লাইফস্টাইল

ফ্যাশনে অরগ্যাঞ্জার বাহারি পোশাক

খুবই হালকা ওজনের এক কাপড়। এর রংগুলোও মন ছুঁয়ে যায়। অনেক বেশি পাতলা, সহজে কুঁচকে বা ছিঁড়ে যাওয়া থেকে মুক্ত, সুতি কাপড়ের মতো বায়ু শোষণের ক্ষমতা ইত্যাদি এর প্রধান বৈশিষ্ট্য।

Advertisement

অরগ্যাঞ্জা আসলে তৈরি হয় সিল্ক থেকে। তবে সিনথেটিক ফাইবার যেমন- পলিয়েস্টার, নাইলন, রেয়ন থেকেও প্রস্তুত করা যায় অরগ্যাঞ্জা কাপড়। খাঁটি সিল্কের চেয়ে আবার এ ধরনের অরগ্যাঞ্জা বেশি টেকসই ও সহজলভ্য হয়।

বর্তমানে অরগ্যাঞ্জা পোশাকের কদর অনেক বেড়েছে। তারকা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সবাই বেছে নিচ্ছেন অরগ্যাঞ্জার পোশাক। বেশ ধুমধামে ১৪ এপ্রিল বিয়ে সারলেন বলিউডের জনপ্রিয় দুই অভিনেতা ও অভিনেত্রী রণবীর কাপুর ও আলিয়া ভাট।

বিয়েতে আলিয়া বেছে নেন অরগ্যাঞ্জার শাড়ি। এমনকি রণবীরের কুর্তা-পায়জামার সঙ্গেও ছিল অরগ্যাঞ্জার ওড়না। আইভরি অরগ্যাঞ্জা শাড়িতে সবার নজর কাড়ের আলিয়া। শুধু আলিয়াই নয় বর্তমানে অনেক তারকাই অরগ্যাঞ্জার শাড়ি, কুর্তি, লেহেঙ্গা, সালোয়ার কামিজে নজর কাড়ছেন।

Advertisement

অরগ্যাঞ্জা শাড়ির জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি। গরমের বিভিন্ন উৎসবে এটি হতে পারে প্রথম পছন্দ। কারণ এ শাড়ি খুবই হালকা ও আরামদায়ক। একই সঙ্গে সিম্পলের মধ্যে গর্জিয়াস। এর আরেকটি বড় সুবিধা হলো, সব গড়নের সঙ্গে ভালোভাবে মানিয়ে যায়।

বাজারেও এখন অরগ্যাঞ্জার চাহিদা অনেক। বিভিন্ন ডিজাইনের অরগ্যাঞ্জা শাড়ি পাওয়া যায়। সবচেয়ে বেশি চলছে অ্যাম্ব্রোয়েডারি ও ক্রিস্টাল অরগ্যাঞ্জা ফ্যাব্রিকের শাড়ি।

অ্যাম্ব্রোয়েডারি অরগ্যাঞ্জার শাড়িতে সুতা, পুঁতি, চুমকি, জরি, ক্রিস্টাল ও মুক্তার কাজ বেশ দেখা যাচ্ছে। অবার অনেকে ভারি ফ্যাব্রিকের লেহেঙ্গা ছেড়ে এখন ঝুঁকছেন অরগ্যাঞ্জা লেহেঙ্গার দিকে।

অরগ্যাঞ্জার সালোয়ার কামিজও বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বিশেষ করে কামিজের সঙ্গে অরগ্যাঞ্জার ওড়না এখন ট্রেন্ডি। গরমে আরামদায়ক পোশাকের তালিকায় চাইলে অরগ্যাঞ্জা স্কার্ট রাখতেই পারেন। আবার নানা ডিজাইনের অরগ্যাঞ্জা টপসও এখন পাওয়া যাচ্ছে। যেমন- ক্রপ টপ, শর্ট শার্ট, র্যাপ টপ, পেপলাম ইত্যাদি

Advertisement

এবারের ঈদ ফ্যাশনেও জায়গা করে নিয়েছে অরগ্যাঞ্জার শাড়ি, সালোয়ার কামিজ, কুর্তি, ওড়নাসহ যাবতীয় নানা পোশাক। অনলাইন থেকে শুরু করে বাজারেও এবার দেদারছে বিক্রি হচ্ছে অরগ্যাঞ্জা পোশাক। জানেন কি, প্রায় ৭ রকমের অরগ্যাঞ্জা ফ্যাব্রিক আছে-

>> ক্রিস্টাল অরগ্যাঞ্জা বেশ জনপ্রিয় ও বহুল ব্যবহৃত। এটি নরম ও হালকা ওজনের হয়। আবার ক্রিস্টালের মতোই উজ্জ্বল। সিল্কের পাশাপাশি এখন সিনথেটিক ফাইবার দিয়েও এটি তৈরি হচ্ছে। ব্রাইডাল পোশাকে এ ধরনের অরগ্যাঞ্জা বেশি ব্যবহৃত হয়।

>> মিরর অরগ্যাঞ্জা সাধারণত পলিয়েস্টার দিয়ে তৈরি হয়। অন্যান্য অরগ্যাঞ্জা চেয়ে এই কাপড় বেশি উজ্জ্বল হয়।

>> সাটিনের মতো মসৃণ ও চকচকে হয় সাটিন অরগ্যাঞ্জা। প্রায় সব ধরনের পোশাক তৈরির জন্য উপযুক্ত এই অরগ্যাঞ্জা।

>> সবচেয়ে ইউনিক কোয়ালিটির ফ্যাব্রিকগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ক্রাশড অরগ্যাঞ্জা। এর রিংকেলড বা কুঁচকানো টেক্সচারের জন্য এটি অন্য অরগাঞ্জা থেকে আলাদা।

>> শট নামক বিশেষ ধরনের অরগ্যাঞ্জা বানাতে বিভিন্ন রঙের সিল্কের সুতা ওয়ার্প ও ওয়েফ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এর মাল্টিকালারড ফিনিশ গোধূলি বা নর্দান আলোর মতো রঙিন শেড দেয়।

>> ক্রিস্টাল বা মিরর অরগ্যাঞ্জা ওপর সূচিকর্ম সংযোজন করে তৈরি করা হয় অ্যাম্ব্রোড্রায়েড অরগ্যাঞ্জা। যে কোনো ধরনের লাক্সারিয়াস পোশাক তৈরিতে এ ধরনের অরগ্যাঞ্জা বেশি ব্যবহৃত হয়।

>> প্রিন্টেড অরগ্যাঞ্জারও বেশ চাহিদা আছে দেশে। একদম নতুন ধরনের অরগ্যাঞ্জা এটি। ক্রিস্টাল, মিরর ও ক্রাশড অরগ্যাঞ্জার ওপর ডিজিটাল প্রিন্টের মাধ্যমে এটি তৈরি হয়।

বেশিরভাগ সিল্ক ফ্যাব্রিকের মতো অরগ্যাঞ্জার উদ্ভব ঘটে চীনে। দেশটি এখনো এর সবচেয়ে বড় উৎপাদক ও রপ্তানিকারক। ইয়াংজি নদীর তীরে বিশেষত ঝেজিয়াং প্রদেশে বেশ কয়েকটি অরগ্যাঞ্জা বুনন মিল আছে।

ভারতও অরগ্যাঞ্জার রপ্তানিকারক দেশ। বেঙ্গালুরুতে এক বিশেষ ধরনের মজবুত বুননের অরগ্যাঞ্জা উৎপাদিত হয়। এছাড়া ইতালি ও ফ্রান্সও বেশ উৎকৃষ্ট মানের অরগাঞ্জা উৎপাদন করে।

জেএমএস/জিকেএস