দেশজুড়ে

কেটে দেওয়া বাঁধের পানিতে ডুবে গেলো ২৫ একর জমির বাঙ্গি

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার নলুয়া দক্ষিণপাড়া গ্রামে জোয়ারের পানিতে প্রায় ২৫ একর জমির বাঙ্গি ক্ষেত ডুবে গেছে। এতে শতাধিক কৃষকের অর্ধকোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। হঠাৎ করে ক্ষেতে পানি ঢুকে যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ঋণগ্রস্ত কৃষকরা।

Advertisement

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার বাঙ্গির সুনাম রয়েছে দেশজুড়ে। এবার নলুয়া, বরুয়া, হিজলবাড়ি, মাছপাড়া, চকপুকুরিয়াসহ বিভিন্ন গ্রামের ২৫০ হেক্টর জমিতে বাঙ্গির ফলন হয়েছে বেশ ভালো। কিন্তু ক্ষেত থেকে বাঙ্গি তোলার আগ মুহূর্তে বুধবার (২০ এপ্রিল) নলুয়া গ্রামে কে বা কারা রাতের আঁধারে রাস্তার বাঁধ কেটে দেয়। এতে শতাধিক কৃষকের ২৫ একর বাঙ্গি ক্ষেতে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ে। তলিয়ে যায় ক্ষেত। এতে একমাত্র ফসল হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষক।

কৃষকরা বলছেন, বাঙ্গি চাষের আয় থেকে তাদের ছেলেমেয়ের লেখাপড়া ও সংসার খরচ চলে। ধারদেনা ও ব্যাংক ঋণ নিয়ে এসব জমিতে বাঙ্গির চাষ করেছেন। জমির ফসল নষ্ট হওয়ায় সংসার চালানা ও ঋণ পরিশোধ করা তাদের কাছে মাথার বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

প্রতি বছরের মতো এ বছরও ধারদেনা করে দেড় হেক্টর জমিতে বাঙ্গি চাষ করেছেন নলুয়া দক্ষিণপাড়া গ্রামের নরেশ হালদার। কিন্তু জমিতে পানি ঢুকে পড়ায় তার ক্ষেতের ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। বাঙ্গি চাষ করে যে লাভ হয় তা থেকে দেনা দেওয়ার পর ছেলেমেয়ের লেখাপড়া ও সংসারের খরচ চালান। কিন্তু এ বছর কীভাবে তার সংসার চলবে, ছেলেমেয়ের পড়াশোনার খরচ জোগাবেন, সেই চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

Advertisement

একই গ্রামের কৃষক সমাপ্ত বিশ্বাস, পরিতোষ বাইন, যুগল বাইন, জয়দেব রায়, দুলাল রায়, হরপ্রসাদ রায়, কিশোর রায়সহ অনেকে জানান, রাতে কে বা কারা রাস্তা কেটে দেওয়ায় মুহূর্তেই তাদের ক্ষেতে পানি ঢুকে পড়ে। সকালে এসে দেখেন তাদের বাঙ্গি ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে তাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ ঘটনায় সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

কোটালীপাড়া উপজেলার কলাবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট বিজন বিশ্বাস বলেন, গ্রামের বেশিরভাগ কৃষক বিভিন্ন সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে বাঙ্গি ও তরমুজের চাষ করেন। ক্ষেতে পানি ঢুকে পড়ায় শতাধিক কৃষকের প্রায় অর্ধকোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

উপজেলার কলাবাড়ী ইউনিয়নের কালীগঞ্জ ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রমেন্দ্রনাথ হালদার বলেন, খবর পেয়ে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের ক্ষেত পরিদর্শন করেছি। তাদের তালিকাও তৈরি করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহযোগিতা করা হবে।

কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত বাঙ্গি ক্ষেত পরিদর্শন করে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারিভাবে সাহায্য করার চেষ্টা করবো।

Advertisement

মেহেদী হাসান/এসআর/এএসএম