বিশেষ প্রতিবেদন

সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে সফলতা দাবি বিএনপির, বাকি কর্মসূচি ঈদের পর

সরকারের পাশাপাশি বছরজুড়ে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করেছে দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি। সেসব কর্মসূচি সর্বজনীন রূপ পেয়েছে বলে দাবি দলটির নেতাকর্মীদের। বিষয়টি নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত অধিকাংশ নেতা। তারা মনে করেন, দেশ-বিদেশে দলের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটি বেশ সফলভাবে সব অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেছে। যেগুলো হয়ে উঠেছে সর্বসাধারণের অনুষ্ঠান। আর যেসব কর্মসূচি নির্ধারিত ছিল অথচ বিভিন্ন কারণে অনুষ্ঠিত হয়নি, সেসব কর্মসূচি ঈদুল ফিতরের পর সম্পন্ন করা হবে।

Advertisement

২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বছরব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি। গঠন করে সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটি। বিএনপির জাতীয় কমিটির অধীনে বিভাগীয় বিষয়ভিত্তিক ও প্রবাসী কমিটি গঠন করা হয়। এর মধ্যে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, এশিয়া অঞ্চল, মধ্যপ্রাচ্য, অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রিয়া, রাশিয়া, ফ্রান্স, জার্মান, ইতালি, ইউক্রেন, আফ্রিকা, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, ডেনমার্ক, বেলজিয়াম, গ্রিস, নেদারল্যান্ডসহ ২০টি প্রবাস কমিটি বছরজুড়ে আয়োজন করেছে বিভিন্ন অনুষ্ঠান।

দলীয় সূত্র জানায়, করোনা বিধি-নিষেধের কারণে কিছু কর্মসূচি এখনো বাস্তবায়ন করতে পারেনি বিএনপি। বাকি এসব কর্মসূচি ঈদুল ফিতরের পর সম্পন্ন করা হবে। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্প্রতি জানান বিষয়টি।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন প্রসঙ্গে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ রফিক শিকদার জাগো নিউজকে বলেন, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটির উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধের বইমেলা, আলোকচিত্র ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি ছিল চোখে পড়ার মতো। নয়াপল্টন থেকে জাতীয় প্রেসক্লাব স্বাধীনতার র্যালি ছিল স্মরণকালের সেরা আয়োজন।’

Advertisement

‘একটি সুখী, নিরাপদ ও সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার হোক সবার মাঝে, এটাই বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা।’

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটির মিডিয়া উপ-কমিটির সদস্য শায়রুল কবির খান জাগো নিউজকে বলেন, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ২৬ মার্চ ২০২১ সালে আমরা পার করেছি। কিন্তু স্বাধীনতার মূল আকাঙ্ক্ষা পূরণে সক্ষম হতে পারিনি। বিএনপি গঠিত স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটিসহ বিভাগীয়-বিষয়ভিত্তিক ও প্রবাসী কমিটির নেওয়া প্রতিটি কর্মসূচি সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বিশেষ করে পহেলা মার্চ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় স্বাধীনতা আন্দোলন-সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে ঐতিহাসিক নেতাদের ধারাবাহিক মূল্যায়ন করেছেন। জাতীয় কমিটি প্রণীত ২, ৩, ৭ ও ৯ মার্চ দিবস উপলক্ষ করে পালনের মধ্যে দিয়ে ঐতিহাসিক মর্যাদা পেয়েছে।’

সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন নিয়ে গঠিত বিএনপির জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আব্দুস সালাম বলেন, ‘আমাদের র্যালি সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল। উন্মুক্ত প্রোগ্রামগুলোও ছিল আকর্ষণীয়। এছাড়া চট্টগ্রামের প্রোগ্রাম, সিলেটের প্রোগ্রাম, আমাদের বইমেলা, ডাক্তারদের কর্মসূচি- মোটামুটি সব কর্মসূচিই ভালো হয়েছে।’

Advertisement

‘আমাদের সব কর্মসূচি মানুষ গ্রহণ করেছে। প্রথমে যখন ২ মার্চ পতাকা উত্তোলন দিবস পালন করেছি, তখন মানুষ বলেছে বিএনপি সত্য ইতিহাস মানুষের কাছে তুলে ধরেছে। ৭ মার্চের যে সঠিক বক্তব্য সেটাও আমরা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে বিএনপির সব কর্মসূচি মানুষ গ্রহণ করেছে। বিএনপির কর্মসূচি যদি মানুষ গ্রহণ না করতো তাহলে যেসব কর্মসূচি পালন করা হয়েছে সেসব কর্মসূচিতে এত লোক কীভাবে এলো?’

সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন নিয়ে বিএনপির জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, আমরা যখন সুবর্ণজয়ন্তীর কর্মসূচি শুরু করি তখনই আমাদের ঘোষণা ছিল মুক্তিযুদ্ধের সত্যিকারের ইতিহাস, বাংলাদেশের ঘটনাবলীর সত্যিকারের ইতিহাস মানুষের কাছে তুলে ধরা। আমরা চেষ্টা করেছি, যদিও করোনার কারণে আমাদের অনেক কর্মসূচি করতে পারিনি। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং বাংলাদেশের ৫০ বছরের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সমাজ ও অর্থনৈতিক বিষয়গুলো, কার ভূমিকা কতটুকু ছিল, কোন সরকার কতটুকু করেছে- এসব বিষয়ে আমরা সত্যিকারের তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। এখন বিচার-বিবেচনা করার দায়িত্ব জনগণ ও সাংবাদিকদের।

সুবর্ণজয়ন্তীর কর্মসূচির মধ্যে কোন বিষয়গুলো বেশি আকর্ষণীয় এবং মানুষ গ্রহণ করেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেহেতু আমরা সত্যিকারের ঘটনাগুলো উপস্থাপন করেছি, আমার ধারণা জনগণ সব কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। যেহেতু তারা জানে এগুলো সবই সত্যিকারের ইতিহাস। ইতিহাস বিকৃত ও বিভ্রান্ত করার চেষ্টা বর্তমানে চলছে, কিন্তু আমরা যে সত্য ইতিহাস তুলে ধরার চেষ্টা করেছি আওয়ামী লীগ এটার বিপক্ষে কিছু বলতে পারেনি। যেহেতু আমরা সত্য ঘটনাগুলো উপস্থাপন করেছি আমার ধারণা জনগণ সব কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। ইতিবাচকভাবে দেখেছে।

কেএইচ/এএ/এএসএম