জাগো জবস

শত প্রতিকূলতা জয় করেছেন উদ্যোক্তা ববি

বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম রেস্টুরেন্ট ‘দ্য ক্যাফে রিও’। এ রেস্টুরেন্টের মালিক মরিয়ম নেছা ববি। যিনি শুধু নিজের কর্মসংস্থানই তৈরি করেননি, নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন একজন নারী উদ্যোক্তা হিসেবে। তার এ পথচলা মোটেই সহজ ছিল না। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে নিজেকে দাঁড় করিয়েছেন এ অবস্থানে।

Advertisement

মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে এসেছেন মরিয়ম নেছা ববি। তাই জীবনযুদ্ধটা ছোটবেলা থেকেই তার চেনা। পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াকালীন টিউশনের টাকার মাধ্যমে তার প্রথম আয়ের হাতেখড়ি। এরপর থেকেই বিভিন্ন কাজের সাথে নিজেকে যুক্ত রেখেছেন। সুযোগ পেয়েছিলেন বিজিবির পরিবার কল্যাণে সেলাইয়ের কাজ শেখার। এখানেই প্রায় হাতের সব কাজে হয়ে ওঠেন পারদর্শী।

২০০৮ সালে প্রথম একটি টেইলার্সের দোকান দেন। অক্লান্ত পরিশ্রমে একটি সেলাই মেশিন থেকে তা পরিণত হয় দশটিতে! কাজের পেছনে ছোটাই যেন তার নেশা। এ ভাবনাই তাকে নিয়ে যায় পরবর্তী ধাপে। ২০১৪ সালে তিনি বুটিক আর বিউটি পার্লারের কাজ শুরু করেন। তার হাতে যেন জাদুর কাঠি। যেই কাঠির ছোঁয়ায় সাফল্য ধরা দেয়। কিছুদিন পর এ ব্যবসাও হয়ে ওঠে জমজমাট!

এ তো গেলো আগের জীবনের কথা। ২০১৬ সাল যেন ববির জীবন একদম ঘুরিয়ে দিলো। তিনি ফুড বিজনেস করার চিন্তা করলেন। যেই ভাবা সেই কাজ। তিনি ১০ লাখ টাকার মত পুঁজি দিয়ে ৯০ স্কয়ার ফিটের একটি ফুড কোর্ট খোলেন। বাকি সব কিছু ছাড়িয়ে যায় তার এ ব্যবস্যা! তিনি ৯০ থেকে ১৮০ ফিট স্কয়ারের দোকান দেন।

Advertisement

ব্যবসা লাভের মুখ দেখতেই এখানে চলে আসে বাধা! সরকারি কাজের জন্য উচ্ছেদ হয় দোকানটি। কিন্তু ববি দমে যাওয়ার পাত্রী নন। পথ চলতে গিয়ে থেমে যাওয়া মানে তো সবকিছু শেষ হয়ে যাওয়া নয়। তিনি দ্বিতীয়বার সুযোগ পেলেন। ২০১৭ সালে তার এক চাচার জায়গায় গড়ে তোলেন তার স্বপ্নের ‘দ্য ক্যাফে রিও’!

২০১৭ সালে সর্বপ্রথম জিগাতলায় দ্য ক্যাফে রিওতে ৫০০ টাকার বুফে রেস্টুরেন্ট চালু করেন। ২০১৮ সালে উত্তরায় আরও একটি বুফে রেস্টুরেন্ট চালু করেন। কিছুদিনের মধ্যেই এর সুনাম চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ২০১৯ সালে ক্যাফে রিওর আরও একটি ব্র্যাঞ্চ চালু করেন। ২০২০ সালে করোনাকালে তার স্টাফ ২০০ জনের মতো। যাদের পরিবার চলেছে এ রেস্টুরেন্টের উপর।

ববি ভাবলেন, ব্যবসাটাকে আরও বড় করতে হবে। যেন অনেক মানুষের কর্মসংস্থান তিনি তৈরি করতে পারেন। তাই ২০২১ সালে গুলশানে আরও একটি ব্র্যাঞ্চ চালু করেন ‘দ্য রিও লাউঞ্জ’ নামে। এখন পর্যন্ত এটিই তার সবচেয়ে বড় ব্র্যাঞ্চ। বর্তমানে তিনি ‘রিও ট্রিপ’ নামে একটি ট্রাভেল এজেন্সিও চালু করেছেন।

মরিয়ম নেছা ববি জাগো নিউজকে জানান, আজকের এ জায়গায় আসার জন্য পেয়েছেন অনেকের সহযোগিতা। একজন সফল নারী উদ্যোক্তা হওয়ার পেছনে তাদের গুরুত্ব কম নয়। তিনি আশা করেন, তার দ্য ক্যাফে রিও ভবিষ্যতে ১ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে।

Advertisement

এসইউ/জেআইএম