দেশজুড়ে

সিলেটে গাছের ছাল কেটে মার্কিংয়ে ক্ষতির আশঙ্কা

সনাতনি পদ্ধতিতে সিলেটের সামাজিক বনায়নের বৃক্ষগুলোর শরীর কেটে (ব্লিচিং) লাল রঙের তুলিতে বনবিভাগের ‘মার্কিং’ নম্বর দেয়া হয়েছে। এতে অনেক গাছ আগা শুকিয়ে আস্তে আস্তে মারা পড়ছে। বহু গাছের বৃদ্ধিতে দেখা দিচ্ছে ত্রুটি।সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কের দু’পাশে ছায়া সুনিবিড় বনায়ন। এই সড়কে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৫ হাজার গাছ লাগিয়েছেন সামাজিক বনায়নকারীরা। সেই সড়ক বনায়নে মান্দাতার আমলের মার্কিয়ে বৃক্ষর এই ক্ষতির চিত্র ওঠে এসেছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, একই অবস্থা সিলেটের সব সড়ক বনায়নের। গাছের শরীর কেটে ছাল তুলে নম্বর দেয়া হচ্ছে। বনবিভাগ সামাজিক বনায়নের এই বৃক্ষগুলোর হিসেব রাখতে সেকেলে এই ‘ব্লিচিং মার্কিং’ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। সিলেটের তেলিবাজার-সুনামগঞ্জ বাইপাসেও এই নিষ্ঠুর পদ্ধতির কারণে বনায়নের ফাঁকে ফাঁকে বৃক্ষ মরতে দেখা গেছে। কোনো কোনো গাছের ডাল ভেতরে ভেতরে শুকিয়ে আগা থেকে নিচের দিকে আসছে। সিলেট-তামাবিল সড়কেও এই চিত্র পাওয়া গেছে। সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কেও গাছ কেটে গণনা করা হচ্ছে। বনবিভাগ সূত্র জানায়, এ পদ্ধতিতে গাছ গণনা করা হয়। রোপণের ১০ বছর পর পর সড়ক বনায়নের গাছ কাটা হয়। আবার নতুন করে ফাঁকে ফাঁকে চারা গাছ লাগানো হয়। মূলত, গাছের হিসাব রাখার জন্য এ পদ্ধতি দীর্ঘ বছর যাবৎ প্রয়োগ করা হচ্ছে। সিলেট শহরের আশপাশের সড়ক বনায়নে অন্তত লক্ষাধিক গাছ আছে। সবই এই পদ্ধতিতে নম্বর ফেলা হচ্ছে।সূত্র আরও জানায়, সিলেটে সড়ক বনায়নে সফলতা পাওয়া গেছে। যে কারণে অনেক নতুন নতুন সড়কে ওই সব এলাকাবাসীও লিজ গ্রহীতা হিসেবে বনায়ন করার উদ্যোগ নিচ্ছেন। এতে বন বিভাগ থেকে অনুমোদন নিয়ে গাছ লাগানো হচ্ছে। বাংলাদেশ পরিবশে আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সভাপতি আবদুল করিম কিম বলেন, ‘এই পদ্ধতিটি অমানবিক। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পুরনো পদ্ধতি থেকে বের হয়ে বিকল্প একটি পরিবর্তন আনা উচিত।’সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মনিরুল ইসলামবেলেন,‘ গাছের একটি হিসেব রাখার জন্যই বাঁকল কেটে ‘মার্কিং’করা হয়। বনবিভাগ অনেক বছর ধরে ওই পদ্ধতিই ব্যবহার করে আসছে।’এ প্রসঙ্গে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদালয়ের বন ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড.নারায়ণ সাহা জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রথমত, একেকটি সড়কে গাছের পরিমাণ যদি ৫-১০ হাজার হয়, তাহলে ওগুলো কেটে গণনার দরকার নেই। ভিন্ন উপায়ে ওগুলো অফিস ও টহল কর্মকর্তার সাহায্যে হিসেব রাখা যায়। আর এই পুরনো পদ্ধতির পরিবর্তন দরকার। এখন উন্নত দেশে কিছু প্রযুক্তির ব্যবহারে গাছ হিসেব রাখা হচ্ছে। বনবিভাগকে এসব লজিস্টিক সাপোর্ট দিলে তারা আধুনিক হবে। গাছের জীবনেও গতি পাবে।’ছামির মাহমুদ/এসএস/এমএস

Advertisement