আইন-আদালত

খালাস চেয়ে সাঈদীর রিভিউ

মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর খালাস চেয়ে রিভিউ করা হয়েছে। রোববার বেলা ১১টায় সুপ্রিমকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিভিউ করা হয়েছে বলে সাঈদীর ছেলে মাসুদ বিন সাঈদী নিশ্চিত করেছেন। মাসুদ সাঈদী বলেন, রিভিউ আবেদনে অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড জয়নুল আবেদীন তুহিন, ৯০ পৃষ্ঠার আবেদনে ১৬ টি গ্রাউন্ডে খালাস চাওয়া হয়েছে। সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন দুপুর ১টায় আনুষ্ঠানিকভাবে বিস্তারিত জানাবেন বলে জানান তিনি।তার আগে গত ১২ জানুয়ারি মঙ্গলবার সাঈদীর অামৃত্যুকারাদণ্ড থেকে বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড করার জন্য সুপ্রিমকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সাঈদীর আপিলের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ পুনর্বিবেচনার আবেদন করা হয়। আপিলের রায় পুনর্বিবেচনায় রিভিউতে মূল আবেদনে ৩০ পৃষ্ঠার ৫টি গ্রাউন্ডে অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড আইনজীবী মাহবুবুর রহমান।যদিও ১২ জানুয়ারি সাঈদীর আইনজীবী রিভিউ করবে কিনা জানাননি। ওইদিন আইনজীবী অ্যাডভোকেট এসএম শাহজাহান বলেছিল, ‘আমরা রিভিউ করতে চাই না, তবে রাষ্ট্রপক্ষ রিভিউ করলে এরপর আমরাও রিভিউ আবেদন করবো।’ এর আগে গত ৩১ ডিসেম্বর সাঈদীর রায় প্রদানকারী পাঁচজন বিচারপতির স্বাক্ষরের পর সুপ্রিমকোর্টের ওয়েবসাইটে ৬১৪ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, আপিল বিভাগের রায় প্রকাশের পর ১৫ দিনের মধ্যে রিভিউ আবেদন করা যাবে। সে হিসেবে আগামী ১৫  জানুয়ারি সাঈদীর রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ করার শেষ দিন। গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ দেন। অন্য চার বিচারপতি হলেন- বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী।মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। ট্রাইব্যুনালে সাঈদীর বিরুদ্ধে গঠিত ২০টি অভিযোগের মধ্যে আটটি প্রমাণিত হয়।এই মামলায় আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষের করা দুটি আপিলের ওপর শুনানি শেষে গত ১৬ এপ্রিল আপিল বিভাগ রায় অপেক্ষমাণ রাখেন। এর ঠিক পাঁচ মাসের মাথায় রায় ঘোষণা করা হয়। আপিল বিভাগ থেকে এ পর্যন্ত পাঁচটি রায় দেয়া হয়েছে, তার মধ্যে কেবল সাঈদীর ক্ষেত্রেই রিভিউ বাকি রয়েছে।  বাকি চার মামলায় জামায়াতে ইসলামীর দুই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লা ও মোহাম্মদ কামারুজ্জামা, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রিভিউ খারিজ হয়ে যাওয়ায় তাদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। সাঈদীর বিচার শুরু হয়েছিল ২০১১ সালের ৩ অক্টোবর। হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, নির্যাতন ও ধর্মান্তরে বাধ্য করার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল।এফএইচ/জেডএইচ/এমএস

Advertisement