প্রতিবছর ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ডায়াবিটিস বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। তবে এই রোগ নিয়ে এখনো অনেকের মধ্যেই তেমন সচেতনতা নেই। এর ফলেই বাড়ছে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা। এই রোগকে মূলত দুটি ভাগে ভাগ করা যায়- টাইপ ১ ও টাইপ ২ ডায়াবেটিস।
Advertisement
টাইপ ১ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে ইনসুলিন শরীরে তৈরিই হয় না। কম বয়সীরাই টাইপ ১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয় বেশি। আর টাইপ ২ ডায়াবেটিস মূলত বড়দেয় হয়। এই রোগে পর্যাপ্ত পরিমাণে ইনসুলিন তৈরি হয় না বা তৈরি হলেও শরীর তা কাজে লাগাতে পারে না।
ডায়াবেটিস রোগীদের উচিত সব সময় রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা। এজন্য প্রায় প্রতিদিনই ডায়াবেটিস পরিমাপ করা অপরিহার্য। তবে অনেকেই সুগার মাপার নির্দিষ্ট নিয়মকানুন জানেন না। বিশেষ করে কোন সময় ডায়াবেটিস মাপা উচিত তা অনেকেরই অজানা।
এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের মত হলো, সঠিক রিডিং পেতে দিনে ৬ বার সুগার মাপতে হবে। সকালে উঠে খালি পেটে অর্থাৎ ৬-৮ ঘণ্টা খালি পেট থাকতে হবে এক্ষেত্রে। আবার সকালের নাস্তার ২ ঘণ্টা পর করতে হবে।
Advertisement
দুপুরের খাবারের আগে করতে হবে। এর ২ ঘণ্টা পর আবারও মাপতে হবে। এরপর রাতের খাবারের আগে একবার ও খাওয়ার ২ ঘণ্টা পর আরও একবারসহ দিনে মোট ৬ বার পরীক্ষা করতে হবে।
তবে এই নিয়ম সবার জন্য নয়। এ বিষয়ে কলকাতার আর এন টেগোর হাসপাতালে বিশিষ্ট এন্ডোক্রিনোলজিস্ট ডা: হৃদীশ নারায়ণ চক্রবর্তী জানান, যাদের সুগার খুব ওঠানামা করছে, বারবার হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা সুগার ফল করছে, রোগীকে হাই ডোজে ইনসুলিন নিতে হচ্ছে- তাদের উচিত এই নিয়ম মেনে দিনে ৬ বার সুগার পরিমাপ করা। কারণ তাদের ওষুধ বা ইনসুলিনের ডোজ ঠিক করতে কাজে লাগে এই রিডিং।
এক্ষেত্রে শুধু মাপলেই হবে না, বরং মাপার পর লিখে রাখতে হবে সেই রিডিং। এরপর নির্দিষ্ট দিন পর সেই রিডিং নিয়ে হাজির হতে হবে চিকিৎসকের কাছে। এবার চিকিৎসক ওই রিডিং দেখেই আপনার প্রেসক্রিপশন লিখবেন।
চিকিৎসকের মতে, ল্যাব ও বাড়িতে করা সুগার টেস্টের রিপোর্ট কখনো এক হয় না। এর কারণ হলো, বাড়িতে আঙুলের ডগা থেকে নিচ্ছেন রক্ত। আর ল্যাবে নেওয়া হচ্ছে রক্তনালি থেকে। এই দুই রক্তের মধ্যেই একটু পার্থক্য থাকে। অর্থা সামান্য কমবেশি হতেই পারে।
Advertisement
ডা. চক্রবর্তী জানান, অনেকেই যখন তখন সুগার মাপেন, যার কোনো প্রয়োজন নেই। কোনো কারণ ছাড়া এমনটা একেবারেই করবেন না। এছাড়া যাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আছে তারা বাড়িতে ১৫ দিনে বা ১ মাসে ১ বার মাপলেও চলবে। তাই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া রোজ মাপতে যাবেন না।
জেএমএস/জেআইএম