ত্রিপুরাদের ‘বৈসু’, মারমাদের ‘সাংগ্রাই’ আর চাকমাদের ‘বিজু’ এই তিন উৎসবের আদ্যাক্ষর নিয়ে ‘বৈসাবি’। পাহাড়ের প্রাণের উৎসব আর সম্প্রীতির মেলবন্ধন এটি। বৈসাবি মানেই রঙে-বর্ণে বৈচিত্র্যময় এক ঐতিহ্যবাহী উৎসব। বৈসু-সাংগ্রাই-বিজু যে নামেই ডাকা হোক না কেন, এই উৎসব যেন পাহাড়িদের প্রেরণা, পাহাড়ের জাগরণ।
Advertisement
খাগড়াছড়িতে বৈসাবী উৎসব শুরু হতে আরও দুইদিন বাকি থাকলেও বর্ষবরণে পাহাড়ি পল্লীগুলোতে চলছে নানা প্রস্তুতি। গ্রামে গ্রামে শুরু হয়েছে পাহাড়ের ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা। ঘরে ঘরে চলছে পুরাতন বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর প্রস্তুতিও।
এদিকে, বাংলা নববর্ষ ও বৈসাবী উৎসব উদযাপনে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ, খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসন ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে।
১২ এপ্রিল ভোরে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে নদীতে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে শুরু হবে তিনদিনের বৈসাবি উৎসব, চলবে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত । বৈসাবী উৎসবের প্রথম দিন ১২ এপ্রিল চাকমাদের ফুল বিজুর মধ্য দিয়ে পাহাড়ে উৎসবের সূচনা হবে। ১৩ এপ্রিল অর্থাৎ নববর্ষের আগের দিন ‘হারি বৈসু’ পালনের মাধ্যমে শুরু হবে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা। নতুন বছরের প্রথম দিন থেকে মারমাদের সাংগ্রাইয়ের সূচনা।
Advertisement
পাহাড়ের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ‘বৈসাবি’ উৎসবের সঙ্গে স্থানীয় বাঙালিরাও একাকার হয়ে মিশে যাবে এ প্রাণের উৎসবে। পাহাড়িদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাঙালিদের ঘরে ঘরে পালিত হবে ‘বাংলা নববর্ষ’। বিশেষ ধরনের সবজি ‘পাঁচন’ রান্নায় পিছিয়ে থাকবে না বাঙালি গৃহবধূরাও।
১৯৮৫ সাল থেকে খাগড়াছড়িসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠনের সম্মিলিত উদ্যোগে ‘বৈসাবি’ নামে এ উৎসব পালিত হয়ে আসছে। সময়ের ব্যবধানে নিজ নিজ সম্প্রদায়ের কাছে ‘বৈসাবি’ পরিণত হয়েছে প্রাণের উৎসবে।
মুজিবুর রহমান ভুইয়া/এমআরআর/জিকেএস
Advertisement