ভ্রমণ

‘ভ্যালি অব ফ্লাওয়ার্সে’ গিয়ে যা দেখবেন

ফুলের সৌন্দর্য ও সুবাস মুগ্ধ করে না এমন কোনো মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। ফুল দেখলে সবার মনই খুশিতে ভরে ওঠে। কখনো কি কল্পনা করেছেন এমন একটি স্থানের দৃশ্য যেখানে ভূমি থেকে পাহাড়ের চূড়া পর্যন্ত বিস্তৃত ফুলের রাশি। পাশে কলকলিয়ে বয়ে চলেছে নদী।

Advertisement

এমন দৃশ্য কল্পনা করতেই নিশ্চয়ই হারিয়ে যাচ্ছেন ফুলের রাজ্যে। তবে কল্পনা নয় বাস্তবেই আপনি এমন সৌন্দর্য অবলোকন করতে পারবেন ‘ভ্যালি অব ফ্লাওয়ার্সে’। সেখানে গেলে আপনি হারিয়ে যাবেন কল্পনারাজ্যে।

ভ্যালি অব ফ্লাওয়ার্স’ ভারতের উত্তরখণ্ডের চমোলি জেলায় অবস্থিত একটি জাতীয় উদ্যান। এটি ইউনেস্কোর ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’। সমুদ্রপৃষ্ঠের থেকে প্রায় ৩৫০০ ফুট উঁচু এই উপত্যকায় বিরল সব উদ্ভিদ ও প্রাণীর বাস।

বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের পাশাপাশি এখানে এশিয়ার কালো ভাল্লুক, স্নো লেপার্ড, লাল শেয়াল ও বিভিন্ন বিরল প্রজাতির হরিণের সন্ধান মেলে। ভ্যালি অব ফ্লাওয়ার্স ট্রেকিংয়ের জন্য খুবই জনপ্রিয় এক গন্তব্য। জুনের ১ তারিখ থেকে চালু ভ্যালি অব ফ্লাওয়ার্স দর্শন ও ট্রেকিংয়ে যেতে পারবেন পর্যটকরা।

Advertisement

প্রতি বছর ১ জুন থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত খোলা থাকে এই ট্রেক। ভ্যালি অব ফ্লাওয়ার্সে প্রবেশ করার সময় সকাল ৭টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত। বর্ষাকালে যেতে হলে আগে থেকে আবহাওয়া সম্পর্কে খোঁজ খবর করে তারপর যাওয়াই ভালো।

ভ্যালি অব ফ্লাওয়ার্সে মানুষ ৩টি লক্ষ্য নিয়ে যান- প্রথমটি হলো, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা। ট্রেকিং ও বন্য পাহাড়ি ফুলে ঢাকা বিস্তীর্ণ উপত্যকায় হারিয়ে যেতে সবাই ভ্যালি অব ফ্লাওয়ার্স ভ্রমণে যান। এই উপত্যকার পাশেই পাহাড়ি নদী পুষ্পবতী কলকল ধ্বনি আপনাকে মুগ্ধ করবে।

দ্বিতীয় কারণ হলো, স্থানটি তীর্থস্থান হিসেবে জনপ্রিয়। প্রতি বছর অসংখ্য মানুষ এই তীর্থস্থান দর্শন করতে যান। আর তৃতীয় যে বিষয়টির জন্য পর্যটকরা এখানে আসেন সেটি হলো পাহাড়ি গ্রাম ভ্রমণ করা। ঘনগরিয়া এখানকার প্রান্তিকতম গ্রাম। ঘুরে দেখতে পারেন ব্যুন্দর গ্রামটিও।

কীভাবে যাবেন?

Advertisement

ভ্যালি অব ফ্লাওয়ার্সে ট্রেকের জন্য প্রথমে যেতে হবে ভারতের হৃষিকেশ। সেখান থেকে বাসে বা ছোট গাড়িতে যেতে হবে যোশীমঠ। সড়ক পথে প্রায় ২৫৫ কিলোমিটার দুরত্ব। সময় লাগবে ৯ ঘণ্টা। বাস না মিললেও পেয়ে যাবেন শেয়ার ট্যাক্সি। রাতটুকু যোশীমঠে কাটিয়ে পর দিন সকালে রওনা দিতে হবে গোবিন্দঘাটের দিকে।

গাড়িতে গোবিন্দঘাটের দূরত্ব ২২ কিলোমিটার। গোবিন্দঘাট থেকেই শুরু পায়ে হাঁটা পথ। গোবিন্দঘাট থেকে ট্রেক করে ঘনগরিয়ার দূরত্ব প্রায় ১০ কিলোমিটার। ট্রেক করতে সময় লাগবে প্রায় ৬ ঘণ্টা।

ঘনগরিয়ার উচ্চতা গোবিন্দঘাটের থেকে প্রায় ১২০০ মিটার বেশি। ফলে গোটা ট্রেকের সবচেয়ে কঠিন অংশ এটি। তৃতীয় দিন মাত্র ২ ঘণ্টা ট্রেকিং পৌঁছে যাওয়া যাবে ভ্যালি অব ফ্লাওয়ার্সে।

কোথায় থাকবেন?

হৃষিকেশ, যোশীমঠ, গোবিন্দঘাট ও ঘনগরিয়ায় ছোট-বড় নানা রকমের পর্যটক নিবাস আছে। তবে ভ্যালি অব ফ্লাওয়ার্স যেহেতু জাতীয় উদ্যান তাই সেখানে থাকার কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই ঘনগরিয়াতে থেকেই ঘুরতে হবে। সাধারণ খাবারের পাশাপাশি ঘনগরিয়াতে ভালো পাঞ্জাবি খাবার-দাবারেরও ব্যবস্থা আছে।

জেএমএস/জিকেএস