জাতীয়

নিজেদের ভুলের জালে জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগ

নিজেদের করা ভুলের জালে নিজেরাই ধরাশায়ী জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগ (এনআইডি)। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) এই অনুবিভাগ জাতীয় পরিচয়পত্রের ভুল সংশোধনে হিমশিম খাচ্ছে। নতুন বেতন কাঠামোর গেজেট প্রকাশের পর জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের জন্য ভিড় করছেন সরকারি চাকরিজীবীরা। প্রতিদিনই এ ভিড় বাড়ছে। আর সরকারি চাকরিজীবীদের এই ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন অনুবিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।প্রসঙ্গত, গত ১৫ ডিসেম্বর গেজেট প্রকাশের পর জানুয়ারিতে নতুন কাঠামোয় বেতন তুলছেন সরকারি চাকরিজীবীরা। নতুন স্কেলে বেতন নির্ধারণের সুবিধার্থে সরকারি চাকরিজীবীদের জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহারের নির্দেশনা রয়েছে। হাতে পাওয়ার প্রায় সাত বছর পেরিয়ে গেলেও সরকারি চাকরিজীবীদের অনেকেই এতদিন এনআইডি ঠিক করেননি।এনআইডি উইং পরিচালক (অপারেশন) সৈয়দ মোহাম্মদ মূসা জানান, গত দু’মাস ধরে অন্তত এক লাখ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর তথ্য সংশোধন সংক্রান্ত আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়েছে। আরো এক লাখের বেশি অনিষ্পন্ন আবেদন রয়েছে।সরেজমিনে গিয়ে রোববার দেখা যায়, রাজধানীর আগারেগাঁয়ে এনআইডি উইংয়ে দাঁড়ানোর মতো জায়গা নেই। সরকারি কর্মকর্তাদের চাপে সেখানে স্বাভাবিক কাজ করতে পারছেন না এনআইডি উইংয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকায় এনআইডি উইংয়ের লোকজন তিন/চারঘণ্টা তাদের অফিস ভেতর থেকে তালা দিয়ে রাখেন।এ অব্যস্থাপনা সম্পর্কে জানতে চাইলে এনআইডি উইংয়ের কমিউনিকেশন অফিসার মো. আশিকুর রহমান বলেন, ‘একসঙ্গে এতো মানুষের চাপে কাজ করতে কিছুটা অসুবিধা হচ্ছে। এতো মানুষকে একসঙ্গে তো সেবা দেয়া যাবে না।’সরকারি কর্মকর্তা রিজভি কবির জাগো নিউজকে বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র হাতে পাওয়ার পরই তার নামের বানান ভুল পাওয়া যায়। অথচ আমরা সঠিকভাবে ফরম পুরন করেছিলাম। এতদিন এই জাতীয়পত্র কোনো কাজে আসেনি তাই নামের বানান ঠিক করা হয়নি। এখন প্রয়োজনে এসেছেন। তার মত আরো অনেকে সাত বছর পর নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করছেন। শুধু নাম, জন্মতারিখ নয়, হরেক রকমের তথ্য সংশোধনের ব্যস্ততা নির্বাচন কমিশনের এ জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগে। এছাড়া ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন এমন অনেকেও যাচ্ছেন সেখানে। বরিশালের নূর হোসেন জানান, ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় তিনি বিদেশে ছিলেন। এজন্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারেননি। তাই এখন তিনি ভোটার হওয়ার জন্য এসেছেন।জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে নির্ধারিত ফি জমা দিতে হয়। সেই সঙ্গে প্রতিটি সংশোধনের বিপরীতে প্রয়োজনীয় সার্টিফিকেট ও দলিলাদি আবেদনের সঙ্গে দিতে হয় নাগরিকদের। ইসি এতে সন্তুষ্ট না হলে তদন্ত সাপেক্ষে সংশোধন কাজ সম্পন্ন করা হয়। এক্ষেত্রে এক মাসেরও বেশি সময় লাগে ।যেকোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী এই সফটওয়ারে ঢুকে জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) নম্বর, কর্মরত পদ, চাকরিতে যোগদানের তারিখ, কতগুলো টাইম স্কেল, সিলেকশন গ্রেড পেয়েছেন তার তথ্য এবং সর্বশেষ স্কেলের তথ্য দিলেই নতুন স্কেলে তার বেতন কত দাঁড়াচ্ছে তা চলে আসবে। একইভাবে সেখান থেকে অবসর ভাতার তথ্যও পাওয়া যাবে।দেশে সরকার অনুমোদিত ১৬ লাখ ৭৮ হাজার ৩৪২টি পদের বিপরীতে বর্তমানে ১৩ লাখ ৭৫ হাজার ৪৩৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত।এইচএস/এসএইচএস/আরআইপি

Advertisement