কুমিল্লার দেবিদ্বারের তানজিনা আক্তার ধলাহাস গ্রামের ফেরিওয়ালা ময়নাল হোসেনের মেয়ে। ভাই বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। অষ্টম শ্রেণি পাসের পরই থেকেই তার বিয়ের প্রস্তাব আসা শুরু হয়। কিন্তু অদম্য তানজিনা গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে টিউশনি করে পড়াশোনা চালিয়ে যান। এসএসসির পর ভর্তি হন স্থানীয় সরকারি কলেজে। পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেখে মাত্র ১২০ টাকা খরচ করে দরখাস্ত করেন। এরপর নিজ মেধায় সকল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে কোনো প্রকার ঘুস ছাড়াই পুলিশে চাকরি পেয়ে যান। এতে তার মা-বাবাসহ এলাকাবাসীও খুশি।
Advertisement
রোববার (১০ এপ্রিল) বিকেলে কুমিল্লা পুলিশ লাইন্সের শহীদ আরআই এবিএম আবদুল হালিম মিলনায়তনে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্তদের বরণ অনুষ্ঠানে অশ্রুজলে সিক্ত তানজিনা এভাবেই নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেন।
তার মতো দরিদ্র পরিবারের অনেকেই পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি পেয়েছেন। কুমিল্লা জেলায় সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত ১৫০ জনের সবাই মাত্র ১২০ টাকায় আবেদন করে মেধার লড়াইয়ে নিয়োগ পেয়েছেন।
নিয়োগ পরীক্ষায় মেধা তালিকায় প্রথম হন আদর্শ সদর উপজেলার যশপুর গ্রামের নির্মাণ শ্রমিক আবুল কাশেমের ছেলে সহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, কোনো রকম তদবির ও ঘুস ছাড়াই নিজের যোগ্যতায় পুলিশের চাকরি পেয়েছি। এতে আমার পরিবারসহ এলাকার লোকজনের মাঝে পুলিশে নিয়োগের বিষয়ে ধারণা পাল্টে গেছে। ১২০ টাকায় চাকরি পাবো এমনটা স্বপ্নেও ভাবিনি।
Advertisement
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কুমিল্লা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও পুলিশ প্রধানের (আইজিপি) কঠোর নির্দেশ ছিল একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ সম্পন্ন করা। কোনো রকম দুর্নীতি ও তদবির ছাড়াই স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় সাধারণ কোটায় ১২৭ জন পুরুষ, ১২ জন নারী এবং মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ১১ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমি গর্ব করি। কারণ আমার মাধ্যমে অন্তত দেশের ১৫০টি পরিবারের ডাল ভাতের ব্যবস্থা হয়েছে।
এ সময় কুমিল্লা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী আবদুর রহীম, এম তানভীর আহমেদ, সোহান সরকার ও রাজন কুমার দাসসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জাহিদ পাটোয়ারী/এফএ/এমএস
Advertisement