# ১০ বছরেও হয়নি লালদিয়া মাল্টিপারপাস টার্মিনাল# পিপিপি থেকে বাদ দেওয়া হয় মাল্টিপারপাস টার্মিনাল প্রকল্প
Advertisement
কর্ণফুলী নদীর মোহনার কাছাকাছি কাঙ্ক্ষিত সেই লালদিয়া মাল্টিপারপাস টার্মিনাল আর হচ্ছে না। প্রায় ১০ বছর ধরে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর অবশেষে প্রকল্প থেকে সরে এসেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিক পর্যায়ে চরের এক হাজার ৭০০ অবৈধ বসতি উচ্ছেদ কঠিন হলেও বছরখানেক আগে বসতি উচ্ছেদ করে জায়গা দখলে নেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ। উদ্ধার হওয়া ওই জায়গায় বর্তমানে পাশেই নির্মিতব্য পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালের (পিসিটি) ব্যাকআপ ইয়ার্ড করার চিন্তাভাবনা করছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, ২০১৩ সালের ১১ মার্চ লালদিয়া টার্মিনাল প্রকল্পটির অনুমোদন দেয় অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। প্রথমদিকে শুধু বাল্ক টার্মিনাল করার পরিকল্পনা থাকলেও পরে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) ভিত্তিতে মাল্টিপারপাস টার্মিনাল করার পরিকল্পনা করে বন্দর কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিক পর্যায়ে লালদিয়া মাল্টিপারপাস টার্মিনালে পাঁচটি জেটি এবং এক হাজার মিটার দৈর্ঘ্য ও ৩০০ মিটার প্রস্থের ব্যাকআপ ইয়ার্ড নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সহজতর করে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে লালদিয়া মাল্টিপারপাস টার্মিনাল প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয় বলে বন্দর কর্তৃপক্ষ তখন থেকে জানিয়ে আসছিল।
দেশের প্রথম পিপিপির ভিত্তিতে লালদিয়া মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণের জন্য আগ্রহী পাঁচ বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল। এরমধ্যে রয়েছে- ভারতের শীর্ষস্থানীয় প্রাইভেট মাল্টি পোর্ট অপারেটর আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকোনমিক জোন লিমিটেড, দুবাইভিত্তিক ডিপি ওয়ার্ল্ড, ফ্রান্সের বোলোর, বেইজিংভিত্তিক চায়না হারবার অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড ও সিঙ্গাপুরভিত্তিক গ্লোবাল পোর্ট সার্ভিসেস। প্রাথমিক পর্যায় থেকে বন্দর কর্তৃপক্ষ দাবি করে আসছিল, লালদিয়া মাল্টিপারপাস টার্মিনালের প্রস্তাবিত জায়গায় এক হাজার ৭০০ পরিবার বসবাস করে। এসব পরিবার উচ্ছেদ ও ভূমি জটিলতার কারণে প্রকল্পটি এগোনো যাচ্ছে না। তবে ২০২১ সালের মার্চের শুরুতে অবৈধ এসব বসতি উচ্ছেদ করে লালদিয়া চরের জায়গা দখলে নেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ।
Advertisement
শনিবার (২৩ এপ্রিল) সরেজমিনে দেখা গেছে, নির্মিতব্য পতেঙ্গা টার্মিনালের পরে কর্ণফুলী নদীর ১২নং ঘাট থেকে ইনকনট্রেড ডিপো পর্যন্ত পুরো এলাকায় উঁচু সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছে- লালদিয়ার চরের উদ্ধার হওয়া জায়গা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে লিজ দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-ব্যবস্থাপক (ভূমি) জিল্লুর রহমান।
তিনি জাগো নিউজকে বলেন, লালদিয়া চরের জায়গাগুলো আমাদের (বন্দর) নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। এরই মধ্যে চারদিকে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করা হয়েছে, যাতে কেউ বেদখল করতে না পারে। কাউকে লিজ দেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়। এ নিয়ে কোনো চিন্তাভাবনাও নেই।
বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক জাগো নিউজকে বলেন, লালদিয়া চরে মাল্টিপারপাস টার্মিনাল প্রকল্পটি এখন আর হচ্ছে না। প্রকল্পটি সরকারের পিপিপি সংক্রান্ত দপ্তর থেকে বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। এখন পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালের পর বে-টার্মিনাল বাস্তবায়নের দিকে আমরা এগোচ্ছি। তবে লালদিয়ার চরে বন্দরের জায়গাতে পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনালের ব্যাকআপ ইয়ার্ড করার চিন্তাভাবনা চলছে।
যদিও বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত নয় বলে জানান সচিব ওমর ফারুক।
Advertisement
ইকবাল হোসেন/ইএ/জেআইএম