বিদেশে অর্থপাচারের ঘটনায় মানি লন্ডারিং আইনে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।
Advertisement
আদালত আরও বলেন, শিগগির এই বিষয়ে (দণ্ড নিয়ে) রুল জারি করবেন তারা। দুর্নীতির অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনায় সাজার হার কম বলেও মনে করেন সর্বোচ্চ আদালত।
যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়ার সহযোগী হিসেবে পরিচিত সাব্বির খন্দকারের জামিনের বিষয়ে জারি করা রুলের শুনানিতে এই অভিমত ব্যক্ত করেন হাইকোর্ট।
এ সময় আদালত সাব্বির খন্দকারের জামিন না দিয়ে আবেদনটি তিন মাসের জন্য মুলতবি (স্ট্যান্ডওভার) করেন। এছাড়া এই সময়ের মধ্যে এই মামলার বিচারিক কাজ শেষ করার জন্যে বলেন হাইকোর্ট।
Advertisement
মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে আজ সাব্বির খন্দকারের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সৈয়দ মামুন মাহবুব। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।
বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।
তিনি জানান, আজ আদালতে দেশ থেকে পালানোর সময় বিমানবন্দরে গ্রেফতার ও যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়ার সহযোগী সাব্বির খন্দকারের জামিনের বিষয়ে জারি করা রুলের ওপর শুনানি হয়। ওই শুনানিতে মানি লন্ডারিং আইনে করা মামলা ও দুর্নীতি মামলায় সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন আদালত।
Advertisement
একেএম আমিন উদ্দিন মানিক আরও জানান, বিচারিক আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে আদালতের আদেশের বিষয়টি জানিয়ে দেওয়ার জন্য আমাকে বলা হয়েছে।
এর আগে ২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি দেশত্যাগের সময় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে পাপিয়াসহ চারজনকে গ্রেফতার করে র্যাব। গ্রেফতার অন্যরা হলেন- পাপিয়ার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমন (৩৮), সাব্বির খন্দকার (২৯) ও শেখ তায়্যিবা (২২)।
এ সময় তাদের কাছ থেকে সাতটি পাসপোর্ট, নগদ দুই লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ টাকার জাল মুদ্রা, ১১ হাজার ৯১ ইউএস ডলারসহ বিভিন্ন দেশের মুদ্রা জব্দ করা হয়। গ্রেফতারের পর ওইদিন রাতেই নরসিংদীর বাসায় এবং ২৩ ফেব্রুয়ারি ভোরে হোটেল ওয়েস্টিনে তাদের নামে বুকিং করা বিলাসবহুল প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুটে অভিযান চালানো হয়।
এছাড়া ফার্মগেটে ২৮ নম্বর ইন্দিরা রোডের রওশন’স ডমিনো রিলিভো নামক বিলাসবহুল ভবনে তাদের দুটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি পিস্তলের ম্যাগজিন, ২০ রাউন্ড গুলি, পাঁচ বোতল বিদেশি মদ ও নগদ ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, পাঁচটি পাসপোর্ট, তিনটি চেক, বিদেশি মুদ্রা, বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি ভিসা ও এটিএম কার্ড জব্দ করা হয়।
২০২০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত বিমানবন্দর থানার মামলায় দুইজনের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এছাড়াও পাপিয়া দম্পতির বিমানবন্দর থানার এক মামলা ও শেরেবাংলা নগর থানার পৃথক তিন মামলায় পাঁচ দিন করে ১৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এরপর পাপিয়াকে আজীবন বহিষ্কার করা হয় দল থেকে। বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি নাজমা আকতার ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক অপু উকিল স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়।
এফএইচ/কেএসআর/এএসএম