জাতীয়

রাজধানীতে ‘তারের জট’, বিদ্যুৎ-ব্রডব্যান্ডকে সমন্বয়ের দাবি

বিদ্যুৎ ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের মধ্যে দ্রুত সমন্বয়ের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। রাজধানীসহ দেশের বিভাগীয় শহর ও জেলা শহরগুলোতে তারের জঞ্জাল নিরসনে সিটি করপোরেশন ও বিদ্যুৎ বিভাগের কাছে এই দাবি জানানো হয়।

Advertisement

দাবিত উল্লেখ করা হয়, দুই বিভাগ প্রায়ই তার কাটাকাটি করে। ফলে বিপাকে পড়ে যায় ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা। তাই চলমান ডিপিডিসির আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবলের কাজ শুরু হওয়া বিদ্যুৎ বিভাগ ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের মাধ্যমে ইকোসিস্টেম বা দ্রুত সমন্বয় করার তাগিদ দিয়েছেন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।

রোববার (১৭ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, এরই মধ্যে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা এক কোটি ছাড়িয়ে গেছে, শিল্প-কারখানা ব্যাংক অফিস আদালত সবই চলে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ভিত্তিক। ব্রডব্যান্ডের ব্যান্ডউইথের ব্যবহার রায় ২ হাজার জিবিপিএসের বেশি। এখনো দেশে ৯০ শতাংশ নাগরিক সেবার বাইরে রয়েছে। কিন্তু এরই মধ্যে তারের জঞ্জালে নাকাল নগরবাসী।

এ সেবার লাইসেন্স আরও সংখ্যাও প্রায় দুই হাজার। টেকসই ও দীর্ঘমেয়াদি সঠিক পরিকল্পনার অভাবে তারের জট নিরসন করা এখনো সম্ভব হচ্ছে না। তবে বর্তমানে বিদ্যুৎ বিভাগের রাজধানী তার মুক্ত করার যে বিশাল কর্মযজ্ঞ পরিচালিত হতে যাচ্ছে তার সাথে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাকে সমন্বয় বা ইকোসিস্টেম করা গেলে তারের জঞ্জাল নিরসন করা অনেকটাই সম্ভব বলে আমরা মনে করি।

Advertisement

বিদ্যুৎ সরবরাহ নির্ভরযোগ্য ও নিরবচ্ছিন্ন করতে বিতরণ লাইন মাটির নিচে নিচ্ছে ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি (ডিপিডিসি)। প্রাথমিকভাবে বঙ্গভবন থেকে জাহাঙ্গীর গেট ও গাবতলী থেকে আজিমপুর পর্যন্ত মূল রাস্তার দুই পাশের ওভারহেড (মাটির উপরের) বিতরণ লাইনকে মাটির নিচের লাইনে নেওয়া হবে।

এরই মধ্যে জাহাঙ্গীর গেট থেকে ফার্মগেইট পর্যন্ত দুই কিলোমিটার লাইন মাটির নিচে নেওয়া হয়েছে। এরই ধারবাহিকতায় শনিবার বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল আঙিনায় দুটি ১১ কেভি রিং মেইন ইউনিট (আরএমইউ) চালু করা হয়েছে। যেখানে ডিপিডিসির মনিপুরী পাড়া ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্র থেকে ১১ কেভি আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবলের মাধ্যমে সংযোগ দেওয়া হয়েছে।

ডিপিডিসি সূত্রে জানা গেছে, অধিকতর নির্ভরযোগ্য ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সুবিধার লক্ষ্যে ‘পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট আন্ডার ডিপিডিসি এরিয়া’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বঙ্গভবন থেকে জাহাঙ্গীরগেট ও গাবতলী থেকে আজিমপুর পর্যন্ত বিদ্যমান ওভারহেড বিদ্যুৎ বিতরণ লাইনকে আন্ডারগ্রাউন্ডে লাইনে রূপান্তর করা হবে।

এই কাজের অংশ হিসেবে বঙ্গভবন থেকে জাহাঙ্গীরগেট পর্যন্ত ১৯ কিলোমিটার প্রধান সড়কের দুই পাশে ও গাবতলী থেকে আজিমপুর পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার প্রধান সড়কের দুই পাশে ওভারহেড বিতরণ নেটওয়ার্ক আন্ডারগ্রাউন্ড বিতরণ নেটওয়ার্কে রূপান্তরের জন্য কিয়োস্ক ট্রান্সফরমার, রিং মেইন ইউনিট (আরএমইউ), লো টেনসন ডিস্ট্রিবিউশন বপ (এলটিবি) স্থাপন করা হবে।

Advertisement

জাহাঙ্গীর গেট থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত ২২টি আরএমইউ, ১৯টি এলটিবি ও চারটি কিয়োস্ক ট্রান্সফরমার স্থাপন করা হবে। এই কাজ বাস্তবায়নে ডিপিডিসির প্রায় ৩০০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। কাজটি চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিএনটিআইসি ও এসপিআইটিসি যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে। এই প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত তার সাথে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটকে যুক্ত করা অত্যন্ত জরুরি।

আর যদি তা না করা যায় তাহলে হয়তো রাজধানীর থেকে বিদ্যুতের তার অপসারণ করা গেলেও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের আরও জঞ্জাল সৃষ্টি করবে। সেই সঙ্গে গ্রাহক ভোগান্তি অনেক বৃদ্ধি পাবে। ক্ষতিগ্রস্ত হবে ক্ষুদ্র আইএসপি বিনিয়োগকারীরাও। আমরা মনে করি বিদ্যুৎ বিভাগ ও বিটিআরসি সেইসাথে আইএসপি অপারেটরদের দ্রুত সমন্বয় করা হোক। গ্রাহক স্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে ও তারবিহীন ঢাকা নগরী গড়ে তুলতে একটি যুগোপযোগী ইকোসিস্টেম গড়ে তোলা হোক।

এমআরএম/জেআইএম