তথ্যপ্রযুক্তি

হাতের ইশারায় বিল মেটাতে পারবেন

প্রযুক্তির উন্নতি আমাদের জীবনকে করেছে সহজ। সে কথার বারবার প্রমাণ পাচ্ছেন নিশ্চয়ই। ডেবিট ক্রেডিট কার্ডের কল্যাণে কাগজের টাকা এখন আর বহন করতে হয় না। ঝামেলা নেই হারিয়ে যাওয়ার। আপনি কোথাও শপিং করলেন কিংবা খাবার খেলেন, সব জায়গায় পাবেন কার্ডে পেমেন্ট করার সুবিধা।

Advertisement

তবে এখন আপনি ডেবিট কিংবা ক্রেডিট কার্ড ছাড়াই পেমেন্ট করতে পারবেন। কেনাকাটা করে বিল মেটানোর জন্য আর ক্রেডিট অথবা ডেবিট কার্ড লাগবে না। শুধু হাতের ইশারাতেই মেটানো যাবে যে কোনো বিল। অনেকেই গুজব ভেবে উড়িয়ে দিতে পারেন।

তবে এই অসম্ভবকেই সম্ভব করেছে ব্রিটেন এবং পোল্যান্ডের একটি সংস্থা! ওয়ালেটমোর নামে ব্রিটেন ও পোল্যান্ডের ওই সংস্থাটি এক ধরনের চিপ তৈরি করছে। সেই চিপ নিজের হাতে ইমপ্ল্যান্ট করে বা বসিয়েই বিল মেটানো সম্ভব হবে। এর জন্য কোনো ব্যাংকিং কার্ডের প্রয়োজন হবে না।

শুধু হাতটিকে কনট্যাক্টলেস সোয়াইপ মেশিনের কাছে নিয়ে গেলেই কাজ হয়ে যাবে। সংস্থাটির দাবি, তারাই প্রথম কোম্পানি, যারা এই ধরনের চিপ প্রথম বাজারে আনতে চলেছে। এরই মধ্যে এই আধুনিক প্রযুক্তির নানা ছবি ও ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে। এমনকি এটা হাতের চামড়ার নিচে কীভাবে বসানো হবে, সেই বিষয়টাও ছবি আর ভিডিওর মাধ্যমে স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

তারা বলছে, যারা এই প্রযুক্তি ব্যবহারে আগ্রহী থাকবেন, তাদের হাতে চিপ বসানোর জন্য প্রথমে অ্যানাস্থেশিয়া করা হবে। তার পরেই ব্যবহারকারীর হাতে চিপটি বসানো হবে। কিন্তু এই পদ্ধতিতে মাইক্রোচিপ হাতে বসানোর ক্ষেত্রে ব্যথা ততটা হবে না বলে আশ্বস্ত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। কেউ চিমটি কাটলে যেমন অনুভূতি হয়, ঠিক তেমনই ব্যথা হবে চিপটি হাতের চামড়ার নিচে ইমপ্ল্যান্ট করার সময়।

ওয়ালেটমোর সংস্থার সিইও ওয়জটেক পাপ্রোতা বলেন, রিও-র সৈকতে পানীয়র বিল মেটানো থেকে শুরু করে নিউ ইয়র্কে এক কাপ কফির বিল মেটানো, কিংবা প্যারিসের কোনো সেলুনে চুল কাটার পরে অথবা যে কোনো স্টোরে বিল মেটাতেও এই চিপ ব্যবহার করা যাবে।

সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই চিপটির ওজন হবে এক গ্রামেরও কম। আর আকারে এটি একটা চালের থেকে সামান্য বড়। এই চিপের মধ্যে থাকে একটা ছোট্ট মাইক্রোচিপ এবং একটি অ্যান্টেনা। আর এই অ্যান্টেনাটি বায়োপলিমার দ্বারা আবৃত করা থাকে।

ওয়জটেক পাপ্রোতার দাবি, এই চিপ সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং এটা নিয়ন্ত্রকদের থেকে ছাড়পত্রও পেয়েছে। চিপে ব্যবহার করা হয় নিয়ার-ফিল্ড কমিউনিকেশন বা এনএফসি। আর এই প্রযুক্তিই বছরের পর বছর ধরে ব্যবহার করা হচ্ছে স্মার্টফোনেও। এরই মধ্যে পাঁচশোরও বেশি মাইক্রোচিপ বিক্রি করেছে ওয়ালেটমোর।

Advertisement

আধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি ওয়ালেটমোরের চিপের প্রশংসা করছেন বহু মানুষ। এই উদ্যোগ ধীরে ধীরে পছন্দও করছে বিশ্ববাসী। প্যাট্রিক পাওমেন নামে নেদারল্যান্ডের এক নিরাপত্তারক্ষী নিজের হাতে এমন পেমেন্ট চিপ বসিয়েছেন সেই ২০১৯ সালে। তিনি সংবাদমাধ্যমের কাছে জানান যে, কোথাও বিল মেটানোর সময় তিনি চিপ ব্যবহার করলে হিসাবরক্ষকরা নাকি ভড়কে যান কিছুটা।

সূত্র: এনডিটিভি গ্যাজেট

কেএসকে/জিকেএস