ডাকঘরকে প্রচলিত পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে আসতেই হবে। ডিজিটাল যুগের অপার সম্ভাবনার সুযোগ কাজে লাগিয়ে ডাকঘরকে উপযুক্ত প্রযুক্তি প্রয়োগের বিকল্প নেই। দেশের একটি শ্রেষ্ঠ সেবা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ডাকঘরকে গড়ে তুলতে হবে। এজন্য সরকার সব সহায়তা করতে প্রস্তুত।
Advertisement
সোমবার (১১ এপ্রিল) ঢাকায় ডাকভবন মিলনায়তনে ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস নগদ বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ডাকঘরকে ডিজিটাইজেশনে সম্প্রতি প্রণীত ডিজিটাল সার্ভিস ডিজাইন ল্যাবের পরামর্শগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে ডাকসেবার আমূল পরিবর্তনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, দেশব্যাপী ডাক বিভাগের বিস্তীর্ণ অবকাঠামো ও নেটওয়ার্ক দেশের বড় সম্পদ। এগুলো কাজে লাগাতে না পারলে আমরা কেউই দায় এড়াতে পারবো না। মানি অর্ডারের জায়গায় নগদ যেমন কাজ করছে তেমনি ডাকঘরকে ডিজিটাল যুগের উপযুক্ত করতে কোন কোন জায়গায় কি কি কাজ করতে হবে তা নির্ধারিত হয়েছে। ডাকঘরের বিদ্যমান জনবলের সবাই ডিজিটালে দক্ষ নয়। ডিজিটাল ডাকঘরের জন্য তাদের ন্যূনতম ডিজিটাল দক্ষতা অর্জন করতে হবে। ডিজিটাল দক্ষতা না থাকলে সামনের দিনে সবাইকে অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়তে হবে বলে উল্লেখ করেন ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের এ অগ্রনায়ক।
Advertisement
কুরিয়ার সার্ভিসের সঙ্গে ডাকঘরের তুলনামূলক পার্থক্য তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, কুরিয়ার সার্ভিসের পণ্য পরিবহনের সক্ষমতা আছে কিন্তু সারা দেশে ঘরে ঘরে পণ্য পৌঁছে দেওয়ার সক্ষমতা আছে কেবল ডাকঘরের। নগদের প্রযুক্তিগত দক্ষতা বিশেষ করে কেওয়াইসি পদ্ধতি ডিজিটাল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসের ক্ষেত্রে দেশের প্রথম ও সফল একটি পদ্ধতি। প্রতিটি ডিজাটাল ডাকঘরের উদ্যোক্তাদের নগদের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে পারলে নগদের প্রবৃদ্ধি আরও বৃদ্ধি পাবে।
নতুন প্রযুক্তি পৃথিবী বদলে দিয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ভয়েস কলের যুগ শেষ হয়ে আসছে। সামনের দিনে পৃথিবী পুরোপুরি ডাটা কলের যুগে প্রবেশ করবে।
প্রাচীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে অস্তিত্বের সংগ্রামে টিকে থাকার জন্য ডাকঘরের প্রযুক্তিকে গ্রহণ করা ছাড়া কোনো পথ নেই উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, প্রযুক্তি গ্রহণ না করলে সভ্যতার জন্য অপ্রয়োজনীয় হয়ে পরতে হবে। সেটা হতে দেওয়া যায় না।
ডিজিটাল ডাকঘর প্রতিষ্ঠায় নেওয়া বিভিন্ন কর্মসূচি তুলে ধরে তিনি বলেন, ডাকঘর আর জরাজীর্ণ ডাকঘর হিসেবে পরিচিত থাকবে না। ডাকঘর হবে ডিজিটাল। সেই লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে ডাকঘরকে ডিজিটাল ডাকঘরে রূপান্তরের কাজ আমরা শুরু করেছি।
Advertisement
তিনি বলেন, সামনের দিনে শোরুমভিত্তিক বাণিজ্য বলে কিছু থাকবে না। ডিজিটাল বাণিজ্যই হবে মূল বাণিজ্য। ডিজিটাল কমার্সের জন্য পণ্য পরিবহন ও বিতরণে ডাকঘরই হচ্ছে জনগণের সবচেয়ে বড় আস্থার জায়গা। ডাকঘরকে সেভাবেই গড়ে তোলা হবে বলে মন্ত্রী দৃঢ় অঙ্গিকার ব্যক্ত করেন।
এসময় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. খলিলুর রহমান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন। ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সিরাজ উদ্দিন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। নগদের নির্বাহী পরিচালক মো. সাফায়েত আলম কর্মশালায় নগদ সম্পর্কিত উপস্থাপনা পেশ করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস নগদ প্রান্তিক পর্যায়ে আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে আরও জোরালো ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ডাক অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা কর্মশালার মাধ্যমে নগদ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেলেন।
ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানান, এমএফএস সার্ভিসচার্জ যৌক্তিক মাত্রায় নির্ধারণের লক্ষ্যে সরকারের একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি কাজ করছে।
এইচএস/একেআর/জেআইএম