দিনের শুরু থেকে ইতিবাচক ব্যাটিংয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার ওপর চাপ সৃষ্টি করছিলেন ইয়াসির আলি রাব্বি ও মুশফিকুর রহিম। বৃষ্টিতে ২০ মিনিট পর খেলা শুরু হলে প্রথম ওভারের প্রথম তিন বলেই হ্যাটট্রিক বাউন্ডারি হাঁকান ইয়াসির রাব্বি। তার সঙ্গে দারুণ খেলছিলেন মুশফিকও।
Advertisement
এ দুজনের জুটিতে বেশ ভালোভাবেই এগোচ্ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু দলীয় ২০০ হওয়ার আগেই হঠাৎই সাজঘরের পথ ধরলেন ইয়াসির। মাত্র ৪ রানের জন্য মিস করলেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্ট ফিফটি। তার বিদায়ে ফের বিপদে পড়ে গেছে বাংলাদেশ।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৬০ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ১৯২ রান। নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৪৫৩ রানে অলআউট হয়েছে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা। ফলে এখনও ২৬১ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ। ফলোঅন এড়াতেও করতে হবে আরও ৬২ রান।
আজকের দিনের খেলা শুরুর আগেই আকাশে মেঘের ঘনঘটা ছিল। অন্ধকারে ছেয়ে ছিল পুরো স্টেডিয়াম। তবু যতটুকু আলো ছিল তাতেই দিনের খেলা শুরু করার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন দুই আম্পায়ার। মাঠেও নেমে গিয়েছিলেন দুই দলের ক্রিকেটাররা। কিন্তু প্রথম বল করার আগেই নামলো বৃষ্টি।
Advertisement
ফলে মাঠে গড়ালো না কোনো বল। গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে দৌড়ে মাঠ ছাড়েন বাংলাদেশ দলের দুই ব্যাটার মুশফিকুর রহিম ও ইয়াসির আলি রাব্বি। অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার ফিল্ডাররা ধীর পায়ে অনেকটা অনিচ্ছা নিয়েই মাঠের বাইরে যান।
বাংলাদেশ সময় দুপুর দুইটায় শুরুর কথা ছিল পোর্ট এলিজাবেথ (গেবেখা) টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলা। কিন্তু বৃষ্টির কারণে যথাসময়ে শুরু হয়নি আজকের খেলা। বৃষ্টির পানি থেকে রক্ষা পেতে উইকেট ও এর আশপাশের জায়গা ঢেকে দেওয়া হয় কভার দিয়ে। পরে ২০ মিনিট দেরিতে শুরু হয় খেলা।
দিনের খেলা শুরুর পর লিজাড উইলিয়ামসের করা প্রথম ওভারের প্রথম তিন বলেই তিন বাউন্ডারি হাঁকান ইয়াসির রাব্বি। উইলিয়ামসের পরের ওভারের প্রথম বলেও হাঁকান বাউন্ডারি। আরেক পেসার ডোয়াইন অলিভারকেও অন ড্রাইভে চার মারেন তিনি।
সবমিলিয়ে দিনের প্রথম পাঁচ ওভারেই ২৭ রান তুলে নেয় বাংলাদেশ। যার মধ্যে ছয় চারের মারে ২৬ রান একাই করেন ইয়াসির। অন্য রান আসে লেগ বাই থেকে। আরেক অপরাজিত ব্যাটার মুশফিক প্রথম পাঁচ ওভারে ৫ বল খেলে কোনো রান নিতে পারেননি।
Advertisement
এমন উড়ন্ত শুরুর পর নিজেদের ব্যাটিংয়ে লাগাম টানেন মুশফিক-ইয়াসির। বাঁহাতি স্পিনার কেশভ মহারাজকে আক্রমণে এনে রানরেটটাও কমিয়ে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। তবু সুযোগ পেলেই উইয়ান মাল্ডার কিংবা মহারাজকে বাউন্ডারি হাঁকাতে কার্পণ্য করেননি মুশফিক বা ইয়াসির।
শেষ পর্যন্ত ইনিংসের ৬০তম ওভারে গিয়ে আঘাত হানেন মহারাজ। সেই ওভারের চতুর্থ বলে ইয়াসিরের বিপক্ষে লেগ বিফোরের জোরালো আবেদন করেও সফল হয়নি দক্ষিণ আফ্রিকা। নিজেদের শেষ রিভিউ নিয়েও উইকেট আদায় করতে পারেনি তারা।
কিন্তু একই ওভারের শেষ বলে অনসাইডে খেলতে গিয়ে লিডিং এজে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে বসেন ইয়াসির। বলটি তালুবন্দী করেই উল্লাসে ফেটে পড়েন মহারাজ। আউট হওয়ার আগে ৭ চারের মারে ৮৭ বলে ৪৬ রান করেন ইয়াসির। তার বিদায়ে ভাঙে ৭২ রানের ষষ্ঠ উইকেট জুটি।
ইয়াসির না পারলেও চলতি ইনিংসে বাংলাদেশের প্রথম হাফসেঞ্চুরিয়ান হওয়ার আশা বাঁচিয়ে রেখেছেন মুশফিক। তার সংগ্রহ ১০২ বলে ৪২ রান। সপ্তম উইকেট জুটিতে মুশফিককে সঙ্গে দিতে নেমেছেন অফস্পিনিং অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান মিরাজ।
এসএএস/জেআইএম