জাতীয়

অমল সেনের ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী রোববার

ইতিহাসখ্যাত নড়াইলের তেভাগা আন্দোলনের অগ্রপথিক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাবেক সভাপতি কমরেড অমল সেনের ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী রোববার। এ উপলক্ষে নড়াইলের সীমান্তবর্তী বাঁকড়ীতে শনিবার শুরু হচ্ছে দুই দিনব্যাপি অমল সেন স্মরণ মেলা। দুই দিনব্যাপি মেলার অনুষ্ঠানসূচির মধ্যে রয়েছে কিংবদন্তী এই নেতার সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, কৃষক সমাবেশ, আলোচনা সভা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। তাছাড়া বাকড়ী স্কুল সংলগ্ন মাঠে দুই দিনব্যাপি গ্রামীণ মেলা বসবে।‘কমরেড অমল সেন স্মৃতি রক্ষা কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত দু’দিনব্যাপি মেলার প্রথম দিন (১৭ জানুয়ারি) রোববার দুপুর ২ টায় কমরেড অমল সেনের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহের নেতৃবৃন্দ। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে অনুষ্ঠিত হবে আলোচনা সভা। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির বিপ্লবী সাধারণ সম্পাদক কমেেরড ফজলে হোসেন বাদশা এমপি। অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখবেন ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য কমরেড বিমল বিশ্বাস, কমরেড আনিসুর রহমান মল্লিক, কমরেড হাফিজুর রহমান ভূঁইয়া, সাতক্ষীরা-১ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট মোস্তফা লুৎফুল্লাহ, নড়াইল-২ আসনের এমপি কমরেড অ্যাডভোকেট শেখ হাফিজুর রহমান, সিপিবি নেতা কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদ নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, গণতন্ত্রী পার্টি নেতা ডা. শহীদুল্লাহ, ন্যাপ নেতা অ্যাডভোকেট এনামুল হক, জাসদের অ্যাডভোকেট রবিউল ইসলাম ও  কমিউনিস্ট কেন্দ্রের ডা. অসিত বরণ রায়। আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন কমরেড অমল সেন স্মৃতি রক্ষা কমিটির সভাপতি ও ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুারো সদস্য কমরেড ইকবাল কবির জাহিদ, সভা পরিচালনা করবেন ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য । সোমবার অনুষ্ঠিত হবে কৃষক সমাবেশ।‘কমরেড অমল সেন স্মৃতি রক্ষা কমিটির সভাপতি ইকবাল কবীর জাহিদ জানিয়েছেন, মেলার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে প্রতিদিন সন্ধ্যায় আবৃতি, গণসঙ্গীত, গণনাটক ও গণসংগ্রাম ভিত্তিক চলচিত্র প্রদশর্নী হবে এবং সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলবে লোকজ মেলা। সারাদেশ থেকে ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা ও কর্মীবৃন্দ এই মেলায় যোগ দেবেন।  কমরেড অমল সেন ১৯১৪ সালের ১৯ জুলাই আউড়িয়ার প্রখ্যাত রায় পরিবারে মামা বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন নড়াইলের আফরার জমিদার পরিবারের সন্তান। নবম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত অবস্থায় বৃটিশবিরোধী সশস্ত্র বিপ্লবী ‘অনুশীলন’ গ্রুপের সঙ্গে সম্পর্কিত হন। দৌলতপুর বিএল কলেজে গণিতশাস্ত্রে অনার্স অধ্যয়নরত অবস্থায় মার্কসবাদী আদর্শে উদ্বুদ্ধ হন এবং নড়াইলে ফিরে এসে কৃষক আন্দোলন করার কাজে আত্মনিয়োগ করেন। পিতার জমিদারী,  অর্থ-সম্পত্তি বিত্ত বৈভব তাকে কখনো আকৃষ্ট করতে পারেনি।  তিনি মনে প্রাণে বিশ্বাস করতেন মানব জীবনের সর্বোচ্চ প্রাপ্তি হতে পারে মানব সমাজের কল্যাণে আত্মনিয়োগ করা তথা শ্রমজীবী মানুষের শোষণ মুক্তির লড়াইতে অংশগ্রহণ করা। তিনি সারাজীবন নিজেকে এ সংগ্রামে নিয়োজিত রাখেন। পাকিস্তান শাসনামলের ২৪ বছরের মধ্যে ১৯ বছরই তাকে কারান্তরালে কাটাতে হয়েছে। ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ মুক্তিকামী জনতা তাকে যশোর কারাগার ভেঙে মুক্ত করে। এরপর স্বাধীনতা আন্দোলনে তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ২০০৩ সালের ১৭ জানুয়ারি বার্ধক্যজনিত কারণে ঢাকা কমিউনিটি হাসপাতালে অকৃতদার এই বিপ্লবী নেতা  মৃত্যুবরণ করেন।হাফিজুল নিলু/এসএস/এমএস

Advertisement