জাগো জবস

প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার পরামর্শ

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪৫ হাজার ‘সহকারী শিক্ষক’ নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা আগামী ২২ এপ্রিল শুরু হবে। প্রথম ধাপে ২২টি জেলার মধ্যে ১৪টির সব উপজেলা এবং ৮টি জেলার কয়েকটি উপজেলার পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এ নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের জন্য পরামর্শ দিয়েছেন বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার, লেখক ও ক্যারিয়ার পরামর্শক গাজী মিজানুর রহমান। জাগো নিউজের পক্ষ থেকে তার সঙ্গে কথা বলেছেন মোছা. জেলি খাতুন—

Advertisement

জাগো নিউজ: প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার জন্য কোন কোন বিষয়ের ওপর বেশি গুরুত্ব দিতে হবে?গাজী মিজানুর রহমান: যে টপিকগুলো বিগত প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় বিশেষ করে ২০১৯ ও ২০১৮ সালের পরীক্ষায় বেশি এসেছে। যেমন- বাংলা বিষয় থেকে এক কথায় প্রকাশ, বাগধারা, কারক-বিভক্তি, সমাস, প্রতিশব্দ ইত্যাদি। ইংরেজির ক্ষেত্রে Parts of Speech, Preposition, Phrase & Idioms, Right form of Verbs, Subject-Verb Agreement ইত্যাদি। গণিতের ক্ষেত্রে শতকরা, লাভ-ক্ষতি। বীজ গণিতের মান নির্ণয়। জ্যামিতির বিভিন্ন প্রকার কোণ ও ত্রিভুজ, আয়তক্ষেত্র, বর্গক্ষেত্র ইত্যাদি। সাধারণ জ্ঞানের ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, ছয় দফা, ভাষা আন্দোলন, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ৭০-এর নির্বাচন, প্রাচীন জনপদ, ব্রিটিশ শাসন, সুলতানি যুগ, বিভিন্ন সংস্থার সদর দপ্তর ইত্যাদি।

জাগো নিউজ: এ নিয়োগ পরীক্ষার জন্য পড়াশোনার ক্ষেত্রে কোন বিষয় এড়িয়ে যাওয়া উচিত?গাজী মিজানুর রহমান: যে বিষয়গুলো পড়াশোনার ক্ষতি করে কিংবা পড়াশোনায় মনোযোগী হতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে; এমন বিষয়গুলো এড়িয়ে চলা উচিত।

জাগো নিউজ: নিয়োগ পরীক্ষার জন্য পড়াশোনার রুটিন কেমন হওয়া দরকার?গাজী মিজানুর রহমান: পরিকল্পনা মাফিক ও যথাযথভাবে প্রস্তুতি নেওয়ার ক্ষেত্রে, পড়াশোনার ধারাবাহিকতা ধরে রাখার ক্ষেত্রে পড়ার রুটিন খুব কার্যকরী। পড়ার রুটিন নিজের সময় ও সুযোগ অনুযায়ী করা উচিত। তবে সকালবেলা কোনো কঠিন সাবজেক্ট পড়লে সেটি মনে রাখার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। পড়ার রুটিনে বিকেলের সময়টা খেলাধুলা বা একটু হাঁটা-চলার জন্য রাখা উচিত। রুটিনে প্রতি বিষয় পড়ার শেষে ছোট বিশ্রাম রাখা উচিত। এতে দীর্ঘ সময় পড়াশোনা করা যায়।

Advertisement

জাগো নিউজ: পরীক্ষায় নেগেটিভ মার্কস কমাতে আপনার পরামর্শ কী?গাজী মিজানুর রহমান: পরীক্ষার হলে আন্দাজের ওপর যত কম প্রশ্নের উত্তর করা যায়; তত নেগেটিভ মার্কস কমানো যায়। তার চেয়ে বড় কথা হলো- গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো পরীক্ষার আগে বারবার রিভিশন দিলে নেগেটিভ মার্কস কমে যায় অনেকাংশে।

জাগো নিউজ: পরীক্ষায় কোন ভুলগুলো করা উচিত নয়?গাজী মিজানুর রহমান: কোনোভাবে হাতে কম সময় নিয়ে পরীক্ষার হলে যাওয়া উচিত নয়। হাতে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে পরীক্ষার হলে যাওয়া উচিত। ওএমআর শিট হাতে পাওয়ার পর নিজের নাম, নিজ জেলার নাম, রোল নম্বর, স্বাক্ষর ঠিকভাবে চেক করা উচিত। প্রশ্ন পাওয়ার পর প্রথমে ‘সেট কোড’ লিখে সংশ্লিষ্ট বৃত্ত ভরাট করে তারপর মূল প্রশ্নে যাওয়া উচিত। আর না জেনে কোনো প্রশ্নের উত্তর করা উচিত নয়।

জাগো নিউজ: শেষ সময়ের প্রস্তুতি কেমন হলে ভালো হয়?গাজী মিজানুর রহমান: আগে যা পড়া হয়েছে, তা বারবার রিভিশন দেওয়া উচিত। বিসিএস প্রিলির বিশেষ করে ৩৫তম-৪৩তম পর্যন্ত ভালোভাবে পড়া উচিত। হাতে সময় থাকলে মডেল টেস্ট দিলে পরীক্ষার আগে নিজের প্রস্তুতি জানা যায়।

জাগো নিউজ: পরীক্ষার্থীর সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার সম্পর্কে আপনার পরামর্শ—গাজী মিজানুর রহমান: এ মুহূর্তে সোশ্যাল মিডিয়ায় যত কম সময় দেওয়া যায়; ততই ভালো। যেসব গ্রুপ কোনো কাজে আসে না, অযথা সময় নষ্ট করে সেসব গ্রুপ থেকে লিভ নেওয়া উচিত। অপ্রয়োজনীয় পেজ আনলাইক করা উচিত। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কোনো সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রবেশ করা উচিত হবে না।

Advertisement

জাগো নিউজ: প্রথমবার অংশ নিয়েই উত্তীর্ণ হতে চাইলে আপনার পরামর্শ—গাজী মিজানুর রহমান: পরীক্ষা নিয়ে কোনোভাবে দুশ্চিন্তা করা যাবে না। এতে জানা প্রশ্নের উত্তরও ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আগের পড়াগুলোই রিভিশন দেওয়া উচিত। এ মুহূর্তে যত সাম্প্রতিক সাধারণ জ্ঞান পড়া যায়; ততই ভালো।

জাগো নিউজ: বারবার পরীক্ষা দিয়ে যারা ব্যর্থ হচ্ছেন, তাদের জন্য পরামর্শ কী?গাজী মিজানুর রহমান: পরামর্শ হচ্ছে, পরীক্ষার হলে যে বিষয়গুলো বারবার ভুল হয় বা কনফিউশন তৈরি করে; সে বিষয়গুলোর ওপর জোর দিতে হবে। একই বিষয় বা টপিকের ক্ষেত্রে যেন ভুলের পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সেদিকে নজর দেওয়া। সম্ভব হলে বিষয়গুলো নিয়ে গ্রুপ স্টাডি অথবা অভিজ্ঞদের সাহায্য নেওয়া। পরীক্ষার আগে বেশি বেশি মডেল টেস্ট দিয়ে নিজেকে প্রস্তুত করে নেওয়া।

এসইউ/এএসএম