ভৈরবে ল্যান্ডফোন গ্রাহকরা সেবা না পাওয়া ও লাইন চার্জ বৃদ্ধির কারণে গত এক বছরে প্রায় ৩শ` গ্রাহক তাদের টেলিফোন প্রত্যাহার (সেরেন্ডার) করেছেন। তবে বিগত পাঁচ বছরে প্রত্যাহারের পরিমাণ প্রায় ৬শ` ছাড়িয়ে গেছে বলে ভৈরব টেলিফোন এক্সচেঞ্জ অফিস সূত্রে জানা গেছে। এছাড়া বিল বকেয়ার কারণে প্রায় ২শ` সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। ভৈরব ডিজিটাল মাল্টি এক্সচেঞ্জে বর্তমান ল্যান্ড টেলিফোন গ্রাহক সংখ্যা ৭শ` ৭৬ জন। এই টেলিফোন এক্সচেঞ্জে সংযোগ ক্যাপাসিটি রয়েছে বর্তমানে ২ হাজার এবং ইন্টারনেটে ক্যাপাসিটি ১শ`। গত ২১ অক্টোবর ২০০৬ সালে এক্সচেঞ্জটি ডিজিটাল মাল্টি এক্সচেঞ্জের উদ্বোধনের সময় ক্যাপাসিটি ছিল ৫ হাজার। গত ২ বছর আগে এক্সচেঞ্জটি কন্ট্রোল রুমে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটে আগুন লাগলে অনেক যন্ত্রপাতি পুড়ে যায়। ফলে এক্সচেঞ্জের ক্যাপাসিটি কমে গেছে। তখন এ এক্সচেঞ্জে গ্রাহক সংখ্যা ছিল প্রায় এক হাজার ৪শ`। সেবার মান কমে যাওয়া, ঠিকমতো কথা বলতে না পারা ও লাইন চার্জ বৃদ্ধির কারণে প্রায় সাড়ে ৬শ` গ্রাহক এখন কমে গেছে। এছাড়া ইন্টারনেট সংযোগ ফি বেশি হওয়া ও কাঙ্খিত সেবা না পাওয়াতে ইন্টারনেট ও টেলিফোন সংযোগ নিতে গ্রাহকদের তেমন আগ্রহ নেই। সকলের ঘরে ঘরে এখন মোবাইল ব্যবহার হচ্ছে। মোবাইলফোন কোম্পানিগুলাে গ্রাহকদের উন্নত সেবা দিচ্ছে। টেলিফোন গ্রাহকদের কথা বলার বিড়ম্বনাসহ প্রতিমাসে লাইন চার্জ ১৮৪ টাকা গুণতে হয়। এছাড়া সংযোগ ফি ৫শ` টাকা থেকে বৃদ্ধি করে এখন ২ হাজার ৩শ` টাকা করা হয়েছে। আবার কেউ সংযোগ নিতে চাইলে অফিসিয়াল বিড়ম্বনা রয়েছে। ভৈরবে বিদ্যুৎ পানিসহ নানা কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মাটি খোঁড়াখুঁড়ির সময় টেলিফোন ক্যাবল কেটে ফেললে গ্রাহকদের লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আবার মাটির উপর থাকা ক্যাবল মাঝে মধ্যে চুরি হয়ে যায়। বৃষ্টি হলে টেলিফোন ঘ্যার ঘ্যার শব্দ ও বিকট আওয়াজে অনেক গ্রাহক ঠিকমতো কথা বলতে পারেন না বলে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। অনেক সময় টেলিফোন তার চুরি হয়ে গেলে গ্রাহকদের পুনরায় নিজের টাকা দিয়ে তার কিনতে হয়। অধিকাংশ গ্রাহক লাইন চার্জ মাসে ১শ ৮৪ টাকা দিতে আগ্রহী নয়।অপরদিকে, মোবাইলে সেবার মান ভালো থাকায় কথা বলার সময় কোনো রিড়ম্বনা হয় না। পাশাপাশি মোবাইলে মাসিক কোনো লাইন চার্জ নেই। এসব নানা কারণে ভৈরবে টেলিফোন গ্রাহক সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। উল্লেখ্য, ভৈরব এক্সচেঞ্জটি ডিজিটাল মাল্টি এক্সচেঞ্জে পরিণত করায় ঢাকাসহ আশপাশের কয়েকটি জেলায় কোনো কোড ছাড়াই সরাসরি যেকোনো নম্বরে কথা বলা যায়। দেশের অন্য কোনো প্রান্ত থেকে কেউ ভৈরবে ফোন করলে ০২ কোড ব্যবহার করতে হয়। বর্তমানে বিটিসিএল কোম্পানির কলরেট একদেশ এক রেট ৩০ পয়সা। তারপরও ভৈরবের টেলিফোন গ্রাহকরা কাঙ্খিত সেবা না পাওয়া ও লাইন চার্জ বৃদ্ধির কারণে ল্যান্ড টেলিফোনের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। এ ব্যাপারে ভৈরব এক্সচেঞ্জের দায়িত্বপ্রাপ্ত আবু মুসা জাগো নিউজকে জানান, সংযোগ ফি বৃদ্ধি ও ল্যান্ড চার্জ বৃদ্ধির কারণে গ্রাহকরা টেলিফোন প্রত্যাহার করছেন বলে স্বীকার করেন। আসাদুজ্জামান ফারুক/এমজেড/এমএস
Advertisement