দুবাই থেকে খেজুর আমদানির আড়ালে ৫৫ লাখ ৫২ হাজার চারশ শলাকা মন্ড ব্র্যান্ডের সিগারেট আমদানির মাধ্যমে সাত কোটি ১১ লাখ টাকার রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা করা হয়েছে বলে জানায় চট্টগ্রাম কাস্টমসের এআইআর (অডিট, ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিচার্স) শাখা।
Advertisement
রোববার (২৪ এপ্রিল) সাগরিকার ইস্পাহানি সামিট অ্যালায়েন্স টার্মিনাল লিমিটেডে শতভাগ কায়িক পরীক্ষায় খেজুরের আড়ালে সিগারেট আমদানির ঘটনা বেরিয়ে আসে।
চট্টগ্রামের কোতোয়ালির জুবিলী রোডের সুচনা ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি প্রতিষ্ঠান চালানটি আমদানি করে। প্রতিষ্ঠানটির মালিক ফটিকছড়ি উপজেলা ভক্তপুর দৌলতবাড়ি গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম বলে জানিয়েছে কাস্টমস।
কাস্টমস সূত্র জানায়, জাহাঙ্গীর আলমের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান সূচনা ইন্টারন্যাশনাল দুবাই থেকে খেজুর ঘোষণা দিয়ে ৪০ ফুট সাইজের কন্টেইনার আমদানি করেন। চালানটি আমদানির জন্য গ্লোবাল ইসলামি ব্যাংক লিমিটেডের খাতুনগঞ্জ শাখায় ঋণপত্র (এলসি) খুলে প্রতিষ্ঠানটি।
Advertisement
২০২১ সালের ২৭ ডিসেম্বর আমিরাতের জেবেল আলী বন্দর থেকে চালানটি জাহাজিকরণ হয়। ৩০ ডিসেম্বর চালানটি চট্টগ্রাম বন্দরে আসে। পরে চট্টগ্রাম কাস্টমসের পোর্ট কন্ট্রোল ইউনিট (পিসিইউ) ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার আওতায় পণ্য রপ্তানিকারক দেশ, তৈরি দেশ ও আমদানিকারকের ব্যবসায়ীক ধরন পর্যালোচনা করে চালানটিতে মিথ্যা ঘোষণা দেওয়ার বিষয়টি নজরে আসে। পরে কাস্টমসের এআইআর শাখা চালানটির বিল অব লিডিং লক করে খালাস কার্যক্রম স্থগিত করে দেয়। পরে বিষয়টি টের পেয়ে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান দীর্ঘ চার মাসের চালানটি খালাসের জন্য বিল অব এন্ট্রি দাখিল করা থেকে বিরত থাকে।
২৪ এপ্রিল কন্টেইনারটি কিপডাউন করে শতভাগ কায়িক পরীক্ষা সম্পন্ন করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। কন্টেইনারটিতে দুই হাজার ৭৭২টি কার্টন ছিল। এর মধ্যে এক হাজার ৯৮৩ কার্টনে সুকৌশলে উপরে খেজুর দিয়ে ভেতরে সিগারেট রাখা হয়। কন্টেইনারটিতে ৭৮৯ কার্টনে শুধু খেজুর পাওয়া যায়। পুরো চালান পরীক্ষা শেষে ৫৫ লাখ ৫২ হাজার চারশ শলাকা মন্ড ব্রান্ডের সিগারেট ও ১১ হাজার ৮৫৬ কেজি খেজুর পাওয়া যায়।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের এআইআর শাখার ডেপুটি কমিশনার মো. শরফুদ্দিন মিঞা জাগো নিউজকে জানান, মিথ্যা ঘোষণায় খেজুর আমদানির আড়ালে বিদেশি ব্র্যান্ডের উচ্চ শুল্কের সিগারেট আমদানি করেছে জুবিলী রোডের সূচনা ইন্টারন্যাশনাল নামের প্রতিষ্ঠানটি। আমরা চালানটির খালাস কার্যক্রম স্থগিত করে দিলেও আমদানিকারক চালানটি খালাসের জন্য বিল অব এন্ট্রি দাখিল করছিল না। পরে ২৪ এপ্রিল কন্টেইনারটি কিপডাউন করে শতভাগ কায়িক পরীক্ষা সম্পন্ন করি। এতে খেজুর আমদানির আড়ালে বিদেশি সিগারেট আমদানির মাধ্যমে প্রায় ৭ কোটি ১১ লাখ টাকার রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা হয়েছিল। আমদানিকারকসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কাস্টমস আইনে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
ইকবাল হোসেন/একেআর/এএসএম
Advertisement