তিনি দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার। কখনো কখনো নির্ভরতার প্রতীক। ব্যাট হাতে তার পারফরম্যান্স দলকে অনেকদুর এগিয়ে নিয়ে যায়। কিন্তু মুশফিকুর রহীমকে কেন যেন একটি বিষয় সব সময়ই থমকে দাঁড়াতে বাধ্য করে। যেন মুশফিককে এগুতেই দিতে চায় না। বিষয়টা হলো তার ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন শট- রিভার্স সুইপ।’
Advertisement
মুশফিক এই শটটা খেলতে ভালোবাসেন হয়তো। তার খুব পছন্দের শট। কিন্তু এই একটি শট খেলতে গিয়ে দলকে বিপদে ফেলে তিনি যে কতবার আউট হয়েছেন, তার কোনো ইয়ত্তা নেই। বহুবার এ নিয়ে সমালোচনার শিকার হয়েছেন তিনি। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও বারবার এই দায়িত্বজ্ঞানহীন শট খেলে সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন।
এবারও ঠিক একই কাজ করলেন মুশফিক। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে পোর্ট এলিজাবেথ টেস্টে যখন দল একেবারে খাদের কিনারায়, চরম বিপদে, তখন তার মত অভিজ্ঞ ব্যাটারের কাছ থেকে আরও ধৈয্য, আরও সংযম আশা করেছিল সবাই। সবই ঠিকঠাক ছিল, কিন্তু মুশফিকুর রহীম কি না এমন কাণ্ডটি করে বসবেন, তা কে ভাবতে পেরেছিল?
পোর্ট এলিজাবেথ টেস্টের তৃতীয় দিন লাঞ্চের ঠিক আগে সিমন হার্মারের বলে চিরচেনা সেই ‘রিভার্স সুইপ’ খেলতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসলেন মুশফিক। তার এই শর্টের কারণেই প্রথম ইনিংসের প্রতিরোধ ভেঙে যায় সঙ্গে সঙ্গে।
Advertisement
স্বাভাবিকভাবেই মুশফিকের এই দায়িত্বজ্ঞানহীন শট নিয়ে আবারও সমালোচনার ঝড় উঠেছে। টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন অভিজ্ঞ ব্যাটারের রিভার্স সুইপ মেনেই নিতেই পারছেন না।
খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে আসা টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজনের কাছে জানতে চাওয়া হল মুশফিকের রিভার্স সুইপের সম্পর্কে। জবাবে সুজন বলেন, 'মুশফিকের এই আউটটা ওই সময় অবশ্যই প্রত্যাশিত ছিল না। লাঞ্চ ব্রেকের আর ৪ মিনিট বাকি ছিল। তখন আর ৪৩ রান করতে পারলে ফলোঅন এড়াতে পারতাম। ওরা ফলোঅন দেয়নি, কিন্তু সত্যি বলতে আত্মসম্মানের একটা ব্যাপার ছিল।'
বাংলাদেশের ব্যাটাররা যখন একের পর এক উইকেট বিলিয়ে যাচ্ছিল, তখন ১৩৪ বল খেলে হাফসেঞ্চুরি ছুঁয়েছিলেন মুশফিক। ১৯২ মিনিট লড়াই করে হাফ সেঞ্চুরি পাওয়ার পর প্রশংসা পাচ্ছিলেন ধারাভাষ্যকারদের কাছ থেকেও। মার্ক নিকোলাস প্রশংসা করতে করতে বলেন, ‘মুশফিক দারুণ পেশাদার।'
অথচ তার ঠিক এক বল পর মুশফিকের আত্মঘাতি শট দেখে হতভম্ব নিকোলাস বললেন, 'সে কি এখানে মজা করছে? কী হচ্ছে?'
Advertisement
এ পরিস্থিতিতে মুশফিকের রিভার্স সুইপ যে মেনে নেওয়ার মত নয়, তা স্বীকার করেন সুজন। তিনি বলেন, 'সে তো জানতো সে’ই সর্বশেষ স্পেশালিস্ট ব্যাটার। এটা খুবই অপ্রত্যাশিত। ম্যাচের এমন পরিস্থিতিতে এমন শট। মুশফিক অনেক অভিজ্ঞ খেলোয়াড়, ওর কাছ থেকে আমরা অবশ্যই সেটা আশা করি না। এটার ব্যাখ্যা আমিও বলতে পারব না। ওই পরিস্থিতিতে ও ব্যাটিং করেছে, সেই জানে কেন করেছে, ওই বলতে পারবে। কিছুটা দুর্ভাগ্যও।'
সুজন আরও বলেন, ‘আমরা কেউই আশা করিনি ওই পরিস্থিতিতে মুশফিক এমন শট খেলবে। ওয়ানডে টি-টোয়েন্টি রানের খেলা, রান করার তাড়া থাকে, সেখানে এমন শট মেনে নেওয়া যায়; কিন্তু কেন টেস্টে? যখন আমি জানি আমাকে উইকেটে টিকে থাকতে হবে। ঐ শট অবশ্যই প্রত্যাশিত না।'
আইএইচএস/