তরমুজ চাষ করে বিপাকে পরেছেন ফরিদপুরের চাষিরা। বীজ থেকে ভালো গাছ হলেও গাছে কোনো ফল ধরেনি। তরমুজ চাষ করে পুরো টাকাই লোকসান কৃষকদের। চাষিদের অভিযোগ খারাপ বীজ দেওয়ার কারণেই তাদের এমন করুণ অবস্থা। লোকসানের মুখে পরবর্তী ফসল আবাদে দেখা দিয়েছে চরম অনিশ্চয়তা।
Advertisement
তরমুজ চাষিরা জানান, ডিলারের কাছ থেকে বীজ নেওয়ার সময় কথা ছিল ৬০ দিনে ফলন আসবে। কিন্তু ৯০ দিন অতিক্রম করলেও কোনো ফলন না আসায় এখন জমি থেকে গাছ তুলে ফেলছেন চাষিরা। চাষিদের অভিযোগ, অন্যান্যবার ভিন্ন কোম্পানির বীজ লাগালেও এবছর ডিলার তাদের পাকিজা কোম্পানির বিজ সরবরাহ করেছেন। এখন বীজ ডিলার বা কোম্পানি কেউই এর দায় নিচ্ছে না।
ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের চাষি মো. তুহিন শেখ জাগো নিউজকে বলেন, লাভের আশায় ৩ একর জমিতে তরমুজের আবাদ করেছিলাম। তরমুজ গাছ খুব ভালো হয়েছে। তাতে কি? কোনো ফল আসেনি আমার জমিতে। তরমুজ চাষের জন্য ঋণ নিয়েছিলাম। এখন দেনা শোধ করবো কিভাবে সেই চিন্তায় আছি। এ ক্ষতি পোষাণোর মতো না।
একই মাঠের চাষি মো. কামাল মোল্যা, শহীদ মোল্যা, মোশাররফ মোল্যা একাধিক তরমুজ চাষি জাগো নিউজকে বলেন, শুধু আমরা না, যারাই তরমুজ চাষ করেছেন সবারই একই অবস্থা। সবারই সর্বনাশ হয়েছে। তারা অভিযোগ করে আরও বলেন, ফরিদপুর হাজী শরীয়তুল্ল্যাহ বাজারের দত্ব বীজ ভান্ডার থেকে পাকিজা কোম্পানির বীজ কিনেছিলাম। বীজ কেনার সময় বীজ ব্যাবসায়ী ভালো বীজ, গ্যারান্টি দিয়ে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে বীজ বিক্রি করেন।
Advertisement
আমাদের প্রতি বিঘা তরমুজ চাষ করতে খরচ হয়েছে প্রায় অর্ধ লক্ষ টাকা। লোন করে, ধার-দেনা করে তরমুজ আবাদ করেছি। ভেবেছিলাম তরমুজ বিক্রির টাকা দিয়ে দেনা শোধ করবো, পরবর্তী ফসল আবাদ করবো। কিন্তু এখন দেনা শোধ তো দূরে থাক পরবর্তী ফসল আবাদের জন্য কোনো টাকাই নেই আমাদের কাছে। চাষিরা পরবর্তী ফসল চাষের জন্য সরকারি সহায়তার দাবির পাশাপাশি প্রতারক বীজ কোম্পানির শাস্তি দাবি করেন।
এ বিষয়ে দত্ত বীজ ভান্ডারের স্বত্বাধীকারী তাপস কুমার দত্ত জাগো নিউজকে বলেন, কোম্পানি যেভাবে প্যাকেট করে পাঠিয়েছে আমরা সেভাবে বিক্রি করেছি। আমরা তো আর জানি না ভালো-মন্দ। তবে চাষিদের অভিযোগ তিনি কোম্পানিকে জানিয়েছেন বলেও জানান।
এ প্রসঙ্গে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ড. হযরত আলী জাগো নিউজকে বলেন, এসব ক্ষেত্রে বিশ্বস্ত ডিলারদের নিকট থেকে বীজ সংগ্রহ করা উচিত। আবাদ করার সময় কৃষি অফিসারের পরামর্শ নিয়ে চাষিদের চাষ করা উচিত।
এ বিষয়ে চাষিদের বারবার সতর্ক করা হয়। তিনি আরও বলেন, এসব জমিতে চাষিরা এখন পাট চাষ করবে। কৃষি বিভাগ খোঁজ-খবর নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের কিভাবে সাহায্য করা যায় সেই দিকটা বিবেচনা করা হবে।
Advertisement
এন কে বি নয়ন/এমএমএফ/জিকেএস