেলা খাবার জোগাতে আজও এসেছি। তবে বিক্রি নাই বললেই চলে। এখন ক্যাম্পাস স্বাভাবিক হওয়ার আশায় আছি।এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক অলী উল্যাহ জাগো নিউজকে বলেন, বেতন ভাতা বৃদ্ধির জন্য আমরা আন্দোলন করছি না । আমরা আত্ম মর্যাদার জন্য লড়াই করছি। সরকার সম্মান বৃদ্ধি না করে বরং অষ্টম পে-স্কেলকে হেয় করেছেন। শিক্ষার্থীদের সেশনজটের আশঙ্কার কথা উল্লেখ করে বলেন, আমরা সেই শিক্ষক যারা জ্বালাও-পোড়াও উপেক্ষা করে বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের ক্লাস পরীক্ষা নিয়েছি। আশা করছি খুব দ্রুত এ সাময়িক অচলবস্থার নিরসন হবে। আমরা ক্লাসে ফিরেই শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে দেয়ার চেষ্টা করবো।এমজেড/পিআর
Advertisement