দেশজুড়ে

হবিগঞ্জে স্কুলছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে শিক্ষক গ্রেফতার

হবিগঞ্জের লাখাইয়ে স্কুলছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে মুমিনুল হক (৩৭) নামে এক শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)।

Advertisement

মুমিনুল হক লাখাই উপজেলার বামৈ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

শুক্রবার (৮ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলার সানারপাড় এলাকা থেকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-৯ সিপিসি-১ হবিগঞ্জের একটি দল। সন্ধ্যায় জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন র‌্যাব-৯ সিপিসি-১ হবিগঞ্জের কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মোহাম্মদ নাহিদ হাসান।

তিনি জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার মুমিনুল হক র‌্যাবের কাছে ওই ছাত্রীকে একাধিকবার শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেছেন বলে স্বীকার করেছেন। ঘটনাটি জানাজানি হলে তিনি নারায়ণগঞ্জে আত্মগোপন করেছিলেন।

Advertisement

র‍্যাব জানায়, শ্লীলতাহানির শিকার ছাত্রী বামৈ সরকারী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী। অষ্টম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায়ই ওই ছাত্রীর প্রতি কুদৃষ্টি দেন মুমিনুল হক। প্রায় সময়ই তিনি বিভিন্নভাবে তাকে উত্যক্ত করতেন এবং যৌন হয়রানির চেষ্টা করেছেন। এ কারণে ওই ছাত্রী মুমিনুলকে এড়িয়ে চলতেন। বিষয়টি ওই ছাত্রী তার পরিবারকে জানায়। কিন্তু লোক লজ্জার ভয়ে পরিবার বিষয়টি নীরবে মোকাবিলা করার পরামর্শ দেয়।

গত ১৬ মার্চ সকালে স্কুলের প্রাত্যহিক সমাবেশ (অ্যাসেম্বলি) শুরু হলে ওই ছাত্রী শারীরিক অসুস্থতা বোধ করায় অ্যাসেম্বলিতে না গিয়ে স্কুল ভবনের তৃতীয় তলায় শ্রেণিকক্ষে বসেছিলেন। সঙ্গে আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী ছিল। এ সময় সহকারী শিক্ষক মো. মুমিনুল হক গিয়ে অন্য শিক্ষার্থীদের বের করে দেন। তিনি ওই ছাত্রীর কাছে গিয়ে যৌন ইঙ্গিত প্রদর্শন করেন। একপর্যায়ে যৌন হয়রানির চেষ্টা করেন। এ সময় বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন এবং আয়া গৌড়ী সেখানে গেলে মুমিনুল হাত ছেড়ে দিয়ে নিচে নেমে পড়েন। শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন ও আয়া গৌড়ী নেমে পড়লে তিনি ফের গিয়ে ওই ছাত্রীকে যৌন হয়রানির উদ্দেশ্যে জড়িয়ে ধরেন। তখন ওই ছাত্রী চিৎকার শুরু করলে মুমিনুল হক তার মুখ চেপে ধরেন।

তার চিৎকার শুনে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আব্দুল করিমসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী ঘটনাস্থলে গেলে মুমিনুল ওই ছাত্রীকে ছেড়ে দিয়ে স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করেন। বিষয়টি তাৎক্ষণিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক মামুনুর রশিদ চৌধুরীকে জানানো হয়। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে বরখাস্ত ও তার বিচার দাবিতে শিক্ষার্থীরা হবিগঞ্জ-লাখাই-সড়াইল-নাসিরনগর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শরীফ উদ্দিন। তিনি ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে অবরোধ প্রত্যাহার করে শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে লাখাই থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর থেকে আত্মগোপন করেন শিক্ষক মুমিনুল হক। শুক্রবার অভিযান চালিয়ে নারায়ণগঞ্জ থেকে তাকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

Advertisement

সৈয়দ এখলাছুর রহমান খোকন/এমএএইচ/