পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন ইমরান খান। গত শনিবার (৯ এপ্রিল) দিনভর নাটকীয়তার পর মধ্যরাতের ভোটে বিরোধীদের কাছে হেরে যান তিনি। তবে বিদায় নিশ্চিত জেনে ভোটের আগেই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ত্যাগ করেন পিটিআই প্রধান। কিন্তু চেয়ার ছাড়ার আগে সবশেষ কী করেছিলেন তিনি?
Advertisement
ইমরান খানের সাবেক বিশেষ সহযোগী ও পিটিআই নেতা ড. শাহবাজ গিল রোববার এক টুইটে জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রিত্ব ছাড়ার আগে সবশেষ কোন কাজটা করেছিলেন তাদের দলপতি। তিনি জানান, কার্যালয় ছাড়ার আগে মুখ্য সচিব আজম খানের সংস্থাপন বিভাগে যোগদানের অনুরোধ অনুমোদন করেন ইমরান খান।
সদ্য ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী এসময় আজমের পেশাদারত্বের প্রশংসা করেন এবং বলেন, তিনি অত্যন্ত সততা ও পরিশ্রমের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। আজম খানের অনুরোধ অনুমোদনের পরপরই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যান ইমরান খান।
তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতা ফয়সাল জাভেদ খান এক টুইট বার্তায় জানান, অনাস্থা ভোটে হেরে যাওয়ার কয়েক মিনিট আগে সরকারি অফিস থেকে বিদায় নেন ইমরান।
Advertisement
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে স্বেচ্ছায় বেরিয়ে যান ইমরান খান। কারণ পাকিস্তানের স্পিকার আসাদ কায়সার পদত্যাগের পর তিনি ধরে নিয়েছিলেন, অনাস্থা প্রস্তাবের ভোটের ফলাফল তার অনুকূলে আসবে না। তাকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ছাড়তে হবে।
এর আগে, কয়েক দফা মুলতবির পর স্থানীয় সময় শনিবার রাত ১১টা ৫০ মিনিটে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হয়। এতে ইমরানের বিরুদ্ধে ভোট পড়ে ১৭৪টি। প্রস্তাব পাসের জন্য দরকার ছিল ১৭২ ভোট। ভোটাভুটি শেষে প্যানেল স্পিকার পাকিস্তান মুসলিম লিগ (নওয়াজ) নেতা আয়াজ সাদিক এ ফলাফল ঘোষণা করেন।
পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল মূলত ২০২৩ সালের আগস্টে। কিন্তু তার আগেই অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতা ছাড়তে হয়েছে ইমরান খানকে। অতীতের ধারা অনুসরণ করে পিটিআই নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের পতনও হয়েছে মেয়াদ পূর্ণ করার আগেই।
ইমরানের উত্তরসূরী হিসেবে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন পিটিআইয়ের ভাইস-চেয়ারম্যান শাহ মুহাম্মদ কোরেশি ও পিএমএল-এন নেতা শাহবাজ শরিফ। কিন্তু সোমবার পার্লামেন্টে কোরেশি ঘোষণা দেন, তাদের দলের সবাই একসঙ্গে পদত্যাগ করবেন। এর পরপরই ওয়াক আউট করেন তারা।
Advertisement
এরপর বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন পিএমএল-এন প্রেসিডেন্ট শাহবাজ শরিফ। দেশটির ১৭৪ সদস্য তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করতে ভোট দিয়েছেন।
সূত্র: দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন, এনডিটিভি
কেএএ/এএসএম