বাংলা নববর্ষের দিনে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রহমতের বৃষ্টি বর্ষিত হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ। রাজধানীর পথ-ঘাট যেন নতুন জীবন ফিরে পেয়েছে। পবিত্র মাহে রমজানের মাগফিরাতের দশকের দ্বিতীয় রোজার রাতে হঠাৎ এই বৃষ্টি রাজধানীবাসীকে স্বস্তির পরশ বুলিয়ে দিলো। অপর দিকে রোজাদারের ইবাদতে আসবে নতুন উদ্যম।
Advertisement
পবিত্র মাহে রমজানের দিনগুলো দ্রুতই কেটে যাচ্ছে। আজ আমরা মাগফিরাতের দশকের তৃতীয় দিন অতিবাহিত করছি। গতকাল রাতে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হওয়ার ফলে রোজাদারের হৃদয়ে জেগেছে নতুন আনন্দ, তারা আরো আরামের সাথে রোজাগুলো রাখবেন এবং আরো বেশি নফল ইবাদতে রত হবেন। আসলে আল্লাহপাকের ইচ্ছে হলে তিনি তার ধরণিকে মৃত থেকে জীবন্ত করেন এবং বায়ুকে করেন নির্মল। বৃষ্টির প্রতিটি ফোঁটা বর্ষিত হয় আল্লাহ তাআলার রহমতের ধারা হয়ে। বৃষ্টি হলে প্রভুকে বেশি বেশি স্মরণের শিক্ষাও দিয়েছেন বিশ্বনবি (সা.)।
বিশ্বনবির (সা.) জীবন থেকে জানতে পারি, তিনি বৃষ্টিকে খুব ভালোভাবেই উপভোগ করতেন। প্রখ্যাত সাহাবি হজরত আনাস (রা.) বলেন, ‘আমরা মহানবীর (সা.) সঙ্গে থাকাকালে একবার বৃষ্টি নামল। রাসুলুল্লাহ (সা.) তখন তার কাপড় প্রসারিত করলেন যাতে পানি তাকে স্পর্শ করতে পারে। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি কেন এমন করলেন? তিনি বললেন, কারণ বৃষ্টি তার মহান রবের কাছ থেকে এই মাত্রই এসেছে।’ (মুসলিম) হাদিসে এসেছে হজরত মা আয়েশা (রা.) বলেন, মহানবি (সা.) বৃষ্টি নামতে দেখলে বলতেন, ‘আল্লাহুম্মা সাইয়িবান নাফিয়া’ অর্থাৎ হে আল্লাহ, উপকারী বৃষ্টি আমাদের ওপর বর্ষণ করুন।’
আবু দাউদের বর্ণনায় রয়েছে, মহানবি (সা.) বলেছেন, বৃষ্টির সময় করা দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না।’ অপর দিকে যারা পাপাচারে লিপ্ত এবং সীমালঙ্ঘন করে তাদের আল্লাহপাক পানি বর্ষণের মাধ্যমে শাস্তিও দিয়ে থাকেন। যেভাবে পবিত্র কুরআনে উল্লেখ রয়েছে, ‘আমি তাদের ওপর পাথরের প্রচণ্ড বৃষ্টিবর্ষণ করলাম। অতএব চেয়ে দেখ, অপরাধীদের কী পরিণাম হয়ে থাকে।’ (সুরা আরাফ: আয়াত ৮৪)। পাপাচারিদের ওপর পাথরকুচি ও শীলাখণ্ডের বৃষ্টিবর্ষণ বিভিন্ন সময় হয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া যায়।
Advertisement
কুরআনে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘আর আমি তাদের ওপর এক বৃষ্টিবর্ষণ করলাম। আর যাদের সতর্ক করা হয় তাদের ওপর বর্ষিত বৃষ্টি অতি ক্ষতিকর হয়ে থাকে।’ (সুরা শোআরা: আয়াত ১৭৩)।তাই আমাদের কর্মের দুর্বলতার জন্য যেন আল্লাহপাকের বৃষ্টির পানি ক্ষতির কারণ না হয় সে জন্য সর্বদা তার দরবারে দোয়ারত থাকতে হবে। যেহেতু নির্জীব পৃথিবীকে তিনি সজীব করেন আবার তিনিই মরুভূমিতেও পরিণত করতে পারেন।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবন থেকে জানতে পারি, তিনি বৃষ্টিকে খুব ভালোভাবেই উপভোগ করতেন। প্রখ্যাত সাহাবি হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘আমরা মহানবির (সা.) সঙ্গে থাকাকালে একবার বৃষ্টি নামল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন তার কাপড় প্রসারিত করলেন যাতে পানি তাকে স্পর্শ করতে পারে। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রসুল! আপনি কেন এমন করলেন? তিনি বললেন, কারণ বৃষ্টি তার মহান রবের কাছ থেকে এই মাত্রই এসেছে।’ (মুসলিম প্রকৃত মুমিন প্রতিনিয়ত আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনায় রত থাকেন আর বিশেষ করে রমজান মাসে এর মাত্রা আরো বেড়ে যায়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
‘আল্লাহতায়ালা (রমজান মাসের) প্রতি রাত ও দিনে অনেক মানুষকে জাহান্নাম থেকে মুক্তির ঘোষণা করেন এবং প্রতিটি রাত ও দিনের বেলায় প্রত্যেক মুসলমানের দোয়া ‘মোনাজাত’ কবুল হয়ে থাকে।’ (মুসনাদে আহামদ)আমরা মহান আল্লাহর দরবারে দোয়া করব, হে আল্লাহ! পবিত্র মাহে রমজান ও তোমার রহমতের বৃষ্টির মাধ্যমে আমাদের দেশ থেকে সব বালা-মুসিবত ধুয়ে মুছে পরিস্কার করে দাও, বিশুদ্ধ করে দাও বাংলার আকাশ-বাতাস, গোটা বিশ্বকে প্রশান্তিময় করে তুলো আর আমাদের ক্ষমা কর, আমিন।
এইচআর/জিকেএস
Advertisement