সবজি এলাকা হিসেবে খ্যাত নওগাঁর বদলগাছী উপজেলা। এছাড়ার জেলার অন্যান্য উপজেলায়ও কমবেশি আবাদ করা হয়। ফলন ভাল হওয়ায় এবং ভাল দাম পাওয়ায় লাউ চাষে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। আগামীতে লাউ চাষের আবাদ বৃদ্ধি পাবে এমনটাই জানান কৃষি কর্মকর্তা এবং কৃষকরা।জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার নওগাঁয় ২৯০ হেক্টর জমিতে লাউয়ের আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে বদলগাছী উপজেলায় লাউ চাষ করা হয়েছে প্রায় ৭৬ হেক্টর জমিতে। গত বছর ছিল ৫০ হেক্টর। উন্নত জাতের বারী-১,২,৩ লাউ চাষ করা হচ্ছে। এছাড়া স্থানীয় জাতের লাউও চাষ করা হয়। বাজার জাতের জন্য বারী জাতের লাউয়ের আবাদ করছেন কৃষকরা। স্বল্প সময়ে এবং স্বল্প পরিশ্রমে লাউয়ের আবাদ করা যায়। সাথী ফসল হিসেবে একই মাচায় পর পর যেমন পটল, ঝিঙ্গা, বরবটি ও সিমের সঙ্গে লাউয়ের আবাদ করা যায়। লাউ চাষে কোনো প্রকার রোগ বালাই না থাকায় কোন রাসায়নিক/কীটনাশক প্রয়োগ করার প্রয়োজন হয় না। এতে কৃষক আর্থিকভাবে কিছুটা সাশ্রয় হোন। উন্নত জাতের বারী লাউ লাষে কৃষকদের আগ্রহ বেশি। জমিতে রেপণের স্বল্প সময়ে গাছে ফল আসা শুরু করে এবং প্রচুর ফল আসে। বারী লাউ সাধারণত গোল এবং লম্বা আকারের হয়। আর লম্বা লাউয়ের গায়ে হালকা সবুজের মতো সাদা দাগ এবং স্বাদযুক্ত হয়।উপজেলার আধাইপুর ইউনিয়নের কাশিয়ারা গ্রামের কৃষক মুমিনুল ইসলাম বলেন, এবার এক বিঘা জমিতে লাউ চাষ করেছেন। একই মাচায় পর পর পটল, ঝিঙ্গা ও বরবটির পর লাউয়ের আবাদ করেছেন। এজন্য আলাদা করে বেশি খরচ করার প্রয়োজন হয়নি। অন্যান্য সবজিতে রোগ বালাই হলেও লাউতে কোন রোগ নেই। ফলন ভাল হওয়ায় প্রায় ২০ হাজার থেকে ২৪ হাজার টাকা বাজারে খুচরা বিক্রি করেছেন। প্রতিটি লাউ প্রায় ৩৫/৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে বলে জানান তিনি।মিঠাপুর ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল জব্বার জানান, ১০ কাঠা জমিতে মাঁচা করে লাউয়ের আবাদ করেছেন। অন্যান্য সবজির চেয়ে লাউয়ে কোনো রোগ বালাই হয় না। কোনো প্রকার ওষুধ প্রয়োগ করতে হয় না। বাজারে দাম ভাল থাকায় লাভও ভাল হবে। আগামীতে এক বিঘা জমিতে লাউ চাষ করবেন বলে জানান তিনি।এছাড়া কৃষক সাবের আলী জানান, ৮ কাঠা জমিতে সিমের সঙ্গে লাউয়ের আবাদ করেছেন। সিমের রোগ বালাই বেশি থাকায় তা ভালো হয়নি। তবে লাউ ভাল হওয়ায় খরচা পুষিয়ে যাবে বলে জানান তিনি।মিঠাপুর ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নাজমুল হুদা জানান, কৃষি বিষয়ে যে কোনো সমস্যার জন্য কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করা হয়। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের সঙ্গে ফসলের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা হয়। লাউ চাষে হালকা পরিচর্যা করতে হয়। পলি মাটিতে লাউের আবাদ ভাল হয় বলে জানান তিনি। বদলগাছী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাহেলা পারভীন বলেন, স্বল্প সময়ে লাউ চাষ করা যায়। জমিতে রোপণের দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যে ফল আসা শুরু করে। পর্যায় ক্রমে ফল আসতে থাকে। এছাড়া সারা বছরই এখন লাউের আবাদ করা হচ্ছে।তিনি আরও জানান, লাউ চাষে কৃষক লাভবান হচ্ছেন। কৃষি বিষয়ের উপর কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। তবে আলাদাভাবে লাউ চাষের জন্য প্রশিক্ষণ দেয়া না হলেও সবজির উপর দেয়া প্রশিক্ষণ তারা কাজে লাগিয়েছেন। কৃষকরা যদি বাণিজ্যিক ভিত্তিতে লাউ চাষ করেন তাহলে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সকল প্রকার সহযোগিতা করা হবে।আব্বাস আলী/এসএস/আরআইপি
Advertisement