দেশজুড়ে

ভাসছে মুগডাল ক্ষেত, কাঁদছে কৃষক

বরগুনার তালতলীতে খালের বাঁধ কেটে মাছের ঘেরে পানি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে। এতে কৃষকদের প্রায় ১৭ একর জমির মুগডাল পানিতে ভাসছে।

Advertisement

সরেজমিন মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) বিকেল ৪টার দিকে খোট্টার চর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বাঁধ কাটার পানিতে তলিয়ে গেছে মুগডাল ক্ষেত।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছর উপজেলার খোট্টার চর এলাকায় প্রায় ৩৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)। এই বাঁধ নির্মাণে এলাকার কৃষকরা ফসল ফলানোর স্বপ্ন দেখেন। বিভিন্ন এনজিও থেকে ৯ জন কৃষক ঋণ নিয়ে চলতি বছর ১৭ একর জমিতে মুগডাল চাষ করেন। এতে প্রায় চার লাখ টাকা খরচ হয়।

ফলনও ভালো হয়। তবে ঘরে মুগডাল ওঠানোর আগেই স্থানীয় প্রভাবশালী নবী হোসেন জোমাদ্দার তার ব্যক্তিগত ঘেরে মাছচাষের জন্য ফসল রক্ষার বাঁধ কেটে নদীর জোয়ারের পানি ওঠান। এতে ওই এলাকার ৯ জন কৃষকের ১৭ একর জমির মুগডাল পানিতে তলিয়ে গেছে।

Advertisement

কৃষক ইসমাইল ও ইব্রাহিম জাগো নিউজকে বলেন, ‘এনজিওসহ মানুষের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে বাবা-ছেলে মিলে মুগডাল চাষ করি। তবে প্রভাবশালী নবী হোসেন বাঁধ কেটে তার মাছের ঘেরে পানি নেওয়ায় আমাদের ক্ষেত তলিয়ে গেছে। এখন ঋণ পরিশোধ তো দূরের কথা পালানোর পথও খুঁজে পাবো না আমরা। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জানানোর পরও তারা কোনো ব্যবস্থা নেননি।’

ক্ষেতে দাঁড়িয়ে কাঁদছিলেন কৃষক খলিল মিস্ত্রি। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি অসুস্থ। দিনে কাঠমিস্ত্রির কাজ করে সেই টাকা দিয়ে এই মুগডাল চাষ করেছি। গায়ের জোরে বাঁধ কেটে ঘেরে পানি ওঠানোর কারণে আজ আমার স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নবী হোসেন জোমাদ্দার জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার রেকর্ডি জমির ওপরের বাঁধ কেটে পানি উঠাইছি। আমার লাখ লাখ টাকার মাছ বাঁচানোর জন্য পানি উঠাইছি। এতে যদি কোনো কৃষকের ক্ষতি হয় তাতে আমার কিছু করার নেই।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রেজাউল করিম জাগো নিউজ বলেন, আমাদের অনুমতি না নিয়েই তিনি বাঁধ কেটেছেন। এছাড়া বাঁধ কেটে পানি ওঠানোর প্রশ্নই আসে না। এ বিষয়ে কৃষকরা যদি কোনো আইনি ব্যবস্থা নিতে চান তাহলে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

Advertisement

বিএডিসির বরগুনা জেলা কর্মকর্তা মো. প্রিন্স মল্লিক জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হবে। যদি এমন কিছু হয়ে থাকে তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এসআর/এমএস