সংসারের বড় ছেলে নাহিদ। ১০ বছর বয়স থেকেই উপার্জনের সংগ্রাম শুরু তার। দোকানে কাজ করে বাবার হাতে তুলে দিতেন টাকা। সবশেষ একটি কুরিয়ার সার্ভিসে ডেলিভারি ম্যানের কাজ শুরু করেন। কিন্তু তার এই পথচলা দীর্ঘ হয়নি। রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত হন। বাসায় গিয়ে ইফতারির কথা থাকলেও তা আর হয়ে ওঠেনি। উল্টো লাশ হয়ে বাবার সঙ্গে বাড়ি ফেরেন নাহিদ।
Advertisement
বুধবার (২০ এপ্রিল) দুপুর সোয়া ২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গ থেকে নাহিদের মরদেহ গ্রহণ করেন তার বাবা মো. নাদিম হোসেন। এরপর অ্যাম্বুলেন্সে করে মরদেহ নিয়ে বাড়ির পথে রওনা দেন তিনি।
বাবা নাদিম হোসেন জানান, মরদেহ কামরাঙ্গীরচরের বাড়িতে নেওয়া হবে। সেখানে জানাজা শেষে আজিমপুর কবরস্থানে করা হবে দাফন।
এসময় চোখের জল মুছতে মুছতে সন্তান হারানো এই বাবা বলেন, একসঙ্গে ইফতারি করার কথা ছিল, ছেলেকে ইফতারি করাতে পারলাম না।
Advertisement
নাহিদের স্ত্রীর নাম ডালিয়া আক্তার। পরিবারের সঙ্গে কামরাঙ্গীরচরের মধ্য রসুলপুরে কালিয়া দেওয়ান বাড়িতে থাকেন তিনি।
স্ত্রীর সঙ্গে নাহিদ
নিউমার্কেট থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ইয়াসিন কবির জাগো নিউজকে জানান, মিরপুর রোডের নুরজাহান মার্কেটের সামনে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে পথচারীরা নাহিদকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) রাতে তার মৃত্যু হয়।
এর আগে সোমবার রাত ১২টার দিকে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী ও দোকান কর্মীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা চলে এ সংঘর্ষ। এরপর রাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলেও মঙ্গলবার সকাল ১০টার পর থেকে ফের দফায় দফায় শুরু হয় সংঘর্ষ। যা চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
Advertisement
এ ঘটনায় উভয়পক্ষের অর্ধ শতাধিক আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের মাঝে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। আর সংঘর্ষের মাঝে পড়ে মারা যান নাহিদ।
এমআইএস/জেডএইচ/জিকেএস