ক্যারিয়ারের সেরা সময় পার করছেন এনামুল হক বিজয়। প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে গড়েছেন বিশ্ব রেকর্ড। আসরের ১৫ ম্যাচে তিন সেঞ্চুরি ও নয় ফিফটিতে ৮১ গড়ে করেছেন ১১৩৮ রান। যা কি না বাংলাদেশ তো বটেই, বিশ্ব ক্রিকেটেই কোনো লিস্ট ‘এ’ টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড।
Advertisement
বৃহস্পতিবার লিগের শেষ ম্যাচেও এনামুল বিজয়ের ব্যাট থেকে এসেছে ৮৫ বলে ৯৬ রানের ঝকঝকে এক ইনিংস। শুধু বিজয় নয়, চলতি লিগে আলো ছড়িয়েছেন আরেক ব্যাটার নুরুল হাসান সোহান। শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের হয়ে সুপার লিগে অসাধারণ ব্যাটিং করেছেন তিনি।
আসরে মাত্র ৮ ম্যাচ খেলে তিন ফিফটি ও এক সেঞ্চুরিতে ৯৬.৬০ গড়ে করেছেন ৪৮৩ রান। বিশেষ করে সুপার লিগের ম্যাচগুলোতে খুবই কঠিন পরিস্থিতি থেকে দলকে জয় এনে দিয়েছেন সোহান। মূলত তার সাহসী ব্যাটিংয়ে ভর করেই এক ম্যাচ হাতে রেখে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে শেখ জামাল।
জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও তারকা পেসার মাশরাফি বিন মর্তুজারও এবারের লিগে চোখে লেগেছে বিজয় ও সোহানের পারফরম্যান্স। বিশ্বরেকর্ড গড়ে ১১শ রান করে জাতীয় দলে সুযোগ না পেলে বিজয়ের আর প্রমাণের জায়গা থাকবে না বলে মনে করেন মাশরাফি।
Advertisement
বৃহস্পতিবার লিগের শেষ ম্যাচে শেখ জামালকে হারানোর পর মাশরাফি বলেছেন, ‘পুরো একটা লিগ থেকে ১০-১২ জনকে আনা যায়। তবে জাতীয় দলের কথা ধরলে এক বা দুইজনকে টার্গেট করতে হয়। সেটা আমি মনে করি বিজয়। আগেও বলেছি, আজকেও বলছি সে অসাধারণ ব্যাটিং করেছে, দাপট দেখিয়ে ব্যাটিং করেছে। বিজয়কে আমি মনে করি এখনই বিবেচনা করার সময়।’
বর্তমানে বিজয়ের বয়স ২৯, সোহানের ২৮; ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রে এই ২৮ থেকে ৩২-৩৪ বছর বয়সই ভালো খেলার সময় বলে মনে করেন মাশরাফি। তাই তাদেরকে এখনই জাতীয় দলে সুযোগ দেওয়ার পক্ষে তিনি। তার ভাষ্য, ‘ক্রিকেটে একটা বিষয় আছে বয়স। এখন বিজয়-সোহানরা যে বয়সে আছে... ক্রিকেটে ২৮ থেকে ৩২-৩৪ এর একটা প্যাচ থাকে, এখন কিন্তু ওরা ঐ বয়সে রয়েছে।’
মাশরাফি আরও বলেন, ‘এখানে শুধু এক্সপেরিয়েন্স, সিনিয়র খেলোয়াড়দের কথা চিন্তা না করে যদি ওদের কিছু ম্যাচে সুযোগ দেওয়া যায়, আমার মনে হয় ওরা ভালো করবে। কারণ একটা বয়সের পর ঐ স্পিডটা আর ওদের ভেতরে থাকবে না, যখন সুযোগ না পাবে। একজন মানুষ যদি ১১শ রান করে সুযোগ না পায়, তাহলে তার আর প্রমাণ করার জায়গা থাকে না। তাই এই সুযোগটা পাওয়া উচিত।’
এসময় নিজের বক্তব্যের প্রতি আরও শক্ত যুক্তি দিয়ে তিনি বলেন, ‘একজন হচ্ছে ৬০০-৭০ রান করেছে, তার আশপাশে ৪০০-৫০০ রান করে আছে। আরেকজন হচ্ছে হাজারের ওপর রান করেছে। এটা তো অনেক ব্যবধান। এই পার্থক্যটার মূল্যায়ন করা উচিত। আগেরদিন যেটা বলতে চেয়েছি, অন্যদের এইচপি-এ দলে রাখা, একটা প্রক্রিয়ায় রাখা।’
Advertisement
‘লিটন-তামিমকে তো আপনি সরাতে পারবেন না। তারা রিসেন্টলি পারফর্ম করে এসেছে। তাই বিজয়কে যদি আনেনও, ফার্স্ট এলেভেনে জায়গা কিন্তু নেই। টেস্টে জানি না কে ওপেন করবে, তবু জয় কিন্তু একশ করে এসেছে। এখানে তামিম খেলবে। সো এখানেও কিন্তু কঠিন। তাই টি-টোয়েন্টি আমি উল্লেখ করেছি কারণ এই ফরম্যাটে এখনই বিজয়কে সেট করার সুযোগ আছে। এটা আমার মতামত। এমন না অন্যকেও মেনে নিতে হবে।’
‘সব ফরম্যাটে যে দুইজনই ওপেনার থাকে তা কিন্তু নয়। তৃতীয় ওপেনারও থাকে। ঐখানে যদি টপ পারফরমারকে রাখা হয়, ইন এনি কেস প্লেয়ারের ইনজুরি হতে পারে, সিক হতে পারে, ফর্ম না থাকতে পারে... ইন দ্যাট কেস আমি বেস্ট ইন ফর্ম প্লেয়ারকে পেতে পারি। তো এটাই বিজয়ের ক্ষেত্রে কিন্তু বিষয়টা ভিন্ন, সোহানের ক্ষেত্রে ভিন্ন। কারণ এরা দুজন আউটস্ট্যান্ডিং। সোহান হয়তো ১ হাজার রান করেনি কিন্তু চাপের মধ্যে যে রান করেছে, ম্যাচ উইনিং ইনিংস খেলেছে এগুলো বিবেচনা করা উচিত। আবারও বলবো বয়সের কথা। এখন ওদের বয়স পারফরম করার। এই সময়টায় ওদের রেকগনাইজ করা উচিত।’
এসএএস/জিকেএস