নোয়াখালীর সেনবাগে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন (বীর নিবাস) নির্মাণ প্রকল্পের সাড়ে ১৪ কোটি টাকার কাজের দরপত্র বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
Advertisement
মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) এ ঘটনায় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের নিকট লিখিত অভিযোগ করেছন ঠিকাদাররা।
সেনবাগের পিআইও কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২১-২০২২ অর্থবছরে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় থেকে নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার ৯ ইউনিয়ন ও পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে ১০৬ জন দরিদ্র বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন (বীর নিবাস) নির্মাণ কাজের জন্য সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিক ও স্থানীয় দৈনিকে দরপত্র বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী সোমবার (২৫ এপ্রিল) বিকেল পর্যন্ত দরপত্র বিক্রির শেষ সময় ছিল।
দরপত্র অনুযায়ী ১০৬টি ঘর ২১ টি গ্রুপে নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। প্রতিটি ঘরের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ১৪ লাখ ১০ হাজার টাকা। দরপত্রের মূল্য নির্ধারণ করা হয় দুই হাজার টাকা। কিন্তু পিআইও অখিল শিকারি ও ইউএনও নাজমুন নাহার যোগসাজশ করে মাত্র আটজন ঠিকাদারের কাছে গোপনে দরপত্র বিক্রির অভিযোগ উঠে।
Advertisement
সেনবাগ উপজেলা বাসিন্দা ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স শান্তনু এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আবদুল মতিনসহ ছয় ঠিকাদার লিখিত অভিযোগ করে বলেন, সোমবার দুপুর ১২টার দিকে তারা ছয়জন ঠিকাদার দরপত্র কিনতে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে যান। এ সময় পিআইও কর্মস্থলে না থাকায় তার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হয়। পিআইও তাদের কাছে দরপত্র বিক্রি করবেন বলে আশ্বাস দিলেও বিকেল ৪টার পর তিনি কার্যালয়ে এসে বলেন দরপত্র বিক্রির সময় সাড়ে ৩টায় শেষ হয়ে গেছে।
ঠিকাদার নুরুজ্জামান চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, ইউএনও এবং পিআইও স্থানীয় অসাধু ঠিকাদার সিন্ডিকেটের সঙ্গে আঁতাত করে ১৫ কোটি টাকার প্রকল্প নামমাত্র দরপত্রে সরকারের টাকা আত্মসাৎ করার জন্যই পরিকল্পিতভাবে গোপনে দরপত্র বিক্রি করেছেন। এ দরপত্র বাতিল করে পুনরায় দরপত্র আহবান করার দাবি জানাই।
জানতে চাইলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা অখিল শিকারী তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কয়েকজন ঠিকাদার শিডিউল বিক্রির শেষ দিন নির্ধারিত সময়ের পরে এসেছিলেন। তাই তাদের কাছে শিডিউল বিক্রি করা হয়নি।
যোগাযোগ করা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুন নাহার বলেন, শেষ দিন সাংবাদিকরা আমাকে ফোন দিয়ে শিডিউল কিনতে না পারার বিষয়টি জানিয়েছেন। কিন্তু তখন অফিস সময় শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে কিছু করা যায়নি।
Advertisement
অভিযোগের বিষয়ে নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানিয়েছেন সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় কয়েকজন ঠিকাদার দরপত্র কিনতে পারেননি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ইকবাল হোসেন মজনু/আরএইচ/এএসএম