ভ্রমণ

মার্বেল দিয়ে ভোট গণনা হয় যে দেশে

ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যালট পেপারের ব্যবহার সম্পর্কে সবারই কমবেশি ধারণা আছে। এতে নির্দিষ্ট প্রার্থীর প্রতীকে সিল মেরে ভাঁজ করে ব্যালট বাক্সে ফেলার মাধ্যমে ভোট দেওয়া হয়।

Advertisement

এখন তো ইভিএম মেশিনের সাহায্যেই ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা আছে। তবে কখনো কি শুনেছেন মার্বেল দিয়ে ভোট দেওয়ার কথা? অবাক করা বিষয় হলেও সত্যিই যে, এমনই এক প্রথা আছে আফ্রিকার গাম্বিয়াতে।

সেখানকার বাসিন্দারা মার্বেল দিয়ে ভোট দেওয়ার মাধ্যমেই যোগ্য রাজনৈতিক প্রার্থীকে বেছে নেন তারা। গাম্বিয়ায় মার্বেল শিশুদের খেলার বস্তু নয় বরং তা গণতান্ত্রিক অভিব্যাক্তির প্রতীক।

গাম্বিয়াতে মার্বেল ভোটিং শুরু হয়ে ১৯৬৫ সালে। যেহেতু সেদেশে স্বাক্ষ্মরতার হার খুবই কম, তাই ব্রিটিশরা এই পদ্ধতিতে ভোট ব্যবস্থা চালু করেছিল। যুগ পাল্টালেও এখনো তাদের এই পদ্ধতির পরিবর্তন ঘটেনি।

Advertisement

পাঁচ দশকের পুরোনো এই পদ্ধতি মেনেই আজও গাম্বিয়ার মানুষেরা ভোট দিয়ে আসছেন। তবে এই প্রক্রিয়া একটি সৎ গণতান্ত্রিক অনুশীলনের দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত হলেও ভোট কারচুপির সম্ভাবনা বেশি সেখানে।

গাম্বিয়ার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া জামেহে দীর্ঘ ২২ বছর জনগণের উপর নিপীড়ন কনে। পরবর্তী সময়ে এই কাউন্ট-দ্য-মারবেল সিস্টেমই তার আসন কেড়ে নিয়েছিল।

নির্বাচনের সময় দেশটিকে বিভিন্ন জোনে বিভক্ত করা হয়। প্রতিটি নির্বাচনী এলাকার নিজস্ব ভোট কেন্দ্র আছে। নাগরিকরা শুধু তাদের মনোনীত নির্বাচনী এলাকা থেকে ভোট দেওয়ার অনুমতি পান।

ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইলেক্টোরাল কমিশনের একজন আধিকারিক ভোটকেন্দ্রে সভাপতিত্ব করেন। প্রত্যেক ভোটারের আঙুলে কালি দিয়ে চিহ্নিত করা হয় যাতে কেউ দু’বার ভোট না দেয়।

Advertisement

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) বা ব্যালট বাক্সের পরিবর্তে, ভোটাররা ধাতব ড্রাম বা কন্টেইনারের একটি ছোট গর্ত দিয়ে মার্বেল ফেলে দেন। টেবিলের উপর সেট করা, প্রতিটি পাত্রে রাজনৈতিক দলের প্রতীকী রং, নাম ও চিত্র দিয়ে চিহ্নিত করা হয়। ভোটাররা যার প্রার্থীকে সমর্থন করতে চান সে রঙের কন্টেইনারে একটি মার্বেল ফেলে দেন।

ভোটগ্রহণ শেষে ঘটনাস্থলে গণনা শুরু হয়। যদিও তাদের এই ভোট ব্যবস্থা নিয়ে বিভিন্ন দেশের মতবিরোধ আছে। তবে ২০১৬ সালে জামেহের পরাজয়ের পর থেকে, দেশটি তার গণতান্ত্রিক যাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে ইতিবাচক সংস্কারের মাধ্যমে। গাম্বিয়ায় শেষ মার্বেল ভোট অনুষ্ঠিত হয় ২০২১ সালের ডিসেম্বরে।

সূত্র: অ্যামিউসিং প্লানেট

জেএমএস/জিকেএস